ঢাকা: চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম মাসে তথা গত জুলাইয়ে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়নের হার ১ শতাংশেরও কম। আলোচ্য সময়ে এডিপি ব্যয় দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৬৪৫ কোটি টাকা। এটি মোট এডিপি বরাদ্দের শূন্য দশমিক ৬৯ শতাংশ । এর আগের অর্থবছরে জুলাইয়ে ছাত্রজনতার আন্দোলনের কারণে বাস্তবায়ন স্থবির থাকার সময়েও এর চেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় হয়েছিল।
সম্প্রতি পরিকল্পনা কমিশনের পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আএমইডি)-এর হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
প্রসঙ্গত: চলতি অর্থবছরে এডিপি’র আকার ধরা হয়েছে ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা।
তথ্য মতে, সমাপ্ত ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাইয়ে এডিপি ব্যয়ের পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৯২২ কোটি টাকা এবং বাস্তবায়ন হার ছিল ১ দশমিক ০৫ শতাংশ।
আইএমইডি’র প্রতিবেদন অনুযায়ী, সরকারি তহবিল থেকে জুলাইয়ে ব্যয় হয়েছে ৭২৮ কোটি টাকা, এটি বরাদ্দের শূন্য দশমিক ৫১ শতাংশ। অন্যদিকে বৈদেশিক ঋণ ও অনুদান খাতের বরাদ্দ থেকে ব্যয় হয়েছে ৮৩৮ কোটি টাকা, যা বৈদেশিক তহবিলের বরাদ্দের শূন্য দশমিক ৯৭ শতাংশ। এছাড়া সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে ব্যয় হয়েছে ৭৮ কোটি টাকা।
আইএমইডির তথ্য অনুযায়ী, ৫৭টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মধ্যে ১১টি জুলাই মাসে এক টাকাও ব্যয় করতে পারেনি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর মধ্যে রয়েছে- স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়।
তথ্য মতে, জুলাইয়ে ১ শতাংশের বেশি অর্থ ব্যয় করেছে মাত্র ১২টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ। সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করেছে খাদ্য মন্ত্রণালয় (১১.৩০ শতাংশ)।
এছাড়া অন্যান্য মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মধ্যে- বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় (৩.৫৬ শতাংশ), শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় (৩.৫১ শতাংশ), কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ (৩.৪৬ শতাংশ), মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ (১.৪৩ শতাংশ), দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় (১.৪৯ শতাংশ), মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় (১.৩৮ শতাংশ), ভূমি মন্ত্রণালয় (২.০১ শতাংশ), নির্বাচন কমিশন (১.৪৯ শতাংশ), মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ (৭ শতাংশ), অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (২.৭২ শতাংশ) এবং লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ ২.৩৪ শতাংশ অর্থ ব্যয় করেছে।
এডিপি বাস্তবায়ন বিষয়ে গত রোববার (১৭ আগস্ট) এক সংবাদ সম্মেলন পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেছেন, এবার এডিবি বাস্তবায়ন স্বাভাবিক গতিতে হবে- এটা ভাবা হয়েছিল। এবারের আকারও বাস্তবসম্মত হয়েছে। কিন্তু গত জুলাইয়ে এডিপি বাস্তবায়ন হার ১ শতাংশের কম। গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় এটা কম। এটা ভালো লক্ষণ নয়। কারণ গত অর্থবছরের (২০২৪ সালের জুলাই) একই সময় এডিপি বাস্তবায়ন না হওয়ার কারণ ছিল। তখন আন্দোলনের কারণে সবকিছু স্থবির ছিল। কিন্তু, এখন তো এডিপি বাস্তবায়নে গতি আসার কথা।
তিনি বলেন, এখনো শোনা যাচ্ছে অনেক প্রকল্পে ঠিকাদার এখনো যুক্ত হয়নি। আবার প্রকল্প পরিচালকরা স্বেচ্ছায় বদলি হয়ে গেছে। তবে এবার পূর্ণ এডিপি বাস্তবায়ন করা সম্ভব। এ লক্ষ্যে সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে তাগাদা দেওয়া হবে। যাতে সব বরাদ্দ খরচ করতে পারে। এ অর্থবছরে কোনো অজুহাত মানা হবে না।