Monday 18 Aug 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সমকামিতা নিয়ে কথা কাটাকাটির জেরে বন্ধুর হাতে বন্ধু খুন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
১৮ আগস্ট ২০২৫ ১৮:৩৮ | আপডেট: ১৮ আগস্ট ২০২৫ ২০:০৮

বন্ধুকে হত্যার ঘটনায় আটক জহুরুল মুন্সী ওরফে সুলতান জহির। ছবি: সংগৃহীত

ফরিদপুর: জেলার ভাঙ্গা উপজেলার তুজারপুরের চাড়ালদিয়া বিল থেকে এক যুবকের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধারের পর মূল আসামি গ্রেফতারের পর হত্যার রহস্য উদঘাটন হয়েছে। সমকামিতার ঘটনা নিয়ে কথা কাটাকাটির জেরে বন্ধু রেদোয়ানকে হত্যা করে বিলের পানিতে গুম করে রাখে অপর বন্ধু জহুরুল। নিখোঁজের চারদিনের মাথায় বিল থেকে মরদেহ উদ্ধারের পর ঘাতক জহুরুলকে আটক করেছে র‌্যাব ১০।

সোমবার (১৮ আগস্ট) র‌্যাবের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেন র‍্যাব ১০-এর কেরানীগঞ্জের অধিনায়ক এডিশনাল ডিআইজি মোহাম্মদ কামরুজ্জামান। নিহত কলেজছাত্র শেখ রেদোয়ান (২৫) জেলার সদরপুর উপজেলার ২২ রশি গ্রামের প্রবাসী শেখ আবুবক্কার সোহেলের ছেলে। তিনি গাজীপুরের বেসরকারি একটি কলেজে বিএসসির শিক্ষার্থী ছিলেন। আর আসামি জহুরুল মুন্সী ওরফে সুলতান জহির ভাঙ্গা উপজেলার চাড়ালদিয়া গ্রামের লুকমান মুন্সীর ছেলে।

বিজ্ঞাপন

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত ১৩ আগস্ট বিকেলে বন্ধু জহুরুলের ফোন পেয়ে মোটরসাইকেল নিয়ে সদরপুর থেকে পার্শ্ববর্তী ভাঙ্গা উপজেলার চাড়ালদিয়া গ্রামে এসে নিখোঁজ হয় রেদোয়ান। নিখোঁজ ঘটনায় ১৪ আগস্ট রেদোয়ানের মা রাবেয়া বেগম সদরপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।

এদিকে র‍্যাব সূত্রে জানা যায়, নিখোঁজের চারদিন পর রেদোয়ানের গলা, হাত-পা ও শরীরের বিভিস্থানে কোপানো অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে ভাঙ্গা থানা পুলিশ। পরে র‍্যাব ১০-এর একটি দল তথ্যপ্রযুক্তির সহয়তায় অভিযান চালিয়ে রেদোয়ান হত্যার মূল আসামি জহুরুলকে রোববার রাতে ভাঙ্গা থেকে আটক করে। এ সময় হত্যায় ব্যবহৃত চাকু ও রেদোয়ানের খোয়া যাওয়া মোটরসাইকেলটিও উদ্ধার করা হয়।

ঘাতক জহুরুল র‌্যাবের হাতে আটকের পর বলেন, ‘সমকামিতার ঘটনা নিয়ে দু’জনের কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে রেদোয়ানের গলায় হঠাৎ চাকু দিয়ে আঘাত করি। এতে সে মারা যায়। পরে রাতে তাকে বাড়ির পাশের পুকুরে ডুবিয়ে রাখি। দু’দিন পর যখন রেদোয়ানের লাশ ভেসে ওঠে তখন তাকে বালি ও ইটের বস্তা দিয়ে বেঁধে নৌকা নিয়ে বিলের মধ্যে ডুবিয়ে রাখি। আবার যেন ভেসে না ওঠে সেজন্য চাকু দিয়ে তার শরীরের বিভিন্ন জায়গা ক্ষত-বিক্ষত করি।’

এ ব্যাপারে ভাঙ্গা থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আশরাফ হোসেন জানান, ১৩ আগস্ট বিকেল ৫ টার দিকে রেদোয়ান মোটরসাইকেল নিয়ে সদরপুরের নিজ বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন। ১৭ আগস্ট দুপুরে ভাঙ্গা উপজেলার তুজারপুর ইউনিয়নের চাড়ালদিয়া বিলের মধ্য থেকে অজ্ঞাত পুরুষের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে লাশটি রেদোয়ানের বলে নিশ্চিত করে তার পরিবার।

এ ঘটনায় নিহত রেদোয়ানের মা রাবেয়া বেগম বাদী হয় রোববার রাতে ভাঙ্গা থানায় অজ্ঞাত আসামিদের নামে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। গতকাল রাতে রেদোয়ান হত্যার মূল ঘাতক জহুরুল মুন্সী র‍্যাবের হাতে আটক হয়েছেন। তাকে ভাঙ্গা থানায় হস্তান্তর করা হবে।

এদিকে, শেখ রেদোয়ানের এমন মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় স্থানীয় এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করে হত্যাকারীকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

সারাবাংলা/পিটিএম

বন্ধু খুন বন্ধু হাতে সমকামিতা