নোয়াখালী: দীর্ঘ আড়াই বছর পর ওমান থেকে দেশে ফিরছিলেন লক্ষ্মীপুরের বাসিন্দা মো. বাহার উদ্দিন। দেশে ফেরার আনন্দে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে লিখেছিলেন ‘স্বপ্ন যাবে বাড়ি আমার’। কিন্তু সেই স্বপ্ন মুহূর্তেই দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়। তাকে বরণ করে নিতে আসা পরিবারের সাত সদস্য মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন।
মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) রাতে বাহার উদ্দিনকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে আনতে তার স্ত্রী, সন্তান, মা ও অন্যান্য স্বজন মাইক্রোবাস ভাড়া করে ঢাকা যান। ফেরার পথে বুধবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ পূর্ব বাজারে গাড়িচালক ঘুমিয়ে পড়লে মাইক্রোবাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রহমতখালী খালে পড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই বাহারের মা, স্ত্রী ও শিশু সন্তানসহ সাতজনের করুণ মৃত্যু হয়।
নিহতরা হলেন— বাহারের মা মুরশিদা বেগম (৫০), স্ত্রী কবিতা (২৩), মেয়ে মীম (২), নানী ফয়জুন নেছা (৭০), ভাইয়ের স্ত্রী লাবনী (২৫), ভাতিজি লামিয়া (৮) ও রেশমী (৯)।
আহত হয়েছেন— বাহার উদ্দিন, তার বাবা আবদুর রহিম, শ্বশুর ইসকান্দর মির্জা, শ্যালক রিয়াজ এবং ভাইয়ের স্ত্রী সুইটি ও গাড়ি চালক।
বাহার উদ্দিনের বাবা আবদুর রহিম জানান, চালক হঠাৎ ঘুমিয়ে পড়ায় গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারায় এবং খালে পড়ে যায়। তারা জানালা দিয়ে বের হলেও গাড়ির দরজা লক করা থাকায় বাকিরা আটকা পড়ে যান। খালে তীব্র স্রোত থাকায় গাড়ি দ্রুত তলিয়ে যায়। প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা পর গাড়িটি উদ্ধার করা হলে সাতজনের মরদেহ পাওয়া যায়।
চন্দ্রগঞ্জ হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মোবারক হোসেন ভূঁইয়া ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘চালকের অসতর্কতার কারণে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। নিহতদের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
একসঙ্গে পরিবারের সাত সদস্যকে হারানোর শোকে পুরো এলাকায় শোকের মাতম চলছে। স্বজনদের আহাজারিতে সেখানকার বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে।