Monday 25 Aug 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

রুপলাল-প্রদীপ লাল হত্যাকাণ্ড
সই নিয়েছে পুলিশ, মামলায় কী ছিল জানতেন না ভারতী রানী

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
২৫ আগস্ট ২০২৫ ১৭:১২ | আপডেট: ২৫ আগস্ট ২০২৫ ১৮:২৪

ছবি: সংগৃহীত

রংপুর: রংপুরের তারাগঞ্জে দলিত সম্প্রদায়ের রুপলাল দাস ও প্রদীপ লালকে মব জাস্টিসের পরিস্থিতি তৈরি করে নৃশংসভাবে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলার এজাহার নিয়ে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। নিহত রুপলাল দাসের স্ত্রী মালতী ওরফে ভারতী রানীকে বাদী হিসেবে উল্লেখ করা হলেও, তিনি দাবি করেছেন যে পুলিশ নিজেরা এজাহার তৈরি করে তার সই নিয়েছে, যার বিষয়ে তিনি কিছুই জানতেন না।

নিহতদের স্বজনদের অভিযোগ, পুলিশ ঘটনাকে ভিন্ন দিকে প্রবাহিত করতে এবং নিজেদের দায় এড়াতে এজাহারে বিকৃতভাবে তথ্য উপস্থাপন করেছে। এজাহারে ভারতী রানীর নামে যে মোবাইল নম্বর ব্যবহার করা হয়েছে, তা তার নয়, বরং টাঙ্গাইলের এক ব্যক্তির বলে নিশ্চিত হয়েছে পরিবার। এ ছাড়া, এজাহারে ৫০০-৭০০ অজ্ঞাত ব্যক্তির কথা উল্লেখ করা হলেও, বাদী এ ধরনের কোনো তথ্য দেননি।

বিজ্ঞাপন

পুলিশের বিরুদ্ধে সবচেয়ে ভুক্তভোগীর গুরুতর অভিযোগ, ভারতী রানী জানেন না এজাহারে কী লেখা হয়েছে। তিনি জানান, পুলিশ তার বাড়িতে গিয়ে সই নিলেও, কাগজে কী লেখা ছিল তা তাকে জানানো হয়নি। পরে এজাহারের কপি সংগ্রহ করে তিনি জানতে পারেন, পুলিশ ঘটনাকে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করেছে।

মামলার এজাহার অনুযায়ী, গত ৯ আগস্ট রাতে মিঠাপুকুরের ছড়ান বালুয়া থেকে রুপলাল ও প্রদীপ ভ্যান নিয়ে তারাগঞ্জের ঘনিরামপুরে ফিরছিলেন। রাত সাড়ে আটটায় সয়ার ইউনিয়নের বুড়িরহাট বটতলা মোড়ে পৌঁছালে স্থানীয় লোকজন তাদের সন্দেহ করে ভ্যান থামায়। তল্লাশিতে তাদের ব্যাগে স্পিড ক্যানের বোতলে দুর্গন্ধযুক্ত পানীয় ও কিছু ওষুধ পাওয়া যায়। এজাহারে দাবি করা হয়, বোতল খোলার পর মেহেদী হাসানসহ কয়েকজন অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর উত্তেজিত জনতা রাত ৯টার দিকে তাদের বুড়িরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে নিয়ে লাঠি ও লোহার রড দিয়ে মারধর করে। রুপলালকে তারাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়। অন্যদিকে প্রদীপকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হলেও তিনি ভোর ৪টায় মারা যান।

তবে, নিহত রুপলালের ছেলে জয়দাস অভিযোগ করে জানান, পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিল এবং তাদের সামনেই রুপলাল ও প্রদীপকে নৃশংসভাবে মারধর করা হচ্ছিল। তারা বারবার নিজেদের দলিত সম্প্রদায়ের সদস্য বলে আকুতি জানালেও পুলিশ কোনো উদ্ধার কাজ পরিচালনা না করে চলে যায়।

জয়দাস বলেন, ‘পুলিশের সামনেই আমার বাবা ও দাদাকে (আত্মীয়) পেটানো হয়েছিল, কিন্তু তারা কিছুই করেনি। পরে তাদের বুড়িরহাট স্কুলমাঠে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয়।’

এ সংক্রান্ত ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা গেছে, রুপলাল ও প্রদীপকে ভ্যান থেকে নামিয়ে মারধর করা হচ্ছে। তারা হাত জোড় করে মারধর না করার অনুরোধ করছেন, জানাচ্ছেন তারা দলিত সম্প্রদায়ের জুতা সেলাইয়ের কাজ করেন। দ্বিতীয় ভিডিওতে পুলিশের উপস্থিতিতে তাদের নির্মমভাবে পেটানোর দৃশ্য ধরা পড়েছে। এই ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর দেশ-বিদেশে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।

