ঢাকা: বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, “আমরা যে অর্জন পেয়েছি, তা ধরে রাখতে হবে। কারণ ১৫-১৬ বছর ধরে এক নিষ্ঠুর ও দানবীয় সরকারের রসানলে মানুষ অতিষ্ঠ ছিল। সেই সময় যেন আর ফিরে না আসে সেজন্য আমাদের কাজ করতে হবে। ছোটখাটো ঝগড়া-বিবাদ করে ফ্যাসিবাদ আসার পথ সুগম করা যাবে না।”
রোববার (২৪ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জিয়া পরিষদের পক্ষ থেকে রিকশা ও ভ্যানগাড়ি চালকদের মাঝে বৃষ্টির পোশাক বিতরণ অনুষ্ঠানে এই মন্তব্য করেন তিনি।
রিজভী বলেন, ‘মাওলানা সাঈদীকে ফাঁসি দেওয়ার জন্য শেখ হাসিনা তার প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে সুখরঞ্জন বালীকে হুমকি দিয়ে মিথ্যা সাক্ষী বানানোর চেষ্টা করেছিলেন। এতে বোঝা যায়, তিনি কতটা হিংস্র ছিলেন।’
তিনি অভিযোগ করেন, শেখ হাসিনা গত ১৬ বছর দেশে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিলেন। তিনি বলেন, ‘কোনো আইন ছিল না, ছিল না ন্যায়বিচার। শেখ হাসিনা তার প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্য আদালত ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যবহার করেছেন। এ সময় নির্যাতন-নিপীড়নে মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল।’
তিনি আরও অভিযোগ করেন, কর্মসংস্থানের অভাবে দেশে দুর্ভিক্ষের আলামত দেখা দিচ্ছে। অনেক মিল-কারখানা বন্ধ হয়ে লক্ষাধিক মানুষ বেকার হয়ে পড়েছেন।
জুলাই সনদ বাস্তবায়ন প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, ‘যদি সংবিধান পরিবর্তন করতে হয়, সেটা করবে জনগণের নির্বাচিত সরকার। আগে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দিন, জনগণের সরকার আসুক।’
তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘প্রশাসনের ভেতরে ঘাপটি মেরে থাকা ফ্যাসিবাদীরা সুযোগ পেলেই গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে কাজ করবে। তাই সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থেকে ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে হবে।’
দুর্ভিক্ষ এলে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা দুয়েক জায়গায় হাঁস খেতে পারলেও জনগণ তো আর পারবে না বলেও মন্তব্য করেন রিজভী।
তিনি বলেন, ‘একটি দল বলছে আগেই গণভোট দিতে হবে, কেন? যদি সংবিধানের মূল নীতিমালায় কোনো পরিবর্তন করতে হয়, তা করবে নির্বাচিত সরকার।’
সরকার যদি অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারে তাহলে নির্বাচন হুমকির মধ্যে পড়বে বলেও মন্তব্য করেন রিজভী।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আব্দুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, জিয়া পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ড. আব্দুল লতিফ, মহাসচিব ড. এমতাজ হোসেন এবং যুগ্ম মহাসচিব আব্দুল্লাহিল মাসুদ।
পরে নেতারা রিকশা ও ভ্যানচালকদের হাতে রেইনকোট তুলে দেন। এ সময় সাধারণ চালকরা এ ধরনের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বিএনপিকে ধন্যবাদ জানান।