ঢাকা: ‘সরকার ও জনগণের মানসিক সংস্কার ছাড়া রাষ্ট্রকাঠামোর সংস্কার সফল হবে না’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।
রোববার (১০ আগস্ট) বিকেলে গুলশানে বিএনপির চেয়ারাপরসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি মন্তব্য করেন।
ছাত্র গণঅভ্যুত্থানে আহত, ক্যান্সার আক্রান্ত রোগী ও অসহায় অসুস্থ ব্যক্তিদের চিকিৎসা সহায়তা প্রদান উপলক্ষে এই অনুষ্ঠান আয়োজন করে আমরা বিএনপি পরিবার।
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘‘আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি এইভাবে গ্রহণ করি যে আমরা প্রতিদিন সংস্কারের মধ্য দিয়ে যাব, একটি জনকল্যাণমুখী সংস্কারের মধ্য দিয়ে যাব, একটি জনকল্যাণকর রাষ্ট্র ব্যবস্থা, সমাজ ব্যবস্থা বিনির্মাণের জন্য কাজ করব। ইদানিং একটা কথা শুনি যে, সংস্কার হচ্ছে। রাষ্ট্র কাঠামোর সংস্কারের মধ্য দিয়ে কাঙ্ক্ষিত মানবিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা পরিচালিত হয়।”
‘‘কারণ এই রাষ্ট্র ব্যবস্থাটা যারা পরিচালনা করবে তাদের মানসিক সংস্কার হওয়া দরকার, জনগণের মানসিক সংস্কার হওয়া দরকার, আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির সংস্কার হওয়া দরকার এবং এই সমাজের মানুষের, আমাদের, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের যারা রাষ্ট্র পরিচালনা করবেন তাদের সম্মিলিতভাবে সবার মানসিক সংস্কারের মধ্য দিয়ে আমরা যদি রাষ্ট্র কাঠামো সংস্কারটা বাস্তবায়ন করতে পারি তাহলেই দুইয়ে দুই চার হবে, তাহলেই আমরা একটা কল্যাণমূলক মানবিক রাষ্ট্র পেতে পারব’’- বলেন সালাহউদ্দিন আহমেদ।
তিনি বলেন, ‘‘ধরুন সংস্কারের মধ্য দিয়ে আমরা একটা গণতান্ত্রিক সংবিধান পেলাম। সেই গণতান্ত্রিক সংবিধানের মাধ্যমে যে সরকার গঠিত হবে, সেই সরকার যারা পরিচালনা করবে তারা যদি তাদের মানসিক সংস্কার এবং দৃষ্টিভঙ্গি না পাল্টায় এবং জনগণের দৃষ্টি ভঙ্গি যদি না পাল্টায় তাহলে মানবিক রাষ্ট্র কীভাবে হবে?”
সালাহউদ্দিন বলেন, ‘‘আমরা জনগণ হিসেবে যদি মনে করি, সব দায়িত্ব সরকারের.. সেটা একটা ভুল ধারণা। আমাদের দৃষ্টি ভঙ্গি এমন হবে সরকার আমাদের জন্য কী করে তা নয়। জনগণ দেশের জন্য কী করবে সেটাও ভাবতে হবে? এটাই হচ্ছে দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন। তাহলেই জনগণ এবং দায়বদ্ধ সরকার উভয়ে মিলে কাঙ্ক্ষিত রাষ্ট্র ব্যবস্থা, সরকার ব্যবস্থা, সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব।”
তিনি বলেন, ‘‘যেই স্বপ্ন ছিল স্বাধীনতার শহিদদের, মুক্তিযোদ্ধাদের, যেই স্বপ্ন ছিল ২০২৪ সালের আমাদের ছাত্র গণঅভ্যুত্থানে শহিদদের যারা রক্তদান করেছেন, যারা জীবন দিয়েছেন, যারা পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন তাদের। আমরা যাতে সেই সমাজনির্মাণ করতে পারি যারা আজকে পঙ্গুত্ব বরণ করেছে, তাদের সন্তানরা যেন তাদের কাঙ্ক্ষিত ও রাষ্ট্র ব্যবস্থা দেখে যেতে পারে, আমরা সব সময় বলি শত সহস্র শহিদের রক্তের আকাঙ্ক্ষা আমাদের পূর্ণ করতে হবে।’’
সালাহউদ্দিন বলেন, ‘‘ফ্যাসিস্টের মধ্যে কোনো অনুশোচনা নেই, বেদনা নেই, কোনো পরাজয়ের স্বীকারোক্তি নেই বরং দেখি দাম্ভিকতা। আমরা বলব, সেই স্বৈরাচারে দাম্ভিক আচরণ আমরা যতই দেখব আমাদের মনে হবে যে, ভবিষ্যতে এরকম কোনোভাবে ফ্যাসিবাদের উৎপত্তি যাতে না হয়, সেইভাবে যেন আমরা রাষ্ট্র ব্যবস্থাটা পরিচালিত করি।
আমরা বিএনপি পরিবারের আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমনের সভাপতিত্বে ও সদস্য জাহিদুল ইসলাম রনির সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন বিএনপি মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল, কোষাধ্যক্ষ রশিদুজ্জামান মিল্লাহ, তথ্য ওপ্রযুক্তি বিষয়ক সহ-সম্পাদক আশরাফ উদ্দিন বকুল প্রমুখ।