ঢাকা: প্রয়োজনীয় অবকাঠামো ও আমদানি-রফতানি কার্যক্রম না থাকায় বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ-এর আওতাধীন অভ্যন্তরীণ অলাভজনক ৩টি স্থলবন্দর বন্ধ এবং ১টির কার্যক্রম স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। যে তিনটি বন্দর বন্ধ করা হবে, সেগুলো হচ্ছে- নীলফামারীর চিলাহাটি, চুয়াডাঙ্গার দৌলতগঞ্জ ও রাঙ্গামাটির তেগামুখ স্থলবন্দর। এছাড়া ভারতীয় অংশে অবকাঠামো না থাকায় হবিগঞ্জের বাল্লা স্থলবন্দরের কার্যক্রম সাময়িকভাবে স্থগিত রাখা হবে।
দেশে বিদ্যমান বন্দরগুলোর বিষয়ে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের একটি পরিদর্শন কমিটির প্রতিবেদন নিয়ে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত এক আন্ত:মন্ত্রণালয় সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন। সভায় পরিকল্পনা বিভাগ, নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনসহ সংশ্লিষ্ট দফতরের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা যায়, বৈঠকে বলা হয় যে, চিলাহাটি, দৌলতগঞ্জ ও তেগামুখ স্থলবন্দরে বর্তমানে কোনো আমদানি-রফতানি বা ইমিগ্রেশন কার্যক্রম নেই। এসব বন্দরে জমি বা অবকাঠামোও নেই। ভবিষ্যতেও বাণিজ্যিক সম্ভাবনা না থাকায় অলাভজনক বিনিয়োগ এড়াতে এগুলো বন্ধ করে দেওয়া উচিৎ।
অন্যদিকে, বাল্লা স্থলবন্দরের অবকাঠামো নির্মাণ শেষ হলেও ভারতীয় অংশে (পাহাড়মুড়া) অবকাঠামো না থাকায় কার্যক্রম চালু সম্ভব হয়নি। এ কারণে ভারতীয় অংশের উন্নয়ন সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত বন্দরটির কার্যক্রম স্থগিত রাখার সুপারিশ করা হয়েছে। পাশাপাশি বাল্লা বন্দরের অবকাঠামো বিকল্পভাবে ব্যবহারের সম্ভাবনাও খতিয়ে দেখার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বৈঠকে।
সূত্রমতে, বৈঠকে উল্লেখিত চারটি স্থলবন্দর ছাড়া আরও চারটি বন্দরকে অলাভজনক ও নিষ্ক্রিয় হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে- শেরপুরের নাকুগাঁও, ময়মনসিংহের গোবরাকুড়া-কড়ইতলী, জামালপুরের ধানুয়া কামালপুর ও দিনাজপুরের বিরল স্থলবন্দর।
এসব অলাভজনক স্থলবন্দরে যেন অপ্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ না হয়, সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বৈঠকে।
বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, দেশে বর্তমানে ২৪টি স্থলবন্দর রয়েছে। এর মধ্যে চালু রয়েছে ১৬টি স্থলবন্দর। এগুলো হচ্ছে- বেনাপোল, ভোমরা, বুড়িমারী, তামাবিল, সোনাহাট, আখাউড়া, নাকুগাঁও, বিলোনিয়া, গোবড়াকুড়া-কড়ইতলী, শেওলা, ধানুয়া কামালপুর, সোনামসজিদ, হিলি, বাংলাবান্ধা, বিবিরবাজার ও টেকনাফ।