ঢাকা: বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেছেন, কিছু রাজনৈতিক দল মুখে সংস্কার মানলেও বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় আইনগত ভিত্তি দিতে চায় না। এ অবস্থানকে তিনি ‘দ্বিমুখী ও আত্মঘাতী’ বলে অভিহিত করেছেন।
সোমবার (৪ আগস্ট) সন্ধ্যায় রাজধানীর শাহবাগে ন্যাশনাল ডক্টরস ফোরাম আয়োজিত চিকিৎসক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ডা. তাহের বলেন, “তারা বলে, ‘সংস্কার মানি’, সাইন দিতেও আপত্তি নেই। কিন্তু আবার বলে, আইনি কাঠামো দরকার নেই। তাহলে তো তাদের কথা দাঁড়ায়—‘আমি সালিশ মানি, কিন্তু তালগাছ আমার’। একদিকে ওয়াদা করবে, আবার বাস্তবায়নের উপযোগী কাঠামো তৈরি করতে রাজি নয়।”
তিনি বলেন, শুধুমাত্র প্রতিশ্রুতির দিয়ে জনগণকে বোঝাতে চাওয়া যে তারা ওয়াদা ভঙ্গ করবে না, সেটা জনগণ মানবে—এমন আশা রাখা আত্মপ্রবঞ্চনার শামিল।
সংস্কার বাস্তবায়নের জন্য আইনি ভিত্তির প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরে ডা. তাহের বলেন, ‘আমরা রক্ত দিয়েছি, জীবন দিয়েছি। স্বীকৃতি যথেষ্ট নয়—পঙ্গুদের চিকিৎসা, ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ ও আন্দোলনের দাবি বাস্তবে বাস্তবায়ন করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘১৫–১৬ বছর ধরে রাজনৈতিক দলগুলো লড়েছে, কিন্তু ফাইনাল খেলেছে জনগণ—নেতৃত্ব দিয়েছে ছাত্ররা। এই আন্দোলনের বৈশিষ্ট্যই হলো এর সর্বজনীনতা।’
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর কিছু মানুষের লোভ বেড়েছে বলেও মন্তব্য করেন জামায়াতের এই শীর্ষ নেতা। তিনি বলেন, ‘বিপ্লবের পরে রাজনীতিতে আত্মকেন্দ্রিকতা ও লোভের বৃদ্ধি ঘটেছে। দুঃখজনকভাবে, জাতীয় ঐক্যের জায়গায় দলীয় স্বার্থই প্রাধান্য পেয়েছে। কিছু মানুষ সুযোগ নিয়ে বিশ্বাসঘাতকতা করছে—তাদের চিহ্নিত করে দায়িত্ব থেকে অপসারণ করতে হবে।’
তিনি অভিযোগ করেন, জুলাইয়ের পর জনগণের প্রত্যাশা ছিল চাঁদাবাজি ও দখলবাজি বন্ধ হবে, কিন্তু উল্টোটা ঘটেছে।
‘শুধু ব্যক্তি বদলেছে, দলের নাম বদলেছে, কিন্তু জনগণের মৌলিক পরিবর্তন আসেনি।’
ডা. তাহের বলেন, ২২ জুলাই গ্রেপ্তার হয়ে আগস্টের প্রথম সপ্তাহে মুক্তি পান। মুক্তির পর তিনি ঢাকা মেডিকেলে গিয়ে দেখেছেন, ‘আহতদের অর্ধেকই রিকশাওয়ালা, ফেরিওয়ালা, ঠেলাগাড়িওয়ালা, এমনকি হাসপাতালের রোগীরাও আন্দোলনে অংশ নিয়েছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে তাদের অবদান সামনে আনা হচ্ছে না।’
তিনি জোর দিয়ে বলেন, ইতিহাসে সব শ্রেণির মানুষের এই অবদান স্বীকৃতি পেতে হবে।