চট্টগ্রাম ব্যুরো: শতবর্ষী ব্যবসায়ী সংগঠন চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। আগামী ১ নভেম্বর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগের পর আন্দোলনের মুখে পুরো পর্ষদ পদত্যাগের পর গত ১১ মাস ধরে প্রশাসকের অধীনে চলছিল চেম্বারের কার্যক্রম।
সোমবার (১১ আগস্ট) বিকেলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের গঠিত নির্বাচন বোর্ডের প্রধান ও চট্টগ্রামের স্থানীয় সরকার বিভাগের পরিচালক মনোয়ারা বেগম ২০২৫-২০২৭ মেয়াদে চেম্বারের পরিচালকমণ্ডলী নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে।
চট্টগ্রাম চেম্বারের যুগ্ম সচিব নুরুল আবছার চৌধুরী সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন, আগামী ১ নভেম্বর চট্টগ্রাম নগরীর আগ্রাবাদে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তফসিল অনুযায়ী, আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর থেকে ২০ সেপ্টেম্বর মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করতে পারবেন প্রার্থীরা। ২১ সেপ্টেম্বর মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষদিন। ২৫ সেপ্টেম্বর প্রাথমিক ও ৫ অক্টোবর চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হবে।
নির্বাচন বোর্ডের সদস্য হিসেবে আছেন, চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. কামরুজ্জামান এবং বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার (সাধারণ শাখা) আহমেদ হাছান।
২০১৩ সালের পর চট্টগ্রাম চেম্বারে আর নির্বাচন হয়নি। চট্টগ্রাম-১১ (বন্দর-পতেঙ্গা) আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য ও চেম্বারের সাবেক সভাপতি এম এ লতিফ তার ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীদের নিয়ে চেম্বারকে ‘কুক্ষিগত’ করে রেখেছিলেন বলে ব্যবসায়ীদের অভিযোগ। নিজের ছেলেকে চেম্বারের সভাপতি বানিয়ে ‘পরিবারতন্ত্রের বোঝা’ চাপিয়েছিলেন ১১৮ বছর বয়সী এ সংগঠনের ওপর।
চট্টগ্রাম চেম্বারে সর্বশেষ ২০২৩-২৫ মেয়াদের ২৪ সদস্যের পুরো পর্ষদের সবাই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছিলেন। এতে বর্তমানে কারাবন্দি সাবেক সংসদ সদস্য এম এ লতিফের ছেলে ওমর হাজ্জাজকে সভাপতি করার পাশাপাশি আরেক ছেলে ওমর মুক্তাদিরকে পরিচালক করা হয়েছিল।
গতবছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর চেম্বার নেতাদের পদত্যাগের দাবিতে বঞ্চিত ব্যবসায়ীরা আন্দোলন শুরু করেন। আন্দোলনের মুখে ২ সেপ্টেম্বর সভাপতি, সিনিয়র সহ-সভাপতি, সহ-সভাপতি ও ২১ জন পরিচালকসহ ২৪ সদস্যের পুরো পর্ষদ পদত্যাগ করে, যা সংগঠনটির ইতিহাসে নজিরবিহীন।
এর পর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তে গত বছরের ৯ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম চেম্বারের প্রশাসকের দায়িত্ব নেন চট্টগ্রামের তৎকালীন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) মুহাম্মদ আনোয়ার পাশা। শুরুতে তার মেয়াদ ছিল ১২০ দিন। এর পর কয়েক দফায় মেয়াদ বাড়িয়ে ৮ সেপ্টেম্বর শেষ হচ্ছে তার মেয়াদ।