ঢাকা: আট বছর পেরিয়ে গেলেও বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গা শরণার্থিদের প্রত্যাবাসনে কোনো সময়সীমা নির্ধারণ করা যায়নি। এমতাবস্থায় রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক সহায়তার তহবিল কমে যাওয়ায় তাদের আত্মনির্ভরশীল করে তোলা এবং ভবিষ্যতে তাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারের প্রস্তুতির ওপর গুরুত্বারোপ করেছে ঢাকায় অবস্থিত ১১টি দেশের কূটনৈতিক মিশন।
সোমবার (২৫ আগস্ট) কূটনৈতিক মিশনগুলোর পক্ষ থেকে এক যৌথ বিবৃতিতে এ কথা বলা হয়।
বিবৃতিদাতা মিশনগুলো হচ্ছে- অস্ট্রেলিয়া, ব্রিটিশ হাইকমিশন, কানাডা, ডেনমার্ক, ফ্রান্স, জার্মানি, ইউরোপিয় ইউনিয়ন, নেদারল্যান্ডস, নরওয়ে, সুইডেন ও সুইজারল্যান্ড।
‘আট বছর আগে মিয়ানমারের সেনা অভিযানের কারণে লাখ লাখ রোহিঙ্গা বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়’- উল্লেখ করে যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, রোহিঙ্গা সংকটের আট বছর পেরিয়ে গেলেও প্রত্যাবাসনের কোনো সময়সীমা নির্ধারণ করা যায়নি। মিয়ানমারের চলমান সহিংসতা, অস্থিতিশীলতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের কারণে নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবর্তনের পরিবেশ তৈরি হয়নি। অন্যদিকে রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায়, নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের জন্য মিয়ানমারে একটি শান্তিপূর্ণ ও স্থিতিশীল পরিবেশ নিশ্চিত করা জরুরি। তবে বর্তমান পরিস্থিতি সে অনুকূলে নেই। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় জানিয়েছে, রোহিঙ্গাদের বাস্তুচ্যুতির মূল কারণ সমাধান না হলে টেকসই প্রত্যাবাসন সম্ভব নয়।
বিবৃতিতে মিয়ানমারের সেনা শাসন ও অন্যান্য সশস্ত্র গোষ্ঠীর সহিংসতা এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে সহিংসতা বন্ধ ও আটক ব্যক্তিদের মুক্তির আহ্বান জানানো হয়েছে।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের উদার ভূমিকার প্রশংসা করে বিবৃতিতে বলা হয়, কক্সবাজারে স্থানীয় জনগণ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে মানবিক দায়িত্ব পালন করছে। তবে এখনো নতুন করে রোহিঙ্গাদের আগমন অব্যাহত থাকায় সংকট ক্রমেই গভীর হচ্ছে। কক্সবাজারের শিবিরগুলোতে রোহিঙ্গাদের জীবনে অনিশ্চয়তা, বেকারত্ব ও দুর্দশা বাড়ছে এবং বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা অনিশ্চয়তা ও দুর্ভোগের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে।
এমতাবস্থায় বাংলাদেশে অবস্থানকালে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ জীবনযাপন নিশ্চিত করা ও তাদের আত্মনির্ভরশীল করে তোলা এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় রোহিঙ্গাদের অন্তর্ভুক্ত করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে বিবৃতিতে।