ঢাকা: পুনরুজ্জীবিত কৃষি শুধু পরিবেশ ও মাটির স্বাস্থ্য উন্নত করে না, এটি অর্থনৈতিকভাবে কৃষকদের জন্য লাভজনক। দক্ষিণ এশিয়ায় পুনরুজ্জীবিত কৃষি পদ্ধতির প্রসার এখন সময়ের দাবি। তবে এ পদ্ধতির বিস্তার ঘটাতে আঞ্চলিক সহযোগিতা ও অংশীদারিত্ব গুরুত্বপূর্ণ।
‘সার্ক সদস্য রাষ্ট্রসমূহে পুনরুজ্জীবিত কৃষি পদ্ধতির প্রসার’ শীর্ষক এক ভার্চুয়াল আঞ্চলিক পরামর্শক সভায় বক্তারা এসব অভিমত ব্যক্ত করেছেন।
‘সার্ক কৃষি কেন্দ্র’ আয়োজিত তিনদিনব্যাপী পরামর্শক সভা সোমবার (৪ আগস্ট) শুরু হয়েছে। চলমান এ সভা বুধবার (৬ আগস্ট) শেষ হবে। এ পরামর্শক সভায় সার্ক সদস্য দেশগুলোর প্রতিনিধি, বিভিন্ন কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠান, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করছেন।
উদ্যোক্তারা জানান, এ আঞ্চলিক পরামর্শক সভার মূল লক্ষ্য হচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ায় ক্ষয়িষ্ণু মাটির পুনরুদ্ধার, জীববৈচিত্র্য বৃদ্ধি এবং জলবায়ু সহনশীল কৃষি-খাদ্য ব্যবস্থা গড়ে তুলতে আঞ্চলিক সহযোগিতা, জ্ঞান বিনিময় এবং নীতিগত সমন্বয় জোরদার করা।
সভার প্রথম দিনে সার্ক সদস্য রাষ্ট্রসমূহের মনোনীত বিজ্ঞানী ও ফোকাল পয়েন্ট প্রতিনিধিরা দেশভিত্তিক উপস্থাপনা প্রদান করেন। এতে দেশগুলোর রিজেনারেটিভ কৃষি সংক্রান্ত বর্তমান অবস্থা, চ্যালেঞ্জ ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরা হয়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত পররাষ্ট্র সচিব (সার্ক ও বিমসটেক) আবদুল মোতালেব সরকার বলেন, দক্ষিণ এশিয়ায় পুনরুজ্জীবিত কৃষি পদ্ধতির প্রসার সময়ের দাবি। মাটির স্বাস্থ্যের পুনরুদ্ধার, ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার এবং বাস্তবভিত্তিক কৌশল গ্রহণের মাধ্যমে এ পরিবর্তন সম্ভব। এ ক্ষেত্রে সার্ক কৃষি কেন্দ্রকে নেতৃত্ব দিতে হবে, যা জীববৈচিত্র্য রক্ষায়ও সহায়ক হবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন নেপালের সার্ক সচিবালয়ের পরিচালক (এআরডি ও এসডিএফ) তানভীর আহমেদ তরফদার। তিনি বলেন, পুনরুজ্জীবিত কৃষি শুধু পরিবেশ ও মাটির স্বাস্থ্য উন্নত করে না, এটি অর্থনৈতিকভাবে কৃষকদের জন্য লাভজনকও। এই পদ্ধতির বিস্তার ঘটাতে আঞ্চলিক সহযোগিতা ও অংশীদারিত্ব গুরুত্বপূর্ণ।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে সার্ক কৃষি কেন্দ্র এর পরিচালক ড. মো. হারুনূর রশীদ বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ায় টেকসই ও উদ্ভাবনী কৃষি চর্চা প্রসারে সার্ক কৃষি কেন্দ্র নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। পুনরুজ্জীবিত কৃষি পদ্ধতি- পরিবেশগত সমস্যা মোকাবেলায় সহায়ক হওয়ার পাশাপাশি কৃষি ব্যবস্থার দীর্ঘমেয়াদি উৎপাদনশীলতা ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করে।
অনুষ্ঠানে বিশেষজ্ঞ উপস্থাপনায় অংশ নেন ইন্টারন্যাশনাল মেইজ অ্যান্ড হুইট ইমপ্রুভমেন্ট সেন্টার, বাংলাদেশের সিনিয়র সায়েন্টিস্ট ও ক্রপিং সিস্টেম অ্যাগ্রোনমিস্ট ড. দেবাশীষ চক্রবর্তী এবং সার্ক কৃষি কেন্দ্রের সিনিয়র প্রোগ্রাম স্পেশালিস্ট (ফসল) ড. সিকান্দার খান তানভীর । তারা যথাক্রমে ‘রিজেনারেটিভ কৃষি: মাটি, বিজ্ঞান ও সংরক্ষণের মাধ্যমে পৃথিবীর ভারসাম্য ফিরিয়ে আনা’ এবং পরামর্শ সভার উদ্দেশ্য ও কার্যক্রম সম্পর্কে উপস্থাপনা দেন।