Friday 22 Aug 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় ঢাকার অবস্থান ৩২

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
২২ আগস্ট ২০২৫ ১০:৩৯

বায়ু দূষণ। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: বিশ্বব্যাপী বায়ুদূষণ বর্তমান সময়ে একটি মহামারির মতো ছড়িয়ে পড়েছে। পরিবেশগত এই সংকট শুধু স্বাস্থ্যঝুঁকিই বাড়াচ্ছে না বরং বসবাসযোগ্য শহরের ধারণাকেই প্রশ্নবিদ্ধ করছে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বায়ুমান নির্ধারণে পরিচিত প্ল্যাটফর্ম IQAir প্রতিদিন বিশ্বের প্রধান শহরগুলোর বায়ুর মান ও র‌্যাংক প্রকাশ করে।

শুক্রবার (২২ আগস্ট) স্থানীয় সময় সকাল ৯টায় প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ঢাকা এখন বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরগুলোর তালিকায় ৩২তম স্থানে রয়েছে।

শীর্ষ তিন দূষিত শহরের মধ্যে রয়েছে:

মানামা, বাহরাইন – AQI ২৪২ (খুবই অস্বাস্থ্যকর)
দোহা, কাতার – AQI ২২৩ (খুবই অস্বাস্থ্যকর)
কাম্পালা, উগান্ডা – AQI ১৬৩ (অস্বাস্থ্যকর)

বিজ্ঞাপন

তালিকার পরবর্তী স্থানগুলোতে রয়েছে দিল্লি (AQI ১৫৭) এবং লাহোর (AQI ১৫৫), যেগুলো দীর্ঘদিন ধরেই উচ্চ দূষণের কারণে আলোচনায় রয়েছে।

ঢাকার বর্তমান অবস্থা

অবস্থান: বিশ্বের প্রধান শহরের মধ্যে ৩২তম
বায়ুমান সূচক (AQI): ৬৬
বায়ুমানের মানদণ্ড অনুযায়ী: মধ্যম (Moderate)

এটি অর্থ দাঁড়ায় যে, সাধারণ জনগণের জন্য বায়ুর মান খুব ক্ষতিকর নয়। তবে, সংবেদনশীল গোষ্ঠী যেমন—শিশু, বয়স্ক এবং শ্বাসকষ্ট ও হৃদরোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য কিছুটা ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।

ঢাকার বায়ুমান: সাম্প্রতিক প্রবণতা

কয়েক মাস আগেও ঢাকার AQI প্রায়শই ‘অস্বাস্থ্যকর’ স্তরে ছিল, বিশেষ করে শীত মৌসুমে। তবে, সাম্প্রতিক সময়ে বৃষ্টিপাত ও মৌসুমি পরিবর্তনের কারণে দূষণের মাত্রা কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে। ঢাকার AQI বর্তমানে ‘মধ্যম’ স্তরে নামায় স্বস্তি মিললেও এটি দীর্ঘমেয়াদি সমাধান নয়। শুষ্ক মৌসুম শুরু হলে আবার দূষণের মাত্রা বাড়তে পারে।

স্বাস্থ্যঝুঁকি ও সতর্কবার্তা

AQI৬৬ মানে বাইরে চলাফেরা করা তুলনামূলক নিরাপদ। তবে, শ্বাসকষ্টে ভোগা ব্যক্তি, হাঁপানি রোগী ও বয়স্করা বেশি সময় বাইরে থাকলে সুরক্ষা নিতে হবে। স্কুলগামী শিশুদেরও অতিরিক্ত দূষণের দিনগুলোতে বাইরে খেলাধুলা কমিয়ে আনা জরুরি।

করণীয় ও পরামর্শ

ব্যক্তিগত সুরক্ষা:

-দূষিত এলাকায় বাইরে গেলে মাস্ক ব্যবহার করা।
-নাক-মুখ ঢাকা ও ঘরে এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহার করা।
-প্রচুর পানি পান করা এবং ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া।

সামাজিক উদ্যোগ:

-পরিবেশবান্ধব পরিবহন ব্যবহারে উৎসাহিত হওয়া।
-গাড়ির কালো ধোঁয়া নিয়ন্ত্রণ ও শিল্পকারখানায় নির্গমন নিয়ন্ত্রণ করা।

সরকারি উদ্যোগ:

-নির্মাণকাজে ধুলা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।
-সবুজায়ন বৃদ্ধি এবং টেকসই নগর পরিকল্পনা গ্রহণ।
-দূষণ নিয়ন্ত্রণ আইন কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন।

বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় ৩২তম অবস্থান ঢাকার জন্য আপাতত স্বস্তির হলেও এটি কোনো স্থায়ী উন্নতির প্রতিফলন নয়। মৌসুমি প্রভাব দূর হলে আবারও বায়ুদূষণের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে। তাই ব্যক্তিগত সতর্কতা, সামাজিক সচেতনতা এবং সরকারি উদ্যোগ—তিনটির সমন্বয়েই কেবল ঢাকাকে শ্বাস নেওয়ার মতো একটি শহরে রূপান্তর করা সম্ভব।

সারাবাংলা/এফএন/এসডব্লিউ

ঢাকায় বায়ুদূষণ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর