Sunday 17 Aug 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বাংলাদেশের সংবিধান মানলে অসাম্প্রদায়িক হতে হবে: আমীর খসরু

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১৬ আগস্ট ২০২৫ ২০:৪৮ | আপডেট: ১৬ আগস্ট ২০২৫ ২৩:১৪

জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদের ধর্ম মহাসম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

চট্টগ্রাম ব্যুরো: বাংলাদেশের সংবিধান মানলে অবশ্যই অসাম্প্রদায়িক হতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

শনিবার (১৬ আগস্ট) নগরীর যাত্রামোহন (জেএম) সেন হলে কেন্দ্রীয় জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদের ধর্ম মহাসম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আমাকে অসাম্প্রদায়িক বলে পরিচয় করে দেওয়া হয়। এটা আমার একেবারেই অপছন্দ। অসাম্প্রদায়িক এটা বলতে হবে কেন? বাংলাদেশের সংবিধানে অসাম্প্রদায়িক চেতনার কথা পুরোপুরি বলা আছে।’

তিনি বলেন, ‘সুতরাং বাংলাদেশের সংবিধান মানলে অবশ্যই অসাম্প্রদায়িক হতে হবে। আর যারা সাম্প্রদায়িক, তারা তো বাংলাদেশের সংবিধানের বিরুদ্ধের শক্তি, তারা বাংলাদেশের সংবিধানের বিরুদ্ধে কাজ করছে।’

বিজ্ঞাপন

সংখ্যালঘু শব্দ নিয়েও আপত্তি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আরেকটা হচ্ছে সংখ্যালঘু শব্দটা, এটা আমি বিশ্বাস করি না। সাম্প্রদায়িক শব্দটা যে কারণে ব্যবহার হয়, সংখ্যালঘু শব্দটাও একই কারণে ব্যবহার হয়। যেদেশের সংবিধান সবাইকে সমান অধিকার দিয়েছে, সমান নাগরিক অধিকার দিয়েছে, সমান গণতান্ত্রিক অধিকার দিয়েছে, সমান রাজনৈতিক অধিকার দিয়েছে, তাহলে সেখানে আমাকে কেন সংখ্যালঘু শব্দটা ব্যবহার করতে হচ্ছে?’

তিনি বলেন, ‘অসাম্প্রদায়িক কিংবা সংখ্যালঘু- শব্দগুলো যখন বলা হচ্ছে, তাহলে নিশ্চয়ই কোথাও গলদ আছে। আমাদের সমাজব্যবস্থায়, রাষ্ট্রব্যবস্থায়, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় এই গলদ থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।’

আমীর খসরু বলেন, ‘আমরা সবাই একই রাষ্ট্রের মধ্যে আছি। আমাদের দেশ বাংলাদেশ। আমরা সবাই বাংলাদেশি। সামগ্রিকভাবে আমরা একটা জাতি, একটা দেশ, একটা সমাজ। আমাদের সবার অধিকার নিশ্চিত করা যে কোনো সরকারের দায়িত্ব।’

তিনি আরও বলেন, ‘যারা সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করে, তারা বারবার ধ্বংস হয়েছে। কিন্তু আবার তারা, বারবার নতুনভাবে শুরু করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু এ দেশের সাধারণ মানুষ সাম্প্রদায়িকতাকে মনেপ্রাণে ঘৃণা করে।’

গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আজকের বাংলাদেশে আমরা যেখানে দাঁড়িয়ে আছি, সেখানে নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করছে সবাই। মানুষের মধ্যে অনেক দাবি সৃষ্টি হয়েছে, অনেক প্রত্যাশা জাগ্রত হয়েছে। যদি নতুন বাংলাদেশ গড়তে হয়, তবে কোনো বিভাজন করা যাবে না। দেশে সবার ধর্ম থাকবে, সংস্কৃতি থাকবে। সবাই তাদের নিজ নিজ ধর্মীয় উৎসব পালন করবে। এটার সঙ্গে গণতন্ত্রের কোনো সংঘর্ষ থাকতে পারে না, সংবিধানের সঙ্গে সংঘর্ষ থাকতে পারে না।’

‘জাতি হিসেবে, মানুষ হিসেবে, রাজনীতিবিদ হিসেবে আমাদের সহনশীল হতে হবে। ধর্ম যেমন মানুষের ভিন্ন ভিন্ন হয়, রাজনৈতিক মতভেদও ভিন্ন ভিন্ন হবে। কিন্তু দেশের স্বার্থে, জনগণের স্বার্থে সবাইকে এক হতে হবে।’

জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সম্পাদক রুপলাল দাশের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মঙ্গলপ্রদীপ প্রজ্বলন করেন বাঁশখালী ঋষিধামের মোহন্ত সচিদানন্দ পুরি।

অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির কার্যকরী সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব দে পার্থ, নগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর, পাচুরিয়া তপোবন আশ্রমের অধ্যক্ষ রবীশ্বরানন্দ পুরী, ভোলানন্দ গিরি মন্দিরের অধ্যক্ষ উমেশানন্দ গিরি ও রাজীব ধর তমাল।

সারাবাংলা/আরডি/এইচআই

অসাম্প্রদায়িক আমীর খসরু জন্মাষ্টমী উদযাপন বিএনপি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর