ঢাকা: প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, বঙ্গোপসাগরে জরিপ চালিয়ে মৎস্য আহরণের সঠিক কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে। এজন্য আমাদের গবেষণার পরিমাণ বাড়াতে হবে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদের বিপুল সম্ভাবনা আছে। কিন্তু আমরা তা এখনো পুরোপুরি আহরণ করতে পারিনি। আমাদের এ ব্যাপারে উদ্যোগী হতে হবে। সামুদ্রিক মৎস্যের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। মাছের সম্ভাবনা প্রচুর, আবার দুর্ভাবনাও প্রচুর।’
সোমবার (১৮ আগস্ট) বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে মৎস্য সপ্তাহের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘চাষের মাছের গুরুত্ব অনেক বেড়েছে। অনেক তরুণ উদ্যোক্তা মৎস্য চাষে এগিয়ে আসছে। বর্তমানে আমিষের চাহিদা মেটানোর ক্ষেত্রে চাষের মাছের অবদান অনেক বেশি। কিন্তু ইলিশ মাছ দেশের মানুষকে সাশ্রয়ী মূল্যে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। ঠিক সময়ের নিষেধাজ্ঞা মানলে মাছের প্রাপ্তি বাড়বে।’
তিনি বলেন, ‘মাছ আমাদের জন্য প্রকৃতির একটি উপহার। এটি আল্লাহর দান। প্রকৃতির প্রতি আমরা অত্যন্ত নির্মম না হয়ে এর প্রতি সদয় হওয়ার চিন্তা আমাদের মাথায়ও আসে না। আজকের এই দিনে আমরা উদযাপন করব কিন্তু প্রকৃতির প্রতি সদয় হওয়ার কথাও আমাদের চিন্তা করতে হবে। আমরা এত নির্দয় হচ্ছি, অন্যান্য অনেক জিনিসের মতো মাছও বোধহয় আমাদের কপাল থেকে চলে যাবে। সব বর্জ্য আমরা পানির দিকে দিয়ে দিচ্ছি। আমরা নদী শাসনের কথা বলি। নদী পালনের কথা কেউ বলে না। এতে আরও ক্ষতি হচ্ছে।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘মৎস্য শিল্প নিয়ে দেশে একটা ইন্ড্রাস্টি গড়ে তুলতে হবে। এর জন্য বিশ্বমানের বিশেষজ্ঞদের গবেষণা কাজে লাগাতে হবে। এই সম্পদ মানুষের কল্যাণে ব্যবহার করতে বন্ধু দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে। এ ছাড়া সমুদ্র উপকুলীয় অঞ্চল রক্ষায় আলোচনা শুরু হয়েছে। অপরিকল্পিতভাবে অবকাঠামো নির্মাণ, পরিবেশ ধ্বংসের কারণে বাংলাদেশের মতো দেশে সুস্বাস্থ্য নিয়ে থাকা কঠিন হয়ে যাচ্ছে।’
অবৈধ জাল ব্যবহার করে মৎস্য আহরণ খুব উদ্বেগের বিষয় উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘নদীতে সব ধরনের বর্জ্য ফেলে পানিকেও নষ্ট করছি আমরা। জলাশয় দূষণ ও ফসল উৎপাদনে নিষিদ্ধ কীটনাশকের ব্যবহার করছি। এ ছাড়া জলবায়ু পরিবর্তনের ফলেও মৎস্য উৎপাদনে বিরূপ প্রভাব পড়ছে। এর থেকে বেরিয়ে আসতে হলে টেকসই পদ্ধতি আবিষ্কার করতে হবে। অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি মাছের রফতানি বৃদ্ধিতে উদ্যোগ নিতে হবে।’
অনুষ্ঠানে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উপলক্ষ্যে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ৯ জনকে স্বর্ণ পদক, ৫ জনকে রৌপ্য পদক এবং ২ জনকে ব্রোঞ্জ পদক দেওয়া হয়।