এদিকে পুলিশের বিরুদ্ধে ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। দুই এসআইসহ আট পুলিশ সদস্যকে স্ট্যান্ড রিলিজ করা হলেও, স্বজনরা এটিকে সাজানো নাটক হিসেবে অভিহিত করেছেন।

নিহতদের মেয়ে নুপুর রানী বলেন, ‘বুড়িরহাট স্কুল মাঠে বাবা ও দাদা পড়ে ছিলেন। পুলিশ ও সেনাবাহিনী সেখান থেকে তাদের মরদেহ হাসপাতালে নিয়ে আসে। অথচ মামলায় লেখা হয়েছে, পুলিশ বাবার মরদেহ হাসপাতালে পেয়েছে। এটা তো সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা।’

তিনি বলেন, ‘মামলার বিষয়ে আমার মা কিছু জানেন না। ওরা নিজেরাই মামলা লেখছে, নিজেরা এসে সই নিয়ে গেছে। কাগজ সব ভুলভাল লিখে রাখছে।’

এদিকে ভারতী রানী বলেন, ‘পুলিশ আমার সই নিয়েছে, কিন্তু কাগজে কী লেখা ছিল তা আমি জানি না। পরে জেনেছি, আমাকে বাদী করে মামলা করা হয়েছে।’

মামলার বিষয়ে তারাগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এম এ ফারুক বলেন, ‘মামলা কি পুলিশ করে, না বাদী করে? অভিযোগটা কে দেয়? বাদী তো সব সময় এই কথাই বলে, এটা তো স্বাভাবিক।’

মামলায় আসামি বৃদ্ধি প্রসঙ্গে ওসি বলেন, ‘মামলায় আসামি যতই করুক, প্রকৃত আসামির ছাড় পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।’

গণপিটুনিতে দলিত সম্প্রদায়ের দুই জনকে হত্যার ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যর্থতা আর মব সৃষ্টিকারীদের অতিউৎসাহীপণাকে দায়ী করছেন পরিবার, স্বজন ও স্থানীয়রা। তারা বলছেন, সেদিন পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি দেখে থানায় ফিরে না গিয়ে মব সৃষ্টিকারীদের প্রতিহত করতে পারলে রূপলাল দাস ও প্রদীপ দাসকে বাঁচানো যেতো। তাই এ ঘটনাকে পুরোপুরি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড অ্যাখ্যা দিয়ে অনতিবিলম্বে রাজনৈতিক পরিচয় বিবেচনা না করে হত্যাকাণ্ডে জড়িত সকলকে বিচারের মুখোমুখি করার।

উপজেলার বকুর্শা ইউনিয়নের ঘনিরামপুর এলাকার বাসিন্দা রুপলাল দাস এবং তার একজন নিকটাত্মীয় মিঠাপুকুর উপজেলার বালুয়াভাটা গ্রামের প্রদীপ দাস দলিত সম্প্রদায়ের এই দুই ব্যক্তিকে গত ৯ আগস্ট ‘ভ্যান চোর সন্দেহে’ পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এর মধ্যে রূপলাল দাস পেশায় মুচি এবং প্রদীপ দাস পেশায় ভ্যানচালক।

ঘটনার আদ্যপান্ত—

পুলিশ, নিহতদের পরিবারের সদস্য, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং ঘটনাস্থল সম্পর্কে অবগত— এমন কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রূপলাল দাসের মেয়ে নূপুর দাসের জন্য বিয়ের আলোচনা হচ্ছিলো মিঠাপুকুর উপজেলার এক পরিবারের সঙ্গে। ১০ আগস্ট রোববার এ বিষয়ে দিনক্ষণ ঠিক হওয়ার কথা। এ নিয়ে কথা বলার জন্য মিঠাপুকুর থেকে নিজের ভ্যান নিয়ে কুর্শা ইউনিয়নের ঘনিরামপুরে রূপলাল দাসের বাড়িতে আসছিলেন প্রদীপ দাস। কিন্তু তারাগঞ্জ উপজেলা সয়ার ইউনিয়নে এসে কুর্শা যাওয়ার রাস্তা হারিয়ে তিনি রূপলাল দাসকে ফোন দেন।

