ঢাকা: পাথর লুটের ঘটনায় ইসলামী আন্দোলনের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি মুহাম্মদ ফয়জুল করীমকে বিতর্কিত করার চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির মুখপাত্র ও যুগ্মমহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান।
বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে তিনি অভিযোগ করেন।
গাজী আতাউর রহমান বলেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রধান রাহবার, ইসলামী আন্দোলনের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীমকে বিতর্কিত করার একটি সম্মিলিত প্রচেষ্টা চলছে। সিলেটের ভোলাগঞ্জ থেকে পাথর চুরি করল বিএনপির স্থানীয় নেতারা। কিন্তু একটি নীতিগত অবস্থান ব্যক্ত করায় মুফতি ফয়জুল করীমকে লক্ষ্য করে সমালোচনার বৃত্ত তৈরি করা হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘‘প্রায় বছরখানেক আগে মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম এক মতবিনিময় সভায় ভোলাগঞ্জের পাথর নিয়ে কথা বলেছেন। সেখানে তিনি স্পষ্ট করে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে পাথর উত্তোলনের অনুমতি প্রদানের আহ্বান জানিয়েছেন এবং পরিবেশ রক্ষার কথা বলেছেন। পাথর একটি অর্থকরী প্রাকৃতিক সম্পদ হওয়ায় তার ‘নিয়ন্ত্রিত উত্তোলন’ হতে হবে। অনিয়ন্ত্রিত উত্তোলনের মাধ্যমে পরিবেশ ধ্বংস করা যাবে না আবার উত্তোলন বন্ধ করে স্থানীয় মানুষের কর্মসংস্থান নষ্ট্ করা যাবে না।’’
গাজী আতাউর রহমান বলেন, ‘বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার স্থানীয় মানুষের রুটি-রুজির বিষয়টি বিবেচনা না করে পাথর উত্তোলন পুরোপুরি বন্ধ করে দেয়। যার আর্থ-সামাজিক ও প্রাকৃতিক বিরুপ প্রতিক্রিয়া হয়েছিল। সেই বিবেচনায় শায়খে চরমোনাই সরকারের কাছে একটি নীতিমালাল ভিত্তিতে পাথর উত্তোলনের জন্য অনুমতি প্রদানের দাবি জানিয়েছেন। একইসঙ্গে স্পষ্ট করে পরিবেশ রক্ষার তাগিদও করেছেন। তার এই অবস্থান নীতিগতভাবে এবং আইনগতভাবে সম্পূর্ণ বৈধ; শুধু তাই নয় বরং জরুরি। তার এই যথার্থ বক্তব্যকে কাটছাট করে উদ্দেশ্য প্রণোদিত অপপ্রচার করা রাজনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত এবং প্রকৃত অপরাধীকে আড়াল করার অপচেষ্টা।’
তিনি বলেন, ‘অনুমতি দিয়ে সরকারের নজরদারীর মধ্যে পাথর উত্তোলন করতে দিলে পরিবেশের এই বিপর্যয় হতো না। স্থানীয় মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাও হতো। কিন্তু তা না করে একদল দখলবাজ অসৎ রাজনীতিবিদদের পাথর লুট করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। পাথর এমন কোনো জিনিস না যা চোখের অন্তরালে সরিয়ে ফেলা যায়। বরং প্রকাশ্যেই পাথর লুট করা হয়েছে। প্রশাসন সময় মতো ব্যবস্থা না নিয়ে পাথর লুট করার সুযোগ দিয়েছে। পাথর লুট করার এই দায় একান্তভাবেই প্রশাসনের। তারা পাথর উত্তোলন নিয়ে কোনো নীতি গ্রহণ করে নাই। যখন পাথর লুট হচ্ছে তখন কোনো ব্যবস্থা নেয় নাই। এখন বিষয়টি নিয়ে রাজনীতি করছে।’
গাজী আতাউর রহমান বলেন, ‘ইসলামী আন্দোলন সকল ধরনের অপপ্রচারের বিরুদ্ধে তার অবস্থান ঘোষণা করছে এবং সিলেটের ভোলাগঞ্জ, জাফলংসহ যেখানে যেখানে পাথর পাওয়া যায় সেখান থেকে পাথর উত্তোলন করা না করার বিষয়ে বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে পরিবেশ ও স্থানীয় মানুষের কর্মসংস্থানের বিষয়টি বিবেচনা করে বাস্তবভিত্তিক নীতি প্রণয়ন করার আহ্বান জানাচ্ছে। একইসঙ্গে পাথর লুটের সঙ্গে জড়িতদের শাস্তির আওতায় আনার আহ্বান জানাচ্ছে।’