চট্টগ্রাম ব্যুরো: ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের সময় ৪ আগস্ট যখন ফরহাদ গুলিবিদ্ধ হয়, তখন এই সংবাদ শুনে আম্মা অজ্ঞান হয়ে যান- ভারাক্রান্ত হৃদয়ে এভাবে সেদিনের স্মৃতিচারণ করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের ছাত্র শহিদ ফরহাদ হোসেনের বড় ভাই গোলাম কিবরিয়া।
মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) দুপুরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদ মিলনায়তনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবসের আলোচনা সভায় তিনি একথা বলেন।
গোলাম কিবরিয়া বলেন, ‘আমার আম্মার হার্টের সমস্যা আছে। ফরহাদ ৪ আগস্ট আন্দোলনে গিয়েছিল। আন্দোলনে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হওয়ার সংবাদ শুনে তিনি আর সহ্য করতে পারেননি। সঙ্গে সঙ্গে অজ্ঞান হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। প্রতিটি শহিদ পরিবারের অবস্থা একইরকম। জুলাই অভ্যুত্থান যেমন বেদনার, তেমনি এটা গর্বেরও।’
ফরহাদের স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, ‘ফরহাদ আমাদের পরিবারে সবচেয়ে ছোট ছিল। কিন্তু ও ছিল সবচেয়ে বেশি দায়িত্ববান। আমার মা-বাবাকে সবসময় সে-ই বেশি দেখে রাখতো। আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাড়ি যাবার সময় অনেকগুলো টি-শার্ট নিয়ে যেতাম। সেগুলোতে বিশ্ববিদ্যালয়ের লোগো থাকতো। ফরহাদ আমার কাছ থেকে সব টি-শার্ট নিয়ে নিতো। এখন ফরহাদ নেই, আমার টি-শার্টগুলো আর কেউ নেওয়ার কথা বলে না।’
কিবরিয়া বলেন, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অনেক ছাত্র-জনতা শহিদ হয়েছেন। শহিদের রক্তের ওপর দিয়ে এই নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ হয়েছে। এই নতুন বাংলাদেশে শহিদদের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন করতে হবে।’
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক কামাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে সভায় উপাচার্য অধ্যাপক ইয়াহ্ইয়া আখতার, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক শামীম উদ্দিন খান, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম, সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক এনায়েত উল্যা পাটওয়ারী, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন অধ্যাপক তৈয়ব চৌধুরী, লোকপ্রশাসনের বিভাগের সভাপতি আমির মুহাম্মদ নসরুল্লাহ, শহিদ হৃদয় চন্দ্র তরুয়ার বাবা রতন চন্দ্র তরুয়া বক্তব্য দেন। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট সদস্য সাবেক অধ্যাপক আবুল কালাম আযাদ।