Friday 11 Jul 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

খুলনার মডেলে হয়েছে গাজীপুর নির্বাচন: সুজন


৫ জুলাই ২০১৮ ১৪:২৯ | আপডেট: ৫ জুলাই ২০১৮ ১৪:৩৭
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

।।স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট।।

ঢাকা: ‘খুলনার নতুন মডেলে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন হয়েছে। এই দুই সিটি নির্বাচনে বহু অনিয়ম, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কর্তৃক হয়রানি ও বাড়াবাড়ির ভূমিকা থাকলেও নির্বাচন কমিশন (ইসি) ছিল নির্বিকার। গাজীপুর সিটি নির্বাচনে পুলিশ অনেক ক্ষেত্রে ইসি ও আদালতের নির্দেশনা অমান্য করে বিএনপির নেতাকর্মীদের গ্রেফতার, হয়রানি ও ভয়ভীতি দেখায়। কিন্তু ইসি তাদের বিরুদ্ধে কঠোর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।’

বৃহস্পতিবার (৫ জুলাই) সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ)‘র সাগর রুনি মিলনায়তনে সুজন-সুশাসনের জন্য নাগরিক এর এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার এসব কথা বলেন।

বিজ্ঞাপন

‘গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে কেমন জনপ্রতিনিধি পেলাম’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন সুজন সভাপতি এম হাফিজ উদ্দিন খান। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকার।

সুজন সাধারণ সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, গাজীপুরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীবাহিনীর পক্ষ থেকে প্রতিপক্ষের নেতাকর্মীদের হয়রানি ও গ্রেফতারের অভিযোগ করা হলেও নির্বাচনের মাত্র একদিন আগে গত ২৪ জুন ইসি এ বিষয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে। যা রোগী মারা যাবার পর ডাক্তার হাজির করার মতো অবস্থার সৃষ্টি করেছিল। ইসি এই প্রজ্ঞাপন জারি করলেও পুলিশ তা অমান্য করে ধরপাকড় অব্যাহত রাখে। গাজীপুরের এসপির বিরুদ্ধে বারবার অভিযোগ তোলা হলেও নির্বাচন কমিশন থেকে কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।

তিনি বলেন, আমরা আশা করবো আগামী ৩০ জুলাই অনুষ্ঠিত সিলেট, রাজশাহী ও বরিশাল এই তিন সিটি নির্বাচনের আগে ২৪ জুনের মত ইসি আরেকটি প্রজ্ঞাপন জারি করবে না। যাতে প্রধান প্রতিপক্ষকে পুলিশ হয়রানি না করতে পারে। তবে, গাজীপুরের মত প্রজ্ঞাপন জারি করলেই হবে না। তা বাস্তবায়নে ইসিকে পদক্ষেপ নিতে হবে।

সুজন সভাপতি এম হাফিজ উদ্দিন খান এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করতে নির্বাচন কমিশনের আইন অনুযায়ী যে ধরণের পদক্ষেপ নেয়ার কথা ছিল ইসি তা নেয়নি। ভবিষ্যতে তিন সিটি নির্বাচনসহ জাতীয় নির্বাচনে তা নেবে কিনা আমরা সন্দিহান। তারপরেও আমরা আশা করবো ইসি আইন অনুযায়ী তার ভূমিকা পালন করবে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, খুলনার মতো গাজীপুর সিটি নির্বাচনেও আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর সহায়তায় প্রধান প্রতিপক্ষকে মাঠ ছাড়া করা হয়েছে। আদালত কর্তৃক নির্বাচন স্থগিত করার দিন (গত ৬ মে) একটি লেগুনা ভাংচুর করার অভিযোগে বিএনপির প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকারের বাড়ির আশপাশ থেকে দলটির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমানসহ ১৩ জনকে আটক করা হয়। ৬ ঘন্টা পর নোমানকে ছেড়ে দেয়া হলেও বাকি ১২ জনসহ ১০৩ জনের বিরুদ্ধে নাম উল্লেখ করে টঙ্গী থানায় ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে পুলিশ মামলা করে। এই মামলায় আসামীদের মধ্যে ৪৮ জন ছিল বিএনপি প্রার্থীর নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য। অথচ টঙ্গী থানায় ওই লেগুনাটিকে অক্ষত অবস্থায় পাওয়া গেছে।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গাজীপুর সিটি নির্বাচনে পুলিশ বিএনপি প্রার্থীর এজেন্টদের দায়িত্ব পালনে বাধা দেওয়াসহ বিভিন্নভাবে হয়রানি করা হয়। নির্বাচনের দিন পুলিশ ও ক্ষমতাসীন দলের সদস্যরা ভোট কেন্দ্র ও তার আশেপাশের এলাকায় ভীতিকর পরিবেশ তৈরি করে সাধারণ ভোটারদের ভোট দিতে বাধা দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে ইসির দৃশ্যমান কোন পদক্ষেপ চোখে পড়েনি।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গাজীপুর সিটি নির্বাচনে নব নির্বাচিত ৫২ জন সাধারণ কাউন্সিলের মধ্যে ২৪ জনের বিরুদ্ধে বর্তমানে ফৌজদারি মামলা রয়েছে। শতাংশের হিসাবে এর পরিমাণ ৪৬ দশমিক ১৫ শতাংশ। আবার ১৮ জন সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলরের মধ্যে একজনের বিরুদ্ধে অতীতে ফৌজদারী মামলা ছিল।

অন্যদিকে, নির্বাচিত ৫২ জন সাধারণ কাউন্সিলরের মধ্যে ৪৩ জনই ব্যবসায়ী। শতাংশের হিসাবে এর পরিমাণ ৮২ দশমিক ৮৯ শতাংশ। সংরক্ষিত ওয়ার্ডের (নারী) কাউন্সিলরসহ ৭১ জন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির মধ্যে ৪৭ জনই ব্যবসায়ী। নির্বাচিত মোট কাউন্সিলরদের মধ্যে ৩৯ জনের শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসি বা তার নীচে। স্নাতক বা স্নাতকোত্তর ডিগ্রীধারীর সংখ্যা ১৯ জন।

সারাবাংলা/জিএস/জেএএম

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর