ঢাকা: গণঅভ্যুত্থানের পর দেশের মানুষের মনোজগতে যে প্রত্যাশা ও আকাঙ্ক্ষার জন্ম হয়েছে, তা অনুধাবন করতে না পারলে কোনো রাজনৈতিক দলের ভবিষ্যৎ নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
শনিবার (২৩ আগস্ট) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির ক্র্যাব মিলনায়তনে ‘ফ্যাসিস্ট আমলে গণমাধ্যম, বর্তমান অবস্থা: জনগণের প্রত্যাশা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংগঠন জিয়াউর রহমান স্টাডি সার্কেল।
আমীর খসরু বলেন, ‘শেখ হাসিনার পালিয়ে যাওয়ার পরে বাংলাদেশের জনগণের মনোজগতে যে পরিবর্তন এসেছে, যে প্রত্যাশা ও আকাঙ্ক্ষা জেগেছে, তা যে রাজনৈতিক দল বুঝতে পারবে না, তাদের রাজনীতিতে কোনো জায়গা থাকবে না। নতুন বাংলাদেশে মানুষের আকাঙ্ক্ষা অন্য মাত্রায় চলে গেছে।’
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘শেখ হাসিনা সরকারের আমলে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণ করা হয়েছে এবং জনগণকে বাদ দিয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকতে গিয়ে স্বৈরাচারী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল। গণমাধ্যম বন্ধসহ নানা ঘটনায় আমি আশ্চর্য হইনি, কারণ জনগণকে বাদ দিয়ে ক্ষমতা দখল করলে এ ধরনের কাজ করতেই হয়।’
ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রেও একই পরিস্থিতি ছিল বলে দাবি করে আমীর খসরু বলেন, ‘শুধু লুটপাটের ব্যবসা চলেছে, সাধারণ ব্যবসায়ীরা সুযোগ পাননি। সাংবাদিকতার ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছে।’
অর্থনীতিকে গণতন্ত্রায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করে বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘গণতন্ত্র শুধু ভোটের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না। অর্থনীতি ও গণমাধ্যমকেও গণতন্ত্রায়ন করতে হবে। যদি সাধারণ মানুষ অর্থনীতিতে অংশ নিতে না পারে এবং সাংবাদিকরা স্বাধীনভাবে কাজ করতে না পারেন, তাহলে গণতন্ত্র প্রতিফলিত হবে না।’
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন খালেদা জিয়ার সাবেক সিনিয়র সহকারী প্রেস সচিব আশিক ইসলাম। তিনি বলেন, ‘২০১৮ সালের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রণয়নের পর থেকে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১ হাজার ৪৩৬টি মামলা হয়েছে, যেখানে ৪ হাজার ৫২০ জন আসামি করা হয়। এর মধ্যে অন্তত ৪৫১ জন সাংবাদিক মামলা ও হয়রানির শিকার হয়েছেন এবং ৯৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়।’
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জিয়াউর রহমান স্টাডি সার্কেল, যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান নির্বাহী মোহাম্মদ কাসেম। সঞ্চালনা করেন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সভাপতি মুরসালিন নোমানী। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ড. জিয়াউদ্দিন হায়দার। এ ছাড়া বক্তব্য দেন বাংলাদেশ প্রতিদিনের নির্বাহী সম্পাদক মনজুরুল ইসলাম, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের যুগ্ম সম্পাদক দিদারুল আলম, ও বিএসএস-এর উপপ্রধান বার্তা সম্পাদক জিএম রাজিব হোসেন।