Friday 22 Aug 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

চট্টগ্রাম বন্দরে কাগজের আড়ালে আনা সিগারেট পেপার জব্দ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
২২ আগস্ট ২০২৫ ১৪:৫০

চট্টগ্রাম বন্দর। ছবি: সারাবাংলা

ঢাকা: পেপার রিবন ও স্ট্র পেপার আনার কথা বলে সিগারেট তৈরির কাঁচামাল সিগারেট পেপার আমদানি করে আসছিলো একটি চক্র। মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে এসব চালান আনা হচ্ছিল অচেনা বা স্বল্পপরিচিত প্রতিষ্ঠানের নামে। এতে চার হাজার কোটি টাকার বেশি রাজস্ব ফাঁকির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এমন আশঙ্কায় চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস ‘আরএম এন্টারপ্রাইজ’ ও ‘স্মার্ট মুভ’ নামে দুটি প্রতিষ্ঠানের চালান জব্দ করে।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) এ পরীক্ষা করে নিশ্চিত করা হয়েছে চালানগুলোতে আসলে সিগারেট পেপার ছিল। চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের এক অনুসন্ধানে জালিয়াতির এ তথ্য উঠে এসেছে।

বিজ্ঞাপন

জানা গেছে, জুলাইয়ের মাঝামাঝি ঢাকাভিত্তিক আরএম এন্টারপ্রাইজ হংকং থেকে ১৬ টন ‘স্ট্র পেপার’ ঘোষণা দিয়ে আমদানি করে। এর কিছুদিন পর আরেকটি প্রতিষ্ঠান স্মার্ট মুভও ‘পেপার রিবন’ আমদানির ঘোষণা দিয়ে প্রায় ১০ টন সিগারেট পেপার আনতে গিয়ে ধরা পড়ে।

পুনঃশ্রেণিবিন্যাস ছাড়া ছাড়পত্র পেলে, আরএম এন্টারপ্রাইজের এ চালানেই সরকার আমদানি শুল্ক বাবদ প্রায় ১ কোটি টাকা এবং সিগারেট উৎপাদনে ব্যবহৃত হলে মূল্য সংযোজন কর (মূসক/ভ্যাট) বাবদ প্রায় ৮৫ কোটি টাকার রাজস্ব হারাবে। একইভাবে স্মার্ট মুভের চালান ছাড়পত্র পেলে সরকারের শুল্কবাবদ ক্ষতি হবে প্রায় ৭০ লাখ টাকা মূসকবাবদ ৫০ কোটি টাকা।

কাস্টমস ও এনবিআর-এর তথ্যমতে জানা গেছে, এর আগে আরএম এন্টারপ্রাইজ প্রায় ২৭ কোটি টাকার বেশি আটটি চালান আনে। এর মধ্যে সিগারেট পেপার সহ ৪৮৯ টন সিগারেট তৈরির অন্যান্য কাঁচামাল ছিল। কর্মকর্তাদের সন্দেহ, ওই চালানগুলোতেও সিগারেট তৈরির কাঁচামাল ছিল, যার মধ্যে বেশিরভাগই আমদানি করা হয়েছে অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠানের নামে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ভ্যাট কর্মকর্তা জানান, এসব কাঁচামাল থেকে সরকারের প্রাপ্য ভ্যাট দাঁড়াতে পারে প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু এসব টাকা আদায় প্রায় অনিশ্চিত, কারণ সরেজমিন যাচাইয়ে দেখা গেছে কোম্পানির ঠিকানাই অস্তিত্বহীন।

এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম কাস্টমসের অতিরিক্ত কমিশনার তফসির উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, যে পণ্যের নাম ঘোষণা করে আনা হয়েছে সে নামে এ চালান ছাড় দেওয়া সম্ভব নয়। যদি আমদানিকারকরা পণ্য ছাড়াতে চান, তবে সিগারেট পেপারের শুল্ক পরিশোধ করতে হবে এবং মিথ্যা ঘোষণার জন্য জরিমানা দিতে হবে। প্রথমে তারা ছাড়পত্র চাইছিল, কিন্তু গত এক সপ্তাহ ধরে তারা যোগাযোগ করেনি। তারা আর যোগাযোগ না করলে আমরা নিয়ম অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেব।

তিনি আরও জানান, তারা সংশ্লিষ্ট ভ্যাট অফিসকে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুরোধ জানাবে আগের আমদানি ও বিক্রির রেকর্ড যাচাই করে সরকারের প্রাপ্য রাজস্ব আদায় নিশ্চিত করতে।

সারাবাংলা/ইএইচটি/এনজে

কাগজ চট্টগ্রাম বন্দর সিগারেট পেপার জব্দ