ঢাকা: বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বজ্রপাতের ঘটনা ক্রমশ বেড়ে চলেছে। প্রতি বছর বজ্রপাতে ৩০০ থেকে ৪০০ মানুষের প্রাণহানি ঘটে, যা শুধু একটি পরিসংখ্যানে নয বরং বাস্তব মানুষের জীবনের ক্ষতিগুলোকে প্রতিফলিত করে। এই সমস্যা মোকাবিলায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতর দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান—প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক, কারিগরি, মাদরাসাসহ ধর্মীয় উপাসনালয়ে বজ্রবৃষ্টি ও বজ্রপাত নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য জরুরি বার্তা প্রচারের নির্দেশ দিয়েছে। একইসঙ্গে, জেলার প্রশাসনকে মাঠ পর্যায়ে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ এবং প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (১৩ আগস্ট) কারিগরি শিক্ষা অধিদফতরের সহকারী পরিচালক মো. হুমায়ুন কবিরের সই করা এক স্মারকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, দুর্যোগ বিষয়ক স্থায়ী আদেশাবলি-২০১৯ এর ‘ফোকাল পয়েন্ট অপারেশনাল কো-অর্ডিনেশন গ্রুপ’ এর সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, জেলা প্রশাসকদের কাছে পাঠানো নির্দেশনায় বলা হয়েছে, প্রতি শুক্রবার জুম্মার নামাজের আগে মসজিদে বজ্রপাতের সময় করণীয় বিষয়ে সচেতনতামূলক বার্তা প্রচার করতে হবে। পাশাপাশি, দেশের অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়েও সুবিধাজনক সময়ে একই ধরনের সতর্কবার্তা প্রচারের ব্যবস্থা নেওয়ার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
এর কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, ২০১৬ সালে সরকার বজ্রপাতকে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘দুর্যোগ’ হিসেবে ঘোষণা করে। এরপর থেকে জনসচেতনতা বৃদ্ধি কর্মসূচি পরিচালনা করলেও মৃত্যুর হার কমেনি। তাই মাঠ পর্যায়ে উদ্যোগ আরও জোরদারের জন্য জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের প্রশাসনকে নির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন এবং গৃহীত পদক্ষেপের প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
একইসঙ্গে এই নির্দেশনা বাস্তবায়নে কারিগরি শিক্ষা অধিদফতরসহ মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা, মাদরাসা শিক্ষা অধিদফতর এবং ইসলামিক ফাউন্ডেশনকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যাতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে ধর্মীয় উপাসনালয় পর্যন্ত সচেতনতামূলক কার্যক্রম বিস্তৃত হয়।
বজ্রপাত একটি প্রাকৃতিক বিপদ কিন্তু এ বিপদ থেকে প্রাণ রক্ষা করা সম্ভব দূরদর্শী পরিকল্পনা ও জনসচেতনতার মাধ্যমে। এছাড়া আমরা শুধু নিরাপদ স্কুল নয়, নিরাপদ সমাজ গড়তে পারি। বিধিবদ্ধ নির্দেশের পাশাপাশি মনোভাব পরিবর্তন করার দায়িত্বও আমরা সবাই মিলে নিতে পারি।