ঢাকা: আন্তর্জাতিক নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান দ্বারা সংকটে পড়া আরও তিনটি ব্যাংকের সম্পদের মান যাচাইয়ের কাজ শুরু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংক তিনটি হচ্ছে- আইএফআইসি ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক ও এবি ব্যাংক। ব্যাংক তিনটি একীভূত, অধিগ্রহণ, অবসায়ন বা পুঁজি সহায়তার মাধ্যমে পুনর্গঠন করা হবে কি না- সেটা এ নিরীক্ষার মাধ্যমে প্রকৃত আর্থিক অবস্থা পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, ব্যাংক তিনটির সম্পদের মান যাচাইয়ে আন্তর্জাতিক নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান ‘ডেলয়েট’-কে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে এসব ব্যাংকের প্রকৃত খেলাপি ঋণ, প্রভিশন ঘাটতি, মূলধন ঘাটতি, আমানত ও ঋণের অবস্থা স্পষ্ট হবে। একই সঙ্গে ব্যাংক একীভূত করতে কত মূলধন প্রয়োজন হবে, তা-ও নিরূপণ করা যাবে।
জানা যায়, বুধবার (২০ আগস্ট) ডেলয়েট-এর একটি দল বাংলাদেশ ব্যাংক কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়ে আইএফআইসি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় পরিদর্শনের মাধ্যমে এ কার্যক্রম শুরু করেছে।
প্রসঙ্গত: বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে গত জুলাইয়ে দ্বিতীয় ধাপে আরও ১১টি ব্যাংকের সম্পদের মান যাচাইয়ের সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এ তালিকায় রয়েছে- এবি ব্যাংক, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক, আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক, আইএফআইসি ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, মেঘনা ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক, এনআরবি ব্যাংক, এনআরবিসি ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংক ও ইউসিবি ব্যাংক।
এর আগে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) এর অর্থায়নে আর্নেস্ট অ্যান্ড ইয়াং ও কেপিএমজি ৬টি ব্যাংকের সম্পদের মান যাচাই সম্পন্ন করেছে। এর মধ্যে আর্নেস্ট অ্যান্ড ইয়াং নিরীক্ষা করেছে- এক্সিম ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক ও আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক এবং কেপিএমজি নিরীক্ষা করেছে- ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক ও ইউনিয়ন ব্যাংক।
নিরীক্ষায় দেখা যায়, উল্লেখিত ব্যাংকগুলোর আর্থিক অবস্থা অত্যন্ত নাজুক এবং খেলাপি ঋণ আগের প্রতিবেদনগুলোর তুলনায় চারগুণ বেশি।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, ছয়টির মধ্যে পাঁচটি শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংক একীভূত করে একটি নতুন ব্যাংক গঠনের প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বিদেশি মালিকানার কারণে এগুলোর মধ্য থেকে আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক-কে একীভূত প্রক্রিয়ার বাইরে রাখা হয়েছে।
সূত্র মতে, পাঁচ ব্যাংক একীভূত করতে প্রাথমিকভাবে ৩৫ হাজার কোটি টাকার ব্যয় ধরা হয়েছে। এর মধ্যে ২০ হাজার কোটি টাকা মূলধন হিসেবে সরকারের কাছে চাওয়া হবে। পাশাপাশি আমানত বীমা তহবিল থেকে ঋণ নেওয়া এবং আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংকের মতো আন্তর্জাতিক সংস্থার সহায়তা নেওয়ার পরিকল্পনাও রয়েছে। সরকারের সম্মতি পেতে বাংলাদেশ ব্যাংক শিগগিরই আনুষ্ঠানিকভাবে প্রস্তাব পাঠাবে।