রূপলাল দাসের মেয়ে নূপুর দাস বলেন, ‘আমার মামাতো বোন জামাইবাবুকে (প্রদীপ দাস রূপলাল দাসের ভাগ্মী জামাতা) আনতে বাবা বের হয়ে যান। জামাইবাবুর ভ্যানেই তারা বাড়ির দিকে আসছিলেন। কিন্তু তাদের ভ্যান কাজীরহাট সড়কের বটতলা নামক একটি জায়গায় আসলে তাদের কয়েকজন থামান এবং এরপরই গণপিটুনির ঘটনা ঘটে, যাতে দুজনই গুরুতর আহত হয়ে মারা যান।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রথমে জমায়েত হওয়া ব্যক্তিরা আমার বাবা রূপলাল দাস ও বোন জামাই প্রদীপ দাসকে ‘ভ্যান চোর’ হিসেবে আখ্যায়িত করতে থাকে। বাবা এ সময় তাদের বিষয়ে জানার জন্য বারবার ইউনিয়ন চেয়ারম্যান বা মেম্বারকে ফোন দিতে বলেন। কিন্তু জমায়েত হওয়া ব্যক্তিরা কোনো তোয়াক্কা করেননি। আমার বাবা হাত জোর করে প্রাণ ভিক্ষা চেয়েছেন। কিন্তু নিষ্ঠুর, নির্দয় মনের মানুষেরা শোনেননি। তিনি বার বার বলছিলেন আমি চোর না, আমি ডাকাত না। আমি জুতা সেলাই করি কিন্তু কেউ শোনেননি।’

স্থানীয় এক ব্যক্তি সারাবাংলাকে জানান, এর মধ্যেই আরও লোকজন জমায়েত হয়ে তাদের গণপিটুনি দিতে শুরু করে এবং মারতে মারতেই বুড়িরহাট স্কুলের মাঠে নিয়ে যায়। একপর্যায়ে তারা জ্ঞান হারালে হামলাকারীরা চলে যায়। এর প্রায় দু ঘণ্টা পর পুলিশ খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে তাদের উদ্ধার করে তারাগঞ্জ উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালে নেওয়ার পরই চিকিৎসকরা রূপলাল দাসকে মৃত ঘোষণা করেন। আর রোববার সকালে মারা যায় প্রদীপ দাস। তাদের মৃত্যুর খবরে কুর্শা ইউনিয়নের লোকজন বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্র বলেছে, উপজেলার সয়ার ইউনিয়নের দোলাপাড়া গ্রামে গত ২৫ জুলাই রাতে এক পরিবারের সদস্যদের বেঁধে নগদ টাকা, সোনার গহনা ও মোটরসাইকেল নিয়ে যায় ডাকাতেরা। এর পরপরই ২৮ জুলাই বকশিপাড়া গ্রামে একজনকে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা ভ্যান নিয়ে যায়। ২ আগস্ট দীঘলটারী গ্রামে দুটি গরু, কয়েক দফায় অটোরিকশা চালককদের অচেতন করে অটোরিকশা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন স্থানীয় লোকজন। ৩ আগস্ট থেকে চোর ধরতে এলাকাবাসী রাত জেগে পাহারা শুরু করেন।

সেদিন রাতে রূপলাল ও প্রদীপ দাসের ভ্যান বটতলা এলাকায় আসার পর কয়েকজন লোক ভ্যান ঘিরে ধরে। তারা ওই ভ্যানে রাখা একটি বস্তা থেকে কয়েকটি বোতল বের করেন এবং এসব বোতলে চোলাই মদ রাখার অভিযোগ করেন। জানা গেছে, দলিত সম্প্রদায়ের অনেকে নিজেদের ঘরে তৈরি চোলাই মদ সেবন করে থাকেন। এটি এই সম্প্রদায়ের অনেকে স্বাভাবিক জীবনাচরণের অংশ বলেও মনে করে থাকেন। ভ্যানের বোতলে থাকা তরল পদার্থের ঘ্রান নিয়ে কয়েকজন তাৎক্ষণিক অসুস্থ বোধ করার দাবি করলে উপস্থিত অন্যরা আরও মারমুখী হয়ে ওঠে।

তবে স্থানীয় এক ব্যক্তি জানিয়েছেন, রূপলাল ও প্রদীপ দাসের ভ্যান বটতলায় পৌঁছার আগেই সেই ভ্যানে তিনজন নারী ছিলেন। বটতলায় আসার পর তিন নারী ভ্যান থেকে নেমে যান এবং এরপর তারাই কাছে থাকা স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলার পর লোকজন ভ্যানটি ঘিরে ধরে ‘ভ্যান চুরি’ ও ভ্যানে চোলাই মদ রাখার অভিযোগ করে মারতে শুরু করেন।

নিহত রূপলালের ছেলে জয় দাসের অভিযোগ, উৎসবে তারা বাংলা মদ খান। শ্যালিকার বিয়ে উপলক্ষ্যে প্রদীপ লাল ছোট বোতলে করে সেগুলো নিয়ে আসছিলেন। বটতলায় তার বাবা ও দুলাভাইকে আল-আমিন, এবাদতসহ কয়েকজন আটক করে সেই বোতলগুলো ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে পথচারীরা জড়ো হন।

