ফরিদপুর: ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলায় এক যুবককে চোর সন্দেহে ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলিয়ে অমানবিকভাবে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে।
বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) বিকেলে ঝুলিয়ে পেটানোর ভিডিওটি ভাইরাল হয়। এর আগে মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) রাতে উপজেলার সাতৈর ইউনিয়নের ডোবরা আকিজ জুটমিল এলাকায় মারপিটের এ ঘটনা ঘটে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ডোবরা গ্রামের সালাম সিকদারের ছেলে আহাদ সিকদার (৩০) এলাকার চিহ্নিত চোর ও মাদক সেবনকারী। গত শনিবার মিল গেটের মাহাবুবের মুদি দোকানে চুরি হয়, একজনের পাট চুরি হয়। একইসঙ্গে মিলের তার চুরি হয়। এসব চুরির অভিযোগে ডোবরা গ্রামের কালাম শেখ ও রবিউল শেখের সঙ্গে আরও লোকজন মিলে মঙ্গলবার রাতে আহাদকে ধরে একটি দোকান ঘরে নিয়ে আড়ার সঙ্গে পা ঝুলিয়ে অমানবিকভাবে নির্যাতন করে। স্বীকারোক্তি দেওয়ার পর আহাদকে বোয়ালমারী থানায় সোপর্দ করে রবিউল শেখ। পরে আহাদের অভিভাবকদের অনুরোধে ভালো হওয়ার শর্তে মুচলেকা নিয়ে থানা থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। ছাড়া পেয়ে আহাদ বোয়ালমারী উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেয়।
এ বিষয়ে উপজেলা যুবদলের সদস্য কালাম শেখ বলেন, ‘আহাদ একজন চিহ্নিত চোর এবং মাদক সেবনকারী। বিভিন্ন এলাকায় সে চুরি করে। চিতারবাজারে একবার মোবাইলের দোকানে চুরি করে ধরা পড়ে। চিতারবাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শাকিল মোল্যা বেদম মার দেয় তাকে। তারপরও সে চুরি ছাড়েনি। এক সপ্তাহে এলাকার তিন জায়গায় চুরি করেছে। তারপর এলাকার লোকজন তাকে মারধর করে। পরে আমরা উদ্ধার করে আহাদকে পুলিশে দেই।’
উপজেলা যুবদল নেতা রবিউল ইসলাম বলেন, ‘আহাদ একজন চোর। মিলের করা তিনটি মামলার আসামি সে। চুরি করার কারণেই তাকে এলাকার লোকজন ধরে এনে তাকে মারধর করে। খবর পেয়ে আমি তাকে উদ্ধার করে মোটরসাইকেলে করে থানায় দিয়ে আসি। আমি উদ্ধার না করলে যেকোনো দুর্ঘটনা ঘটতে পারতো। পরে আহাদের অভিভাবকদের অনুরোধে ভালো হওয়ার শর্তে থানা থেকে সে ছাড়া পায়।’
আহাদ সিকদার চুরি করার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, আমি একজন ইজিবাইকচালক। কালাম আর রবিউলের লোকজন আমাকে ধরে নিয়ে আড়ার সঙ্গে দুই পা বেঁধে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে পিটিয়ে চুরির স্বীকারোক্তি আদায় করেন। লোহার রড, হকি ও কাঠ, হাতুড়ি দিয়ে মারধর করে। কালামদের সঙ্গে দল না করায় তারা আমাকে ধরে নিয়ে অমানবিকভাবে মারে। পরে থানায় নিয়ে যায়। আমার অভিভাবক এবং এলাকার বড় ভাই সুমন খন্দকারের চেষ্টায় থানা থেকে ছাড়া পেয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি আসি। আমার দুটি মোবাইল এবং মানিব্যাগ ওদের কাছে আছে।’
বোয়ালমারী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘এলাকাবাসী কোনো মামলা না করায় আহাদকে আদালতে চালান করা হয়েছিল। আদালত থেকে তিনি জামিনে ছাড়া পেয়ে যায়। তাকে মারপিট করার বিষয়টি আমাদের কেউ বলেনি।’