মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের জেরে এবার যুক্তরাষ্ট্র থেকে অস্ত্র ও যুদ্ধবিমান কেনার পরিকল্পনা সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে ভারত।
শুক্রবার (৮ আগস্ট) ভারতীয় দৈনিক ‘দ্য ওয়াল’ ও ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে।
রয়টার্স বলছে, ভারতের এ সিদ্ধান্ত দুই দেশের সম্পর্কে গত কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় টানাপোড়েনের প্রথম স্পষ্ট ইঙ্গিত।
দ্য ওয়ালের প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের আগামী সপ্তাহগুলিতে ওয়াশিংটন সফর করে কয়েকটি ক্রয় চুক্তি ঘোষণা করার কথা ছিলো, কিন্তু সেই সফর বাতিল হয়েছে। ৬ আগস্ট ট্রাম্প ভারতের রাশিয়া থেকে তেল কেনার প্রতিবাদে ভারতীয় পণ্যে অতিরিক্ত ২৫% শুল্ক আরোপ করেন, যা মোট শুল্কের হারকে ৫০%-এ পৌঁছে দেয়— মার্কিন বাণিজ্য অংশীদারদের মধ্যে অন্যতম সর্বোচ্চ।
সূত্র জানিয়েছে, শুল্ক এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের দিকনির্দেশনা স্পষ্ট হলে এই প্রতিরক্ষা ক্রয় আবারও এগোতে পারে, তবে এখনই নয়। যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে ক্রয় স্থগিতের কোনও লিখিত নির্দেশ নেই, আপাতত কোনও অগ্রগতি হচ্ছে না।
স্থগিত হওয়া প্রকল্পগুলির মধ্যে রয়েছে জেনারেল ডায়নামিক্সের তৈরি স্ট্রাইকার কমব্যাট ভেহিকল, রেথিয়ন ও লকহিড মার্টিনের যৌথভাবে তৈরি জ্যাভলিন অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক মিসাইল, এবং ভারতীয় নৌবাহিনীর জন্য ছয়টি বোয়িং পি ৮ নজরদারি বিমান ক্রয়— যার প্রস্তাবিত মূল্য ৩.৬ বিলিয়ন ডলার।
গত ফেব্রুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যৌথভাবে এসব চুক্তির ঘোষণা দিয়েছিলেন।
রয়টার্স জানায়, গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদান ও যৌথ মহড়া চলমান থাকলেও, অতিরিক্ত শুল্কের কারণে রাজনৈতিকভাবে মোদীর জন্য যুক্তরাষ্ট্রের দিক ঝোঁকা কঠিন হয়ে পড়েছে।
বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অস্ত্র আমদানিকারক দেশ হিসেবে ভারত ঐতিহ্যগতভাবে রাশিয়ার উপর নির্ভরশীল। সাম্প্রতিক সময়ে ফ্রান্স, ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের দিকেও ভারত ঝুঁকছে, তবে রক্ষণাবেক্ষণের দিক থেকে এখনও মস্কোর সহায়তার প্রয়োজন রয়েছে।
এদিকে, মস্কো ভারতকে নতুন প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি, যেমন এস-৫০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা প্রস্তাব করছে, যদিও ভারত এখনই রাশিয়া থেকে নতুন অস্ত্র কেনার প্রয়োজন দেখছে না।