তিনি জানান, লোকজন জড়ো হলে তারা বাবা আর দুলাভাইকে চোর বলে। এরপর লোকজন মারধর শুরু করে। পাশের ফরিদাবাদ গ্রামের মেহেদী হাসান বস্তা থেকে বোতল বের করে কাগ না খুলেই নাকে নিয়ে অজ্ঞান হওয়ার অভিনয় করেন। এরপর উত্তেজিত লোকজন তার বাবা-দুলাভাইকে মারধর করে মেরে ফেলে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, যখন বুড়িরহাট উচ্চবিদ্যালয়ের মাঠে রূপলাল দাস ও প্রদীপ লালকে নেওয়া হয়, তখনো তারা জীবিত ছিলেন। চোর ধরা পড়েছে খবর ছড়িয়ে পড়লে সেখানে মুহূর্তে হাজার হাজার মানুষ জড়ো হয়। এর কিছুক্ষণ পরে বুড়িরহাট বাজারে পুলিশের দুটি ভ্যান আসে। তারা রূপলাল ও প্রদীপকে উদ্ধার না করে ফিরে যায়। এরপর প্রায় এক ঘণ্টা পর পুলিশ ও সেনাবাহিনীর তিনটি গাড়ি পৌঁছায়।

প্রত্যক্ষদর্শী বুড়িরহাট বাজারের সবজি বিক্রেতা খোকন মিয়া বলেন, ‘দুইটা পুলিশের গাড়ি আসে কিন্তু অনেক লোক দেখে তারা ফেরত যায়। আবার ঘণ্টাখানেক পর পুলিশ, সেনাবাহিনীর তিনটা গাড়ি আসে। তাদের উদ্ধার করে নিয়ে যায়। আরেক প্রত্যক্ষদর্শী দামোদরপুর পণ্ডিতপাড়ার ভ্যানচালক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘পুলিশ এসে বাঁশি ফুকিয়ে চলে যায়।’

সয়ার ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আব্দুল হামিদ বলেন, ‘পুলিশ চাইলে দুজনকে বাঁচাতে পারতো।’

নিজেদের ব্যর্থতার কথা স্বীকার করে তারাগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এম এ ফারুক বলেন, ‘থানা থেকে বুড়িরহাট অনেক দূর। যখন মব তৈরি হয়, তখন স্কুল মাঠে তিন-চার হাজার মানুষ অবস্থান নিয়েছিল। তাদের নিবৃত করা পুলিশের পক্ষে সম্ভব হয়নি।’

রংপুরের পুলিশ সুপার আবু সাইম জানান, এ ঘটনায় নিহত রূপলালের স্ত্রী ভারতী রানী রোববার দুপুরে তারাগঞ্জ থানায় ৫০০ থেকে ৭০০ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। ওই রাতে ৪ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

তিনি জানান, এ ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ ঘটনাস্থলে উপস্থিত এক উপপরিদর্শক (এসআই) ও ছয় কনস্টেবলকে (সদস্য) তারাগঞ্জ থানা থেকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। প্রত্যাহারের পর তাদের পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে।

তারাগঞ্জ থানায় ৫০০ থেকে ৭০০ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা রেকর্ডের পর পুরো এলাকা গ্রেফতার–আতঙ্কে পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে। তারাগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান শিপু বলেন, ‘যারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত, উসকানি দিয়েছে, সরাসরি ওই দুই ব্যক্তিকে মেরেছে তারাই অপরাধী। অনেকে তো বাঁচাতে গেছে, তাদের অপরাধী বলা যাবে না। এলাকার মানুষ যদি দোষী হয়, তাহলে প্রথমে পুলিশই দোষী। কেননা, দুই ভ্যান পুলিশ এসে বাঁচায়নি, পালিয়ে গেছে। অহেতুক ৭০০ জনের নামে মামলা—এটা কি ব্যবসা করার জন্য? মানুষকে আতঙ্কে রেখে টাকা নেওয়ার সুযোগ আমরা দেব না।’

তারাগঞ্জ থানার ওসি এম এ ফারুক জানান, ঘটনাস্থলে হাজার হাজার মানুষ ছিলেন। এর বিপরীতে সেখানে চারজন পুলিশ সদস্য ছিলেন। তারা তাদের (রূপলাল ও প্রদীপ) বাঁচানোর চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু পেছন থেকে যখন পুলিশকে ধাক্কাধাক্কি, ঘুষাঘুষি শুরু হয় তখন তারা জীবনের ভয়ে সরে এসেছেন। পুলিশের করার কিছু ছিল না। প্রকৃত দোষীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

সারাবাংলা/এইচআই

পিটিয়ে হত্যা মব রুপলাল-প্রদীপ লাল হত্যাকাণ্ড হত্যা

বিজ্ঞাপন

একযোগে ১৮৯ বিচারককে বদলি
২৫ আগস্ট ২০২৫ ২০:৩১

আরো

সম্পর্কিত খবর