ঢাকা: প্রশাসন ক্যাডারের পর এবার অন্যান্য ক্যাডারে বঞ্চিত ৭৮ জন সাবেক কর্মকর্তাকে ভূতাপেক্ষ পদোন্নতির সুপারিশ করেছে এ-সংক্রান্ত পর্যালোচনা কমিটি। যাদের পদোন্নতির সুপারিশ করা হয়েছ- তাদের মধ্যে গ্রেড-১ পদে ১২ জন, গ্রেড-২ পদে ৩২ জন এবং গ্রেড-৩ পদে ৩৪ জন কর্মকর্তা আছেন।
বুধবার (২০ আগস্ট) প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দেওয়া প্রতিবেদনে এ সুপারিশ করেন পদোন্নতিবঞ্চিত সাবেক কর্মকর্তাদের আবেদন পর্যালোচনা কমিটির আহ্বায়ক ও সাবেক অর্থসচিব জাকির আহমেদ খান।
বুধবার (২০ আগস্ট) প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে পর্যালোচনা প্রতিবেদন জমা দেন পদোন্নতি ‘বঞ্চিত’ সাবেক কর্মকর্তাদের আবেদন পর্যালোচনা কমিটির আহ্বায়ক ও সাবেক অর্থসচিব জাকির আহমেদ খান। এটি কমিটির দ্বিতীয় প্রতিবেদন। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের আওতায় ২০০৯ সাল থেকে ২০২৪ সালের ৪ আগস্ট পর্যন্ত সময়কালে চাকুরিতে বঞ্চনার শিকার এবং উল্লিখিত সময়কালের মধ্যে অবসরে যাওয়া কর্মকর্তাগণের আবেদন পর্যালোচনাপূর্বক সুপারিশ প্রণয়নের জন্য ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখে জাকির আহমেদ খানকে আহ্বায়ক করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ এবং আইন ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের প্রতিনিধির সমন্বয়ে ৫ সদস্যবিশিষ্ট গঠিত কমিটি দুই ধাপে তার কার্যক্রম সম্পন্ন করেছে।
কমিটি প্রথম ধাপে উপসচিব ও তদূর্ধ্ব পদে বঞ্চনার আবেদনসমূহ পর্যালোচনাপূর্বক ১০ ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখে প্রধান উপদেষ্টার নিকট প্রতিবেদন দাখিল করে।
দ্বিতীয় ধাপে প্রশাসন ক্যাডার ব্যতিরেকে অন্যান্য যেসব ক্যাডারে ৩য় গ্রেড বা তদূর্ধ্ব পদ রয়েছে সেসব ক্যাডারের বঞ্চিত কর্মকর্তাগণের নিকট হতে আবেদন আহবান করা হয়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ৩১৮ টি আবেদন জমা পড়ে। তন্মধ্যে ৬৮ টি আবেদন কমিটির আওতাবহির্ভূত এবং ৪০টি আবেদন তথ্যগতভাবে অসম্পূর্ণ হওয়ায় মোট ১০৮ টি আবেদন বিবেচনা করা সম্ভব হয়নি। ফলে কমিটি কর্তৃক পর্যালোচনাযোগ্য আবেদন ছিল ২১০ টি। এ সকল আবেদন যাচাই-বাছাই করার জন্য কমিটি ১৪ টি সভা করেছে। প্রত্যেক ক্যাডারের আবেদন বিবেচনার সময় কমিটির সভায় সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব পদমর্যাদার প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
প্রশাসনিক মন্ত্রণালয়ের লিখিত সুপারিশ, বৈঠকে উপস্থিত প্রতিনিধির মতামত এবং আনুষঙ্গিক বিষয়াদি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা হয়েছে। পুঙ্খানুপুঙ্খ বিচার-বিশ্লেষণের মাধ্যমে কমিটি সুপারিশ প্রণয়ন করেছে।
পদোন্নতির জন্য সুপারিশকৃত তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, কমিটি ৬ জন কর্মকর্তাকে ৩ ধাপ, ১৭ জন কর্মকর্তাকে ২ ধাপ এবং ৫৫ জন কর্মকর্তাকে ১ ধাপ পদোন্নতির সুপারিশ করেছে। ১৩২ জন কর্মকর্তাকে কমিটি পদোন্নতির সুপারিশ করেনি। তাঁদেরকে কেন পদোন্নতির সুপারিশ করা হয়নি প্রতিটি ক্ষেত্রে তার সুনির্দিষ্ট কারণ উল্লেখ করা হয়েছে। পদোন্নতি বঞ্চিত সাবেক কর্মকর্তাগণের আবেদন পর্যালোচনা কমিটির ২য় পর্যায়ের প্রতিবেদন এদিন প্রধান উপদেষ্টার সমীপে পেশ করে। এসময় প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব সিরাজ উদ্দিন মিয়া উপস্থিত ছিলেন।