চট্টগ্রাম ব্যুরো : চট্টগ্রামের হালদা নদীর শাখা খাল থেকে আরও একটি মৃত ডলফিন পাওয়া গেছে। ছয় মাসের মধ্যে এটি দ্বিতীয় ঘটনা। নৌ পুলিশের ধারণা, মাছ ধরার জালে আটকা পড়ায় ডলফিনটির মৃত্যু হয়েছে। গত আট বছরে হালদা নদী থেকে মোট ৪৬টি মৃত ডলফিন উদ্ধার হয়েছে।
সোমবার (২৫ আগস্ট) দুপুরে হাটহাজারী উপজেলার মদুনাঘাট জেলেপাড়ার কাছে নদীসংলগ্ন কাটাখালী খাল থেকে মৃত ডলফিনটি উদ্ধার করা হয়। এর আগে, গত ১২ ফেব্রুয়ারি হালদা নদী থেকে একটি মৃত ডলফিন উদ্ধার করা হয়েছিল।
হালদা অস্থায়ী নৌ পুলিশ ফাঁড়ির সহকারি উপ-পরিদর্শক (এএসআই) রমজান আলী সারাবাংলাকে জানান, কাটাখালী খালে একটি মৃত ডলফিন ভাসছে, এমন তথ্যের ভিত্তিতে নৌকা নিয়ে সেখানে যায় নৌ পুলিশের দল। তারা সেখান থেকে ডলফিনটিকে নৌকায় তুলে নদীর তীরে ফিরে আসেন। মৃত ডলফিনটি প্রায় ৪৬ ইঞ্চি দীর্ঘ ও প্রস্থ ৩২ ইঞ্চি। ওজন প্রায় ৩৭ কেজি।
তিনি আরও জানান, ‘ডলফিনটির মৃতদেহ একেবারে পচে গেছে। সম্ভবত দুই-তিনদিন আগে সেটির মৃত্যু হয়েছে। মাছ শিকারিদের জালে আটকে যাওয়ার কারণে ডলফিনটির মৃত্যু হয়েছে বলে আমাদের ধারণা। কারণ ডলফিনটির ঠোঁট কেটে ফেলা হয়েছে। জাল থেকে ছাড়ানোর জন্যই সাধারণত ঠোঁট কেটে ফেলা হয়।’
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় হালদা রিভার রিসার্চ ল্যাবরেটরির প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে সুরতহাল শেষে মৃত ডলফিনটিকে নদীর তীরে মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে বলে এএসআই রমজান আলী জানান।
গাঙ্গেয় প্রজাতির ডলফিনের বিচরণ আছে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী ও হালদা নদীতে। ২০১৭ সাল থেকে কর্ণফুলী ও হালদা নদীর ডলফিন নিয়ে কার্যক্রম শুরু করেন গবেষকরা। তখন থেকে হালদা ও কর্ণফুলীতে মৃত ডলফিনের সংখ্যা গণনা শুরু হয়।
হালদা রিভার রিসার্চ ল্যাবরেটরির কো-অর্ডিনেটর ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মনজুরুল কিবরিয়া জানিয়েছেন, গত আট বছরে হালদা