Monday 18 Aug 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

নিট লোকসান ৫ হাজার ৯৯০ কোটি টাকা
৫০ রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান: মুনাফায় ৩৮টি, লোকসানে ১২

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১৬ আগস্ট ২০২৫ ১৬:০৪ | আপডেট: ১৬ আগস্ট ২০২৫ ২০:০০

ঢাকা: রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর মুনাফার চেয়ে লোকসানের পাল্লা ভারি। অন্যদিকে লোকসানী প্রতিষ্ঠানগুলো শুধু লোকসান-ই দিচ্ছে না, এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক আবার বড় অঙ্কের ঋণগ্রস্ত। কোনো কোনোটির ঋণের গ্যারান্টার সরকার।

অর্থ বিভাগ-এর মনিটরিং সেল-এর তথ্যমতে, গত ২০২৩-২৪ অর্থবছর শেষে লাভ-লোকসান মিলিয়ে ৫০টি রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানের নীট লোকসান দাঁড়িয়েছে প্রায় ৫ হাজার ৯৯০ কোটি টাকা। এর মধ্যে মুনাফা অর্জনকারী প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা হচ্ছে ৩৮টি, আর লোকসান দিয়েছে মাত্র ১২টি। ৩৮টি প্রতিষ্ঠানের নীট মুনাফা হচ্ছে ১৩ হাজার ৪০৪ কোটি টাকা। এর বিপরীতে ১২টি প্রতিষ্ঠানের নীট লোকসানের পরিমাণ হচ্ছে ১৯ হাজার ৩৯৫ কোটি ৫১ লাখ টাকা।

বিজ্ঞাপন

বাজেট উপাত্ত পর্যালোচনায় দেখা যায়, লোকসান দেয়া ১২টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১১টি প্রতিষ্ঠান-ই এর আগের অর্থবছর অর্থাৎ ২০২২-২৩ অর্থবছরেও লোকসান দিয়েছিল। ওই অর্থবছরে প্রতিষ্ঠানগুলোর নীট লোকসানের পরিমাণ ছিল ১৫ হাজার ৭২০ কোটি ৫২ লাখ টাকা। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে লোকসানী ১১টি প্রতিষ্ঠানের মোট নীট লোকসান বেড়েছে ৩ হাজার ৬৭৪ কোটি ৭৭ লাখ টাকা।

অর্থ বিভাগ-এর হিসাব মতে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে লোকসানী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে শীর্ষে রয়েছে- বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি)। প্রতিষ্ঠানটির নীট লোকসানের পরিমাণ হচ্ছে ৬ হাজার ১১৮ কোটি টাকা। এর বাইরে ডিএসএল অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানটির কাছে সরকারের সুদ ব্যতীত পাওনার পরিমাণ হচ্ছে প্রায় ৩৪ হাজার ৪৯৮ কোটি টাকা। এছাড়া ব্যাংক ঋণও রয়েছে প্রায় ১ হাজার ১৮৭ কোটি টাকা।

লোকসানে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে- ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)। প্রতিষ্ঠানটির নীট লোকসানের পরিমাণ হচ্ছে ৬ হাজার ৩৩ কোটি ৬১ লাখ টাকা (২০২২-২৩ অর্থবছরে লোকসানের পরিমাণ ছিল ১ হাজার ১৩৯ কোটি ৬৮ লাখ টাকা)। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে টিসিবি’র লোকসান প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা বেড়েছে। এছাড়া প্রতিষ্ঠানটির ব্যাংক ঋণ রয়েছে ৪ হাজার ১৬০ কোটি টাকা এবং টিসিবি’র অনুকূলে সরকারের ব্যাংক গ্যারান্টি রয়েছে ৪ হাজার ৮৯৬ কোটি ৩২ লাখ টাকা।

লোকসানে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে- বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (বিআরইবি)। প্রতিষ্ঠানটির নীট লোকসানের পরিমাণ হচ্ছে ৪ হাজার ৪৯৯ কোটি ৪৪ লাখ টাকা (২০২২-২৩ অর্থবছরে লোকসানের পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৫০৪ কোটি ৫৯ লাখ টাকা)। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে বিআরইবি’র লোকসান প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা বেড়েছে। এছাড়া ডিএসএল অনুযায়ী, সরকারের কাছে প্রতিষ্ঠানটির সুদ ব্যতীত দেনার পরিমাণ হচ্ছে ২ হাজার ৯১ কোটি ৬৯ লাখ টাকা।

লোকসানে চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে- বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশন (বিসিআইসি)। প্রতিষ্ঠানটির নীট লোকসানের পরিমাণ হচ্ছে ১ হাজার ৫০৯ কোটি ৪৪ লাখ টাকা (২০২২-২৩ অর্থবছরে লোকসানের পরিমাণ ছিল ৮৭৫ কোটি ৮ লাখ টাকা)। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে বিসিআইসি’র লোকসান প্রায় ৬২৫ কোটি টাকা বেড়েছে। এছাড়া প্রতিষ্ঠানটির ব্যাংক ঋণের পরিমাণ হচ্ছে ৭ হাজার ৬৫০ কোটি ৩২ লাখ টাকা এবং ডিএসএল অনুযায়ী, সরকারের কাছে প্রতিষ্ঠানটির সুদ ব্যতীত দেনার পরিমাণ হচ্ছে প্রায় ৬ হাজার ১৫৯ কোটি টাকা।

লোকসানে পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে- বিএসএফআইসি। প্রতিষ্ঠানটির নীট লোকসানের পরিমাণ হচ্ছে ৫৭১ কোটি ৫৮ লাখ টাকা (২০২২-২৩ অর্থবছরে লোকসানের পরিমাণ ছিল ৫৩২ কোটি ৯৯ লাখ টাকা)। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে বিসিআইসি’র লোকসান প্রায় ৩৮ কোটি টাকা বেড়েছে। এছাড়া প্রতিষ্ঠানটির পুঞ্জিভূত ব্যাংক ঋণের পরিমাণ হচ্ছে প্রায় ৮ হাজার ২৬৪ কোটি টাকা এবং ডিএসএল অনুযায়ী, সরকারের কাছে প্রতিষ্ঠানটির সুদ ব্যতীত দেনার পরিমাণ ১৮৬ কোটি ৩১ লাখ টাকা।

অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে বিজেএমসি’র লোকসান ২২৫ কোটি ৭২ লাখ টাকা (ব্যাংক ঋণ প্রায় ৬৮৪ কোটি টাকা ও ডিএসএল সুদ ব্যতীত ২ হাজার ৯৬০ কোটি টাকা); বিআইডব্লিইটিএ’র লোকসান ১২৬ কোটি ৩২ লাখ টাকা (ডিএসএল সুদ ব্যতীত ৩৫৯ কোটি ৬১ লাখ টাকা); বিআরটিসি’র লোকসান ১১৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা (ডিএসএল সুদ ব্যতীত ৫৭৮ কোটি ৪১ লাখ টাকা)।

অন্যদিকে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে নীট মুনাফা অর্জনকারী শীর্ষ প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে- বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (মুনাফার পরিমাণ ৪ হাজার ৮৭৫ কোটি ৪০ লাখ টাকা); বিটিআরসি (মুনাফার পরিমাণ ৩ হাজার ১৬৩ কোটি ১৭ লাখ টাকা); সিপিএ (১ হাজার ৮৮১ কোটি ৩১ লাখ টাকা)।

সারাবাংলা/আরএস

৫০ রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান মুনাফায় ৩৮টি লোকসানে ১২টি