খুলনা: বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ (বীর বিক্রম) বলেছেন, জনগণকে বিভ্রান্ত করতে কিছু মহল পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন চায়। তিনি বলেন, বর্তমান পদ্ধতিতে জনগণের সরাসরি ভোটে প্রতিনিধি নির্বাচিত হওয়া ছাড়া নির্বাচন করা সম্ভব নয়।
শনিবার (৯ আগস্ট) দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাব ব্যাংকুয়েট হলে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল খুলনা মহানগর ও জেলা শাখার উদ্যোগে আয়োজিত ‘৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধ ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় শহিদ জিয়া’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মেজর হাফিজ বলেন, আগামী নির্বাচন বিএনপির জন্য অগ্নিপরীক্ষা। জনগণ হয়তো বিএনপিকে সংখ্যাগরিষ্ঠতা দিতে পারে, কিন্তু আওয়ামী লীগের মতো ক্ষমতায় টিকে থাকার ভুল ধারণা করা যাবে না। ‘আমরা ১৫ দিনও টিকব না যদি একই পথে হাঁটি,’ মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি দাবি করেন, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ ছিল গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য, কিন্তু যুদ্ধের পর ইতিহাস বিকৃত হয়েছে এবং প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা অন্ধকারে রয়ে গেছেন। স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, আমরা দেখেছি, প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা ছিলেন লুঙ্গি ও গামছা পরা খেটে খাওয়া সাধারণ বাঙালি। কিন্তু স্বাধীনতার পর দেখা গেল, বড়লোকের ছেলেরা মুক্তিযোদ্ধার পরিচয় নিয়ে নিয়েছে। তিনি আরও বলেন, ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানকেও বিকৃতভাবে উপস্থাপন করে মানুষকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘যারা নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় যেতে পারবে না, তারাই পিআর সিস্টেমে ভোট চায়। তারাই কল্পকাহিনী, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করছে।
নির্বাচন ঘোষণা দেওয়ার জন্য প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ধন্যবাদ জানিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, ড. ইউনূস অভিজ্ঞ মানুষ হলেও তার উপদেষ্টা পরিষদের অনেকের রাষ্ট্র পরিচালনার যোগ্যতা নেই। কেউ কেউ গদি ছাড়তে চাননি। কেউ কেউ পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকতে চেয়েছেন। কেউ কেউ বলছেন যে পিআর পদ্ধতি ছাড়া নির্বাচনে যাব না, কেউ কেউ বলছেন বিচার ছাড়া নির্বাচনে যাব না, আবার কেউ বলছেন সংস্কার ছাড়া নির্বাচনে যাব না। আমরা আপনাদের বলি- দেশ ও জাতির স্বার্থে আপনারা সকলে আসুন, আগামী ২০২৬ সালের নির্বাচনে আমরা সকলে একসাথে অংশগ্রহণ করি।
শেখ হাসিনার সমালোচনা করে মেজর হাফিজ বলেন, ‘নির্বাচনের নামে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করেনি। গণতন্ত্রকে তারা ছুড়ে ফেলে দিয়ে একদলীয় শাসন কায়েম করেছিল।’
সভায় মুক্তিযোদ্ধা দল খুলনা মহানগরীর সভাপতি শেখ আলমগীর হোসেনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান বক্তা ছিলেন জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাত। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি এড. শফিকুল আলম মনা, জেলা বিএনপির আহবায়ক মনিরুজ্জামান মন্টু, মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল আলম তুহিন।