নীলফামারী: নীলফামারীর কৃষকরা আউশ ধান চাষ করে লাভবান হচ্ছেন। এই ধান কম সময়ে এবং কম খরচে উৎপাদন করা যায়। এতে কৃষকদের আর্থিক সংকট দূর হচ্ছে, ধানের ফলনও বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরে রাখা, দো-ফসলি জমিকে তিন ফসলিতে রূপান্তর এবং অসময়ে কৃষকের হাতে টাকার জোগান দিতে নীলফামারীতে আউশ ধানের আবাদ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। একইসঙ্গে আউশ আবাদে মিলছে গোখাদ্যের যোগানও।
ডোমার উপজেলার ছোট রাউতা গ্রামের কৃষক আব্দুস সালামের ভূট্টা চাষের পর তার জমি এতোদিন অনাবাদি পড়ে থাকত। তবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অনুপ্রেরণায় তিনি এবার সেই জমিতে আউশ ধানের আবাদ করেছেন। এতে তার দো-ফসলি জমি এখন তিন ফসলি জমিতে রূপান্তরিত হয়েছে।
তিনি বলেন, আমন ধান রোপণে কিছুটা দেরি হলেও আউশ ধান চাষ করে অসময়ে হাতে টাকা আসায় তিনি বেশ লাভবান হবেন। তাই ভবিষ্যতে আউশ ধানের আবাদ অব্যাহত রাখার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন তিনি।
স্থানীয় কৃষকদের ভাষ্য, কৃষি অফিসের পরামর্শে আউশ ধান চাষ করে ফলন ভালো হয়েছে। আউশ ধান আবাদের ফলে তারা এখন বছরে তিনটি ফসল ঘরে তুলতে পারছেন। কৃষি অফিসের সহযোগিতা অব্যাহত থাকলে আবাদ ও উৎপাদন আরও বাড়বে বলে তারা মনে করেন তারা।
কৃষি বিভাগ জানায়, চলতি মৌসুমে জেলায় ১ হাজার ৮৮১ হেক্টর জমিতে আউশ ধানের আবাদ হয়েছে। এতে উৎপাদন হবে সাড়ে পাঁচ হাজার টনেরও বেশি।
ডোমার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম জানান, আমন মৌসুমের আগে কৃষকদের হাতে সাধারণত নগদ টাকা থাকে না। আউশ ধান বিক্রি করে সেই টাকা দিয়ে কৃষকরা সহজেই আমন আবাদে বিনিয়োগ করতে পারেন। যে কারণে আউশ ধানের আবাদকে উৎসাহিত করতে কৃষি বিভাগ মাঠে মাঠে তদারকি করছে।
নীলফামারী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক ড. এসএম আবু বকর সাইফুল ইসলাম জানান, জেলায় দিন দিন ভূট্টার আবাদ বেড়ে যাচ্ছে, অপরদিকে বোরো ধানের আবাদ কমে যাচ্ছে। এ অবস্থায় আউশ ধানের আবাদ ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরে রাখতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।
আউশ ধানে কৃষকের আর্থিক কষ্ট দূর হচ্ছে এবং একই জমিতে বছরে তিনটি ফসল ফলানো সম্ভব হচ্ছে। সব মিলিয়ে, আউশ ধান নীলফামারীর কৃষি ও কৃষকদের জন্য দারুণ এক সুযোগ নিয়ে এসেছে। আগামীতে এই ধানের আবাদ আরও বাড়বে বলে প্রত্যাশা করছেন কৃষি সংশ্লিষ্টরা।