ঢাকা: রাজধানীর ডেলটা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসায় অবহেলায় শিশুর হাত ভেঙে ফেলার অভিযোগে পাঁচ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
রোববার (১০ আগস্ট) বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি সৈয়দ জাহেদ মনসুর সমন্বয়ে গঠিত দ্বৈত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। রুল বিচারাধীন থাকাকালীন আগামী ৩ মাসের মধ্যে একটি তদন্ত কমিটি গঠনপূর্বক তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলেরও আদেশ দিয়েছেন আদালত।
রিটের পক্ষে আদালতে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মো. শফিকুল ইসলাম সোহেল। তিনি সারাবাংলাকে বলেন, ‘‘জন্ডিসের মাত্রা অতিরিক্ত থাকার কারণে পাঁচ দিন বয়সী শিশু ফাতিহ বিন নূরকে গত ৩ এপ্রিল ডেলটা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরদিন হাসপাতাল থেকে রিলিজ দেওয়ার সময় শিশুটির বাবা নূরের সাফাহকে চিকিৎসক থেকে বলা হলো- শিশুটির ডান হাতে ক্যানোলা করার কারণে ব্যাথা আছে, সাবধানে নিয়ে যাবেন। এরপর বাসায় নেওয়ার পর হাত থেকে ব্যান্ডেজ সরানোর পর দেখা গেলো হাত ভেঙে গেছে। হাতটা অস্বাভাবিক, হাতে ছুলেই কান্না করে শিশুটি। তখনই পুনরায় শিশুটিকে ডেলটা হাসপাতালে নেওয়া হলে এক্সরে করা হয়। শিশুটির বাবা হাসপাতালের কাছে জানতে চাইলে তাকে বলা হয়, ‘আপনারা বাসায় নিয়ে হাত ভেঙে ফেলেছেন’।’’
শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন— ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ শফিকুর রহমান, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তানিম খান ও সহকারি অ্যাটর্নি জেনারেল মহিউদ্দিন মো. হানিফ।
এ বিষয়ে বজাতকের বাবা মো. নূরের সাফাহ্ বলেন, ‘বিলিরুবিনের মাত্রা বেশি থাকায় গত ৩ এপ্রিল চিকিৎসক ডা. এ কে খাইরুল আনাম চৌধুরীর অধীনে ভর্তি করি। পরদিন বিলিরুবিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে এসেছে জানিয়ে রিলিজ দেয় হাসপাতাল। ফাতিহকে দিয়ে তারা জানায় ডান হাতে ক্যানোলা পরানোর কারণে ব্যথা আছে, এই হাত যেন কম নাড়ানো হয়। তখনো ফাতিহ ঘুমাচ্ছিল। বাসায় আনার পর খাওয়ানোর চেষ্টা করলে দেখা যায়, ফাতিহ এর ডান হাত কনুইর ওপরে ভাঙা। সেখানে টাচ করলেই কান্না করছে।’
তিনি বলেন, ‘‘হাসপাতালে নিয়ে বিষয়টি জানালে ডিউটি চিকিৎসক বলেন, ‘‘আপনারা বাসায় নেওয়ার পর টানাটানি করে হাত ভেঙে ফেলেছি’। তারা আমাদের পঙ্গু হাসপাতালে যেতে বলে একটি এক্সরে করার জন্য। কারণ, তাদের ওখানে এক্সরে করার উপায় নাকি নেই। তখন আমরা লিখিত অভিযোগ দিয়ে চলে আসি।’’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের ধারণা রাতের কোনো এক সময়ে হাত ভেঙেছে এবং সেটা স্বাভাবিক দেখানোর জন্য তাকে কোনো ধরনের সিডেটিভ ব্যবহার করে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হয়েছিল যেন আমরা না বুঝতে পারি।’