চট্টগ্রাম ব্যুরো: সাংবাদিকতার নামে যারা স্বৈরাচারের পক্ষে দাঁড়িয়েছিল, তারা সাংবাদিক নন, দলীয় কর্মী বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি আরও বলেন, বিএনপির সাংবাদিক হওয়ার দরকার নেই, জনগণের সাংবাদিক হোন।
মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) বিকেলে নগরীর জামালখানে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠিত ‘সাংবাদিক-ছাত্র-জনতার সমাবেশে’ তিনি এসব কথা বলেন। চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের পক্ষ থেকে সপ্তাহব্যাপী অনুষ্ঠানের সমাপনী দিনে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘আমরা ১৫ বছর ধরে সাংবাদিকতার চিত্র পরিষ্কারভাবে দেখেছি। কারা নিজের দেশকে বিক্রি করে সাংবাদিকতা করেছে, কারা ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচারের সঙ্গে থেকে সুবিধা ভোগ করেছে, সাংবাদিকতার দায়িত্বকে ধ্বংস করেছে, সব দেখেছি। শেখ হাসিনার প্রেস কনফারেন্স শেষে যে সাংবাদিকরা জনগণের কথা তুলে না ধরে স্বৈরাচারের কথা তুলে ধরেছে, তারা কি কোনো সাংবাদিক? তারা তো সাংবাদিকতার মানসম্মান নষ্ট করেছে।’
‘সাংবাদিকতার নামে যারা স্বৈরাচারের পক্ষে দাঁড়িয়েছিল, তারা আসলে সাংবাদিক না। প্রেসক্লাবের সামনে দাঁড়িয়ে একজন ব্যক্তির পক্ষে, একটি দলের পক্ষে অবস্থান যারা নেয়— তারা তো সাংবাদিকের সংজ্ঞার মধ্যে পড়ে না। তারা হয়ে গেছে দলীয় কর্মী।’
সমাবেশের আয়োজক সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘বিষয়গুলো আপনাদের অনুধাবন করতে হবে। আমাদের যেন তাদের মতো চলতে না হয়, সেটাও মাথায় রাখতে হবে। আপনারা বিএনপির সাংবাদিক হইয়েন না। আপনাদের বিএনপির সাংবাদিক হওয়ারও দরকার নেই। আপনারা দেশের সাংবাদিক হোন, বাংলাদেশের জনগণের সাংবাদিক হোন, মানুষের সাংবাদিক হোন।’
আমীর খসরু বলেন, ‘আমরা সত্যিকারের সাংবাদিকতা চাই, নিরপেক্ষতা চাই। সাংবাদিকদের পেশাগত মানদণ্ড অক্ষত রাখতে হবে। এটাই হবে নতুন বাংলাদেশের শপথ। আগামীতে সাংবাদিকরা যদি জনগণের কথা তুলে ধরতে পারে, স্বাধীনতার কথা, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামাজিক অধিকার তুলে ধরতে পারে— তাহলেই হবে সফল সাংবাদিকতা। আমাদের ৩১ দফার মধ্যে আমরা পরিষ্কার করে বলেছি, কী ধরনের সাংবাদিকতা চাই।’
চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের অন্তর্বর্তী কমিটির সদস্য সচিব জাহিদুল করিম কচির সভাপতিত্বে ও বৈশাখী টিভির ব্যুরো প্রধান গোলাম মওলা মুরাদ এবং বাসসের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মিয়া মোহাম্মদ আরিফের পরিচালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর, দক্ষিণ জেলার সাবেক আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সহকারী মহাসচিব মুস্তফা নঈম, বিএনপি নেতা ইফতেখার হোসেন চৌধুরী মহসিন, ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, আহমেদুল আলম চৌধুরী রাসেল, সিএমইউজে’র সাধারণ সম্পাদক সালেহ নোমান, সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম শিল্পী, নগর মহিলাদলের সভাপতি মনোয়ারা বেগম মনি, সাংবাদিক কামরুল হুদা, হাসান মুকুল, ওয়াহিদ জামান, মোহাম্মদ আলী, জালাল উদ্দীন রুমি, জাহাঙ্গীর আলম, জোবায়ের চৌধুরী, ইবেন মীর, নুর হোসেন মামুন এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিলুপ্ত কমিটির সমন্বয়ক রিদোয়ান সিদ্দিকী ও সিয়াম এলাহী।
সমাবেশের আগে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী প্রেসক্লাবের সামনে ‘ক্যামেরায় জুলাই বিপ্লব’ শীর্ষক প্রদর্শনী ঘুরে দেখেন। এছাড়া মঞ্চে জুলাই আন্দোলনের ওপর শিল্পীরা সঙ্গীত পরিবেশন করেন।