ঢাকা: বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি এস এম ফরহাদ বলেছেন, ‘৩৬ জুলাই: আমরা থামব না’ শীর্ষক কর্মসূচিতে যারা বিরোধিতা করে বিক্ষোভ করেছেন, তারা প্রত্যেকেই বিভিন্ন সংগঠনের পদধারী নেতা।
মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) রাত ১০টার দিকে জরুরি এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন। এস এম ফরহাদ বলেন, ‘কেউ সভাপতি, কেউ সেক্রেটারি, কেউ ভিন্ন ভিন্ন পোস্টের নেতা; স্পষ্টত তারা রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিত্বশীল এবং শাহবাগ যারা কায়েম করেছিল, তাদের পরবর্তী উত্তরসূরী। তারা কোন সংগঠনের প্রতিনিধিত্ব করে এবং তাদের পোস্ট সবাই জানে।’
মুক্তিযোদ্ধার ব্যাপারে শিবিরের অবস্থান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকেন্দ্রিক যত হত্যাকাণ্ড হয়েছে প্রতিটির বিচার আমরাও চাই, ইসলামী ছাত্রশিবির চায়। মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী যে লিগ্যাসি, সেই লিগ্যাসি বহন করেই আমরা বলেছিলাম যে, মুক্তিযুদ্ধের এক্সটেন্ডেড রূপ হল ‘চব্বিশের অভ্যুত্থান’।”
তিনি বলেন, ‘বিচারিক হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ফাঁসির রায় দেওয়া হলে মানুষ রাস্তায় নেমে আসে। তখন গুলি করে প্রায় ২০০ মানুষ হত্যা করা হয়। সেদিনে গুলি করে হত্যা করাটাকে যারা বৈধতা দিয়েছিল, সেই বৈধতা দেওয়ার কারণে আওয়ামী লীগ অভ্যস্ত হয়েছে গুলি করে হত্যায়। পরবর্তীতে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে তারা হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করেছে। এই যে বৈধতা দিয়ে যারা প্রকাশ্যে দুই শতাধিক মানুষকে হত্যা করার বৈধতা উৎপাদন করেছে, তারা এই দায় কখনও এড়াতে পারে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী এই দীর্ঘ যাত্রায় আমরা দেখেছি, এই হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে বেগম খালেদা জিয়া মুখ খুলেছিলেন, বলেছিলেন এটা বিচারিক হত্যাকাণ্ড। দেলাওয়ার হোসেন সাঈদী যখন হাসপাতালে মারা যান, এরপর বিএনপির পক্ষ থেকে তারেক রহমানও এটা স্পষ্ট উল্লেখ করেছিলেন, এটা বিচারিক হত্যাকাণ্ড। স্পষ্টত তারেক রহমান, বেগম খালেদা জিয়া কিংবা সবদিক থেকে স্পষ্ট বক্তব্য থাকার পরও আজ ছাত্রদলের পক্ষ থেকে একটা বিবৃতি দিয়ে এটার বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া হয়েছে। এটা খুবই দুঃখজনক এবং ইতিহাসের সঙ্গে, সত্যের সঙ্গে বিপরীত অবস্থান নেওয়া।’
এস এম ফরহাদ বলেন, ‘আমরা আবারও স্পষ্ট করে ক্লিয়ার করছি, আমরা সবধরনের বিচারিক হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে। বিচারিক হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে আমাদের রাজনৈতিক অবস্থান ছিল, এখনো আছে, সামনেও থাকবে।’
ঢাবি শিবিরের সভাপতি বলেন, ‘শাহবাগের মধ্য দিয়ে তাদের যে বিভাজনের রাজনীতি এবং ষড়যন্ত্রের রাজনীতি দাঁড় করাতে চেয়েছিল, চব্বিশে তারা ব্যর্থ হয়েছে। ঠিক একইভাবে ৭২ সাল থেকে তাদের নীরব প্রচেষ্টা এবং সক্রিয় প্রচেষ্টার মধ্য দিয়ে বাকশাল কায়েমের চেষ্টা করেছিল। তারা ব্যর্থ হয়েছে, পারেনি। সামনেও এই রাজনৈতিক দেউলিয়াত্বের শিকার হয়ে যারা এ ধরনের পুরোনো ইস্যুকে হাজির করে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের মতো গুরুত্বপূর্ণ টপিককে জাতিকে বিভাজনের দিকে যান এবং মিথ্যা বয়ান ও অভিযোগ চাপিয়ে দেন- এটা জনগণ মেনে নেবে না।’
শিক্ষার্থীরা সচেতন এবং এ ধরনের রাজনীতি আগামীতে কখনো টিকবে না বলেও বিশ্বাস করেন ছাত্রশিবিরের এই নেতা। এবং দিনশেষে এই রাজনীতি পরাজিত হবে বলেই মনে করেন এস এম ফরহাদ।