কক্সবাজার: কক্সবাজারের চকরিয়ায় পুলিশের হেফাজতে থাকা দুর্জয় চৌধুরী নামে এক যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় বিক্ষোভ করেছেন স্থানীয়রা। পরে দায়িত্বে গাফিলতির অভিযোগে এক এএসআইসহ তিন পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
শুক্রবার (২২ আগস্ট) বিকেলে এ তথ্য নিশ্চিত করেন চকরিয়া থানার ওসি মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম। তিনি জানান, থানায় আটক অবস্থায় দুর্জয়ের মৃত্যু আত্মহত্যা বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তবে এ ঘটনায় এএসআই মোহাম্মদ হানিফ মিয়া, কনস্টেবল মহিউদ্দিন ও কনস্টেবল ইশরাক হোসেনকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
এর আগে দুপুরে ঘটনার প্রতিবাদে স্থানীয়রা থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেন। চকরিয়া ইমাম সমিতির সভাপতি কফিল উদ্দিন আহমেদ বিক্ষোভে বলেন, “প্রিজন সেলে কিভাবে একজন মারা যায়? তাকে কি রিমান্ডে নির্যাতন করা হয়েছিল? আত্মহত্যা করেছে নাকি তাকে হত্যা করে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে? এসব প্রশ্নের উত্তর চকরিয়ার মানুষ জানতে চায়। বিচার বিভাগীয় তদন্ত ছাড়া সত্য উদঘাটন হবে না।”
দুর্জয়ের ফুফাতো ভাই সঞ্জীব দাশ বলেন, “হাজতের বাইরে তো কনস্টেবল থাকার কথা। তিনি কি দায়িত্বে ছিলেন না?”
চকরিয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার অভিজিত দাশ জানান, থানার সিসিটিভি ফুটেজে দুর্জয়ের চলাফেরা ও অন্যান্য কার্যকলাপ দেখা গেছে। তবে আত্মহত্যার দৃশ্য সরাসরি ধারণ হয়নি। তিনি বলেন, তদন্ত কমিটি বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।
কক্সবাজার জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জসিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, “পুলিশ সুপারের নির্দেশে তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ঘটনাস্থলে সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করেছেন। পোস্টমর্টেম রিপোর্টে আসল ঘটনা বেরিয়ে আসবে।”
পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) রাত ৯ টার দিকে দুর্জয়কে তার কর্মরত বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা থানায় সোপর্দ করেন। বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ২ লাখ ৮৩ হাজার টাকা আত্মসাৎ ও জালিয়াতির অভিযোগে মামলা করেন। পরে রাত ১১ টায় তাকে হেফাজতে নেওয়া হয়। শুক্রবার ভোরে হাজতের ভেতরে ঝুলন্ত অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত দুর্জয় চৌধুরী (২৮) চকরিয়া পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ড হিন্দু পাড়ার বাসিন্দা কমল চৌধুরীর ছেলে। তিনি চকরিয়া সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের কম্পিউটার অপারেটর ছিলেন।