চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামে খালে জাল বসানো নিয়ে ঝগড়ার জেরে এক ব্যক্তিকে খুনের অপরাধে তার পাঁচ প্রতিবেশিকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই মামলায় অভিযোগ প্রমাণ না হওয়ায় তিনজনকে বেসকুর খালাস দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (৪ আগস্ট) দুপুরে চট্টগ্রামের চতুর্থ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ রোজিনা খান এ রায় দেন বলে জানিয়েছেন ওই আদালতের বেঞ্চ সহকারী হাফেজ আহম্মদ।
মৃত্যুদণ্ড পাওয়া ব্যক্তিরা হলেন- নুরুল আবছার, মো. রফিক, মো. সোলায়মান, আহাম্মদ ও মো. ইলিয়াস। খালাস পাওয়া তিনজন হলেন- আব্দুল কুদ্দুস, মো. এনাম ও মো. আনোয়ার। আসামিরা সবাই চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার চাতরি ইউনিয়নের বাসিন্দা।
জানা গেছে, ২০১১ সালের ১৯ আগস্ট রাতে আনোয়ারা উপজেলার চাতরি ইউনিয়নের পশ্চিম সিংহরা গ্রামের বাসিন্দা আবদু শুক্কুরকে (৫৫) খুন করা হয়। দুইদিন পর তার লাশ বাড়ির অদূরে একটি মুরগির ফার্মের পাশে ধানের জমিতে পাওয়া যায়। এ ঘটনায় তার ছেলে মোহাম্মদ মিজান বাদী হয়ে ৭ জনের বিরুদ্ধে আনোয়ারা থানায় মামলা করেন।
মামলার নথিপত্রে উল্লেখ করা তথ্য অনুযায়ী, খুনের শিকার আবদু শুক্কুর জায়গা-জমি কেনাবেচার মধ্যস্থতা করতেন। ২০১১ সালের ১৯ আগস্ট রাত সাড়ে ১১টার দিকে বাড়ির অদূরে খালে জাল বসানো নিয়ে প্রতিবেশি কয়েকজনের সঙ্গে তার ঝগড়া হয়। এরপর তিনি বাড়ি ফিরে ঘুমিয়ে পড়েন। রাত দেড়টার দিকে অজ্ঞাত একটি নম্বর থেকে তার মোবাইলে কল দিয়ে তাকে ঘরের বাইরে ডেকে নেওয়া হয়।
এরপর আবদু শুক্কুরকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে খুন করে লাশ আরও দূরে নিয়ে ধানের জমিতে ফেলে দেওয়া হয়। দুইদিন নিখোঁজ থাকার পর গ্রামের একটি মুরগির ফার্মের মালিক মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ তার ফার্মের পেছনে ধানের জমিতে লাশ দেখতে পান। এরপর স্থানীয় লোকজন ও পরিবারের সদস্যরা গিয়ে লাশ উদ্ধার করেন।
ওই মামলা তদন্ত শেষে ২০১১ সালের ২৮ নভেম্বর পুলিশ আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়। এতে আটজনকে আসামি করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের পর ১০ জনের সাক্ষ্য নিয়ে আদালত এ রায় দেন।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী হাফেজ আহম্মদ সারাবাংলাকে জানান, দণ্ডবিধির ৩০২ ও ৩৪ ধারায় পাঁচজনকে মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। আর তিনজনকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
দণ্ডিতদের মধ্যে মো. রফিক পলাতক আছেন। বাকি চারজন রায় ঘোষণার সময় আদালতে হাজির ছিলেন। আদালত তাদের সাজামূলে কারাগারে পাঠানোর এবং রফিকের বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানা জারির আদেশ দেন।