চট্টগ্রাম ব্যুরো: দুর্নীতির মাধ্যমে সম্পদ অর্জনের অপরাধে কক্সবাজারের টেকনাফের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জাফর আহমদের স্ত্রী আমেনা খাতুনকে সাড়ে তিন বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তার অবৈধ সম্পদ বাজেয়াপ্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (২৫ আগস্ট) চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মিজানুর রহমান এ রায় দেন বলে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী মোকাররম হোসেন জানিয়েছেন।
আমেনার স্বামী জাফর আহমেদ টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগের (বর্তমানে কার্যক্রম স্থগিত) সহ-সভাপতি। তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত ‘ইয়াবা ব্যবসায়ী’। এ ছাড়া তিনি কক্সবাজার-৪ (উখিয়া-টেকনাফ) আসনের আলোচিত সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদির ‘ঘনিষ্ঠ সহচর’ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। ২০২৪ সালের জুন মাসে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তিনি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দুই মাসের মাথায় তিনি অপসারিত হন।
মামলার নথিপত্রের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭ সালের ৯ জুলাই আমেনা খাতুনকে সম্পদ বিবরণী দাখিলের নোটিশ দিয়েছিল দুদক। ৩০ জুলাই তিনি সম্পদের বিবরণী জমা দেন। এতে তিনি কোনো স্থাবর সম্পদ প্রদর্শন না করে নিজ নামে তিন লাখ ৪৫ হাজার ২৯৮ টাকার অস্থাবর সম্পদ অর্জনের তথ্য দেন।
সম্পদ বিবরণী যাচাই করে দুদক তার ৩০ লাখ ৩ হাজার ৩২ টাকার অস্থাবর সম্পদের তথ্যপ্রমাণ পায়। ঘোষণায় ২৬ লাখ ৫৭ হাজার ৭৩৪ টাকার অস্থাবর সম্পদের তথ্য গোপন করায় ২০১৯ সালের ১ এপ্রিল নগরীর ডবলমুরিং থানায় আমেনার বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক।
তদন্ত শেষে দুদকের তৎকালীন সহকারী পরিচালক রিয়াজ উদ্দিন ২০২২ সালের ১২ সেপ্টেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। এতে বলা হয়, আমেনা খাতুন একজন গৃহিণী। তবে মোট সম্পদ ও ব্যয় মিলে তার ৪৬ লাখ ৯৩ হাজার ৩২ টাকার সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে। এতে গ্রহণযোগ্য আয় ১৫ লাখ ৪৭ হাজার ৩২ টাকা। এর বাইরে ৩১ লাখ ৪৬ হাজার টাকার সম্পদ জ্ঞাত আয়বহির্ভূত।
দুদকের পিপি মোকাররম হোসাইন সারাবাংলাকে বলেন, ‘২৬ লাখ টাকার সম্পদের তথ্যগোপন ও ৩১ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আসামি আমিনা খাতুনকে সাড়ে তিন বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত। পাশাপাশি অবৈধভাবে অর্জিত সম্পদ রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করার আদেশও দেওয়া হয়েছে। তবে গ্রেফতারের পর কারাবাসের সময় সাজা থেকে বাদ যাবে। এ হিসেবে তাকে তিন বছরের সাজা ভোগ করতে হবে।’
রায় ঘোষণার সময় আমেনা খাতুন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে আদালতের আদেশে সাজামূলে তাকে কারাগারে নেওয়া হয়।