Tuesday 26 Aug 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

যশোরে নদীর জমি দখল করে প্লট বিক্রি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
২৬ আগস্ট ২০২৫ ০৮:০৪ | আপডেট: ২৬ আগস্ট ২০২৫ ০৯:৫৯

যশোর: যশোরে মুক্তেশ্বরী নদীর প্রায় দেড়শ মিটার ভরাট করে ফেলা হয়েছে। নদী দখল করে সেই জমি ব্যক্তি নামে দলিল করে প্লট আকারে তা বিক্রি করা হচ্ছে। এছাড়াও মুক্তেশ্বরী নদীর অনেক অংশই প্রভাবশালীরা দখল করে নিজেদের মতো ব্যবহার করছেন।

রোববার (২৪ আগস্ট) পরিবেশ অধিদফতর ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাসিক রাজস্ব সভায় এসব তথ্য উঠে আসে।

বিষয়টি তদন্তের জন্য জেলা প্রশাসক মো. আজহারুল ইসলাম তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছেন। কমিটিতে সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি), পানি উন্নয়ন বোর্ড ও পরিবেশ অধিদফতরের প্রতিনিধিরা রয়েছেন। আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে এই কমিটিকে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

এ বিষয়ে খোঁজ নিতে পরিবেশ অধিদফতরের উপ-পরিচালক এমদাদুল হকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, স্থানীয়দের মাধ্যমে তারা জানতে পেরেছেন, মনা নামে এক ব্যক্তি নদীর এই অংশটি নিজের নামে রেকর্ড করে নিয়েছেন। এরপর জারিফা ইসলাম রোজ নামের এক নারী সেখানে সাইনবোর্ড টাঙিয়ে প্লট আকারে জমি বিক্রির ঘোষণা দেন। পরিবেশ অধিদফতরের কাছে থাকা সেই সাইনবোর্ডের ছবিতে দেখা যায়, সেখানে মোট ২৯টি প্লট বিক্রির কথা উল্লেখ আছে। সাইনবোর্ডে জারিফা ইসলামের নামের পাশে তিনটি মোবাইল নম্বরও লেখা আছে।

এ দিকে, নদী দখল সংক্রান্ত তথ্য উপস্থাপনের সময় আরও জানা যায়, মুক্তেশ্বরী নদীর অনেক অংশ প্রভাবশালীরা দখল করে নিজেদের ইচ্ছেমতো ব্যবহার করছে। এ সময় সভার সভাপতি ও জেলা প্রশাসক- সরকারি কৌঁসুলি (জিপি) শেখ আব্দুল মোহায়মেনের কাছে পরামর্শ চাইলে তিনি আইনের বিভিন্ন ধারা উল্লেখ করে এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের সহজ উপায়গুলো ব্যাখ্যা করেন।

এ সময় তিনি বলেন, হাইকোর্টের রায়ে নদীকে ‘জীবন্ত সত্তা’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, এ ধরনের ক্ষেত্রে যদি কোনো জমি ইজারা দেওয়া থাকে বা দলিল হয়েও যায়, তাহলেও আইনের ধারা অনুযায়ী সেগুলো বাতিল করা যেতে পারে।

তিনি আরও কয়েকটি আইনের ধারা উল্লেখ করে বলেন, ‘১৯৫৫ সালের নদী সংক্রান্ত আইনের ২৩ (৪) ধারা ব্যবহার করে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করা সম্ভব। সহকারী কমিশনার (ভূমি) নিজেই সিএস (ক্যাডেস্ট্রাল সার্ভে) ও আরএস (রিভিশনাল সার্ভে) খতিয়ান দেখে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারেন।’

নদী রক্ষা কমিটির সভায় আরও জানানো হয়, গত জুলাই মাসে জেলার ২০টি নদীর মধ্যে ১৪টির ‘হেলথ কার্ড’ তৈরির দায়িত্ব পরিবেশ অধিদফতরকে দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু সেই কাজ এখনো শেষ হয়নি। তবে পরিবেশ অধিদফতর সভাকে জানায়, এরই মধ্যে শহরের ভৈরব নদের দূষণকারী ২৪টি প্রতিষ্ঠানকে চিহ্নিত করা হয়েছে এবং এর মধ্যে ৭টির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

এ সময় শার্শার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বেতনা নদী ও হাকর নদীর খারাপ অবস্থার কথা তুলে ধরে দখলদারদের উচ্ছেদ করার অনুরোধ জানান।

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) কমলেশ মজুমদার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আহসান হাবীবসহ বিভিন্ন উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনারেরা (ভূমি)।

সারাবাংলা/এসআর

নদী দখল মুক্তেশ্বরী নদী যশোর

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর