Friday 12 Dec 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বাজার স্থিতিশীল, ব্যবসা আরও সহজীকরণ ও বাণিজ্য আদালত প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৭ আগস্ট ২০২৫ ১৭:৫৪

বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান – (ফাইল ছবি : সংগৃহীত )

ঢাকা: গত বছরের একই সময়ের তুলনায় এখন দেশের অভ্যন্তরীণ বাজার পরিস্থিতি অনেক ভালো- বলে দাবি করেছেন বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান।

তিনি বলেন, গত ১২ মাস ধরে বাজার স্থিতিশীল এবং এখন আর তেমন কোনো উদ্বেগ নেই।  এছাড়া টিসিবি’র কভারেজও ধীরে ধীরে বাড়ছে। ফলে নির্ধারিত উপকারভোগীরা সরাসরি উপকৃত হচ্ছেন। টিসিবি’র নিয়মিত কার্যক্রমের পাশাপাশি স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য ‘ট্রাক সেল’ কার্যক্রমও চালু রাখা হয়েছে।

বাণিজ্য সচিব বলেন, অন্যদিকে সংস্কারের অংশ হিসেবে ‘ইজি অব ডুয়িং বিজনেস’ বা ব্যবসা করার সহজতর পরিবেশ নিশ্চিত করতে আমদানি নীতিতে কিছু সংশোধনী আনা হচ্ছে, যাতে সনদ ও অনুমোদন প্রদান প্রক্রিয়া সহজ হয়। এছাড়া আরেকটি বড় সংস্কার উদ্যোগ হচ্ছে- বাণিজ্য সংক্রান্ত আদালত প্রতিষ্ঠা করা। এ আদালত প্রতিষ্ঠিত হলে ব্যবসায়ীরা তাদের বাণিজ্য সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে সরাসরি আদালতে যেতে পারবেন। এ লক্ষ্যে একটি খসড়া আইন প্রণয়ন করা হচ্ছে এবং আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে মন্ত্রিসভার বৈঠকে এটি উপস্থাপন করা হবে।

বিজ্ঞাপন

রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা বাসস-কে সচিবালয়ে প্রদত্ত এক সাক্ষাৎকারে বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান এসব কথা বলেন।

অভ্যন্তরীণ বাজার পরিস্থিতি প্রসঙ্গে বাণিজ্য সচিব আরও বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর কঠোর মনিটরিং, পর্যাপ্ত পণ্য সরবরাহ নিশ্চিতকরণ এবং চাঁদাবাজি রোধে কার্যকর উদ্যোগের ফলে এই সাফল্য এসেছে। এ ধারাবাহিকতা ধরে রেখে সরকার বাজার মনিটরিং আরও জোরদার করবে এবং পাশাপাশি ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) কার্যক্রম আরও শক্তিশালী করা হবে। যদি তা হয়, আমি আশা করি, বাজারে আরও ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।

তিনি বলেন, জুনের শেষ ভাগ থেকে জুলাইয়ের শুরুর দিক পর্যন্ত বাজারে কিছুটা চালের ঘাটতি দেখা দিলেও বর্তমানে পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। আমি মনে করি, এখন এ নিয়ে তেমন কোনো উদ্বেগের কারণ নেই।

বাণিজ্য সচিব বলেন, বাজার পর্যবেক্ষণের অংশ হিসেবে মন্ত্রণালয় প্রায়ই লক্ষ্য করে যে, পণ্যের চাহিদা বেড়ে গেলে বাজারে কখনো কখনো অস্থিরতা তৈরি হয়। সাধারণত পবিত্র রমজান মাস ও অন্যান্য উৎসবকেন্দ্রিক সময়ে এ চাহিদা বেড়ে যায়। চাহিদার তুলনায় যদি পর্যাপ্ত পণ্যের জোগান নিশ্চিত না করা যায়, তাহলে পরিস্থিতি কঠিন হয়ে পড়ে। এ বছর পবিত্র রমজান ও ঈদুল আজহার সময় সরবরাহ ব্যবস্থা ভালো ছিল এবং কঠোর মনিটরিংয়ের কারণে আমরা বাজার স্থিতিশীল রাখতে সক্ষম হয়েছি।

তিনি জানান, এ বছর বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বাজার পর্যবেক্ষণ কার্যক্রম আরও জোরদার করেছে। পণ্যের বাজার স্থিতিশীল রাখতে এ বছর চারশ’র বেশি দল সার্বক্ষণিক মাঠে ছিল। এই পর্যবেক্ষণকারী সংস্থাগুলোর সক্রিয় উপস্থিতি মূলত পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি প্রতিরোধে বড় ভূমিকা রেখেছে। এবার বিভাগীয় পর্যায়ের গণ্ডি পেরিয়ে জেলা ও উপজেলা পর্যায়েও বাজার মনিটরিং কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে।

খুচরা ও পাইকারি দামের পার্থক্যের বিষয়ে তিনি বলেন, এ বিষয়ে ইতোমধ্যে কিছু অগ্রগতি হয়েছে। খাদ্য মন্ত্রণালয়, কৃষি মন্ত্রণালয় ও প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে বিষয়টি নিয়ে একাধিক বৈঠক হয়েছে। সরকারের নিরবচ্ছিন্ন প্রচেষ্টার ফলে এই খাতে ‘অননুমোদিত ব্যয়’ বা যাকে সাধারণভাবে চাঁদাবাজি বলা হয়, তা অনেকটা হ্রাস পেয়েছে।

বাণিজ্য সংক্রান্ত আদালত প্রসঙ্গে বাণিজ্য সচিব আরও বলেন, প্রাথমিকভাবে ঢাকাসহ বিভাগীয় শহরগুলোতে এসব আদালত স্থাপন করা হবে এবং সংশ্লিষ্ট জেলা ও দায়রা জজরা এসব আদালত পরিচালনা করবেন। পরে প্রয়োজনে এ কার্যক্রম সম্প্রসারিত করা হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্ক বিষয়ে আলোচনা সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে- উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী বাণিজ্যে কিছু সমস্যার মুখোমুখি হওয়া সত্ত্বেও দেশের রফতানি আয় বাড়ছে এবং রপ্তানি পণ্য বৈচিত্র্যকরণে অগ্রগতি হচ্ছে।

সারাবাংলা/আরএস
বিজ্ঞাপন

আরো