Thursday 16 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

কারাগারে বসেই পরিকল্পনা, বেরিয়ে সংঘবদ্ধ ছিনতাই


৫ জুলাই ২০১৮ ১৪:২৯ | আপডেট: ৫ জুলাই ২০১৮ ১৪:৩১

|| সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ||

ঢাকা: সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী চক্রের সদস্যরা একে অপরের সঙ্গে কারাগারে বসেই ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করে। এরপর জামিনে মুক্তি পেয়ে সংঘবদ্ধ চক্রের সদস্য হিসেবে ছিনতাইয়ে নামে তারা। মূলত ব্যাংক, বিকাশ পয়েন্ট ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সামনে দাঁড়িয়ে থেকে মানুষকে অনুসরণ করাই ছিল এদের প্রথম কাজ। সম্প্রতি র‌্যাবের হাতে গ্রেফতার হওয়া ৭ ছিনতাইকারী এমন বেশ কয়েকটি ধাপে কাজ করত বলে জানা গেছে।

বিজ্ঞাপন

এরা হল- সাগর বারুই, মো. রুবেল, বাবুল ওরফে বাবু, আনোয়ার হোসেন-১, স্বপন মাহমুদ ইউসুফ আলী ও আনোয়ার হোসেন-২।

বৃহস্পতিবার (৫ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টায় র‌্যাবের কারওয়ান বাজার মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব-১ এর কোম্পানি কমান্ডার মেজর রাকিবুজ্জামান রাকিব সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।

মেজর রাকিব বলেন, গত ১৩ মে গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তা ইউসিবি ব্যাংকের নীচে রবি ও বিকাশ এজেন্টের ১৫ লাখ টাকা জমা দিতে গিয়ে ছিনতাইয়ের শিকার হন আসাদুজ্জামান আসাদ, ইকবাল হোসেন ও সুমন মল্লিক নামে তিন ব্যক্তি। তারা তিনজনই জমাদ্দার এন্টারপ্রাইজ নামের এক প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলেন। তারা টাকা নিয়ে ব্যাংকের নীচে গেলে কয়েকজন ছিনতাইকারী দুটি মোটরসাইকেলে করে এসে ফাঁকা গুলি ছুড়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। এরপর তারা টাকার ব্যাগটি ছিনিয়ে নিয়ে চলে যেতে থাকে। এসময় আসাদ তাদের বাধা দিলে বাবু নামে এক ছিনতাইকারী আসাদ ও ইকবালকে গুলি করে পালিয়ে যায়।

র‌্যাব কর্মকর্তা রাকিবুজ্জামান আরও বলেন, ছিনতাইকারীদের বেশিরভাগই একাধিক মামলায় কারাগারে ছিল। সেখানে বসেই তারা পরিকল্পনা করে এবং বেরিয়ে এসে ছিনতাই শুরু করে।

বিজ্ঞাপন

সাগর বারুই হচ্ছে ছিনতাইকারী দলের মুল হোতা। তার নেতৃত্বেই ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জসহ আশপাশের এলাকায় ছিনতাই করে এরা। সাগর হাইকোর্টের একজন মুহুরি। ২০০০ সাল থেকেই সে এই পেশায় জড়িত। ২০১৩ সালে এসে বেনজামিন ও আনোয়ার নামে দুইজনের সঙ্গে পরিচয় হয় তার। তবে ২০১৭ সালে আনোয়ার আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে মারা গেলে নেতৃত্বে আসে সাগর। এরপর সাগরের মাধ্যমেই বাকীরা এ পেশায় আসে।

রুবেল একজন দর্জি। সে ২০ বছর আগে ঢাকায় আসে। ছিনতাই পেশায় নাম লেখানোর পর রুবেল অস্ত্র সরবরাহের কাজ শুরু করে। অস্ত্র সরবরাহ করে ছিনতাই করলে ভাগে বেশি টাকা পেত রুবেল।

বাবুল পেশায় একজন সেলসম্যান। নিউমার্কেট এলাকার চাঁদনী চক মার্কেটের একটি দোকানে কাজ করে সে। সেখানেই রুবেলের সঙ্গে পরিচয় হয়। রুবেল তাকে ছিনতাই পেশায় নিয়ে আসে। বাবুল এর আগে ছিনতাই মামলায় ১৭ মাস কারাভোগ করেছে।

আনোয়ার হোসেন-১ পেশায় একজন গাড়ি চালক। ২০০৫ সালে সে ঢাকায় আসে। সে একজন মাদকাসক্ত ও মাদক বিক্রেতা। মাদক মামলায় কারাগারে গিয়ে সাগরের সঙ্গে পরিচয় হয় এবং কারাগার থেকে বেরিয়ে ছিনতাইয়ের কাজ শুরু করে।

স্বপন মাহমুদ পেশায় একজন জমির দালাল। ১৯৮৮ সালে সে ঢাকায় আসে। ১৯৯২ সালের দিকে সৌদি যায় এবং প্রতারণার শিকার হয়ে ৪ মাস পর দেশে ফেরে সে। ২০১৬ সালে সাগর বাবু ও রুবেলের সঙ্গে পরিচয়ের মাধ্যমে ছিনতাইয়ে নাম লেখায়। টার্গেটকারী হিসেবে পরিচিত স্বপন।

ইউসুফ আলী পেশায় একজন পোশাক কর্মী। ২০০৮ সালে ঢাকায় এসে পোশাক কারখানায় চাকরি নেয়। কাজের সুত্র ধরে ২০১৭ সালে আশুলিয়ায় বন্দুকযুদ্ধে নিহত আনোয়ারের সঙ্গে পরিচয় হয়। অধিক অর্থের লোভে সেও এই পেশায় নাম লেখায়।

আনোয়ার হোসেন-২ একজন পোশাক কর্মী হিসেবে পরিচিত। চাকরির সূত্র ধরেই ইউসুফের সঙ্গে পরিচয় হয়। তার মাধ্যমেই আনোয়ার-১ ও সাগরের সঙ্গে পরিচয় হয়। তাদের মাধ্যমেই ছিনতাই চক্রে যোগ দেয় সে।

র‌্যাবের এই কর্মকর্তা সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এদের মধ্যে কেউ তথ্য সংগ্রহ, কেউ টার্গেট, আবার কেউ ফলো করতো। চূড়ান্ত পর্যায়ে এসে তারা একত্রিত হয়ে ছিনতাই শুরু করে। তাদেরকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে আদালতে পাঠানো হবে বলেও জানানো হয়েছে।

সারাবাংলা/ইউজে/এএস

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর