ঢাকা: অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি প্রত্যাশা নিয়ে বড় ধাক্কা খাওয়ার অভিযোগ তুলেছেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর। তিনি বলেন, ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের কর্মকাণ্ড এখনো জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি, বরং এর ঘোষণাপত্রে অনেক গতানুগতিক বিষয় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে যা আন্দোলনের চেতনা ও প্রেক্ষাপটকে সঠিকভাবে প্রতিফলিত করে না।’
শুক্রবার (৮ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীতে অনুষ্ঠিত ‘দ্রুত বিচার সম্পন্ন, মৌলিক সংস্কার ও জাতীয় সংসদ নির্বাচন’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব মন্তব্য করেন। অগ্নিসেনা সোশ্যাল ফাউন্ডেশন ও আমাদের নতুন বাংলাদেশ যৌথভাবে এ আয়োজন করে।
নুর বলেন, “যে সিস্টেম আওয়ামী লীগের মতো দল তৈরি করেছে, শেখ হাসিনার মতো সাইকোপ্যাথ তৈরি করেছে—সেই সিস্টেম ভেঙে রাষ্ট্র সংস্কার করতে হবে। আগে যারা সেই সিস্টেম ব্যবহার করেছে, এখনো যদি কেউ একইভাবে দেশ চালাতে চায়, তা মেনে নেওয়া হবে না।”
তিনি জোর দিয়ে বলেন, শুধু সরকার পরিবর্তন করলেই হবে না, নিজেদেরও পরিবর্তিত হতে হবে। সাম্প্রতিক এক সাংবাদিক হত্যার ঘটনায় তিনি হতাশা প্রকাশ করে বলেন, “এত মানুষ সামনে থেকেও এগিয়ে এল না! আবার এই ধরনের ঘটনার সুযোগ নিয়ে রাজনীতি করাও ঠিক না।”
আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন প্রসঙ্গে নুর সতর্ক করে বলেন, “আমরা যদি ভেবে থাকি প্রশাসন ও রাজনীতিতে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করলে তারা আমাদের সহযোগিতা করবে, তবে তা হবে মারাত্মক ভুল। আওয়ামী লীগকে নিয়ে রাজনীতি করতে হবে কেন? দেশে তো মানুষের অভাব নেই।”
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্রের সমালোচনা করে তিনি বলেন, “এতে আন্দোলনের প্রকৃত প্রেক্ষাপট—১৬ বছরের অত্যাচার, গুম, খুনের ইতিহাস—যথাযথভাবে ফুটে ওঠেনি। কিছু রাজনৈতিক দলের সুবিধামতো ন্যারেটিভ তৈরি করতে গিয়ে এতে অনেক পুরোনো ও সেকেলে বিষয় ঢোকানো হয়েছে।”
নুরের মতে, বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ধারার সূচনা করতে হলে কেবল নির্বাচন নয়, রাষ্ট্রীয় কাঠামো ও বিচার ব্যবস্থার মৌলিক সংস্কার অপরিহার্য। তিনি উপস্থিত রাজনৈতিক কর্মী ও তরুণ প্রজন্মকে সতর্ক করে বলেন, ‘আন্দোলনের চেতনা যেন ক্ষমতার রাজনীতিতে হারিয়ে না যায়, সেটিই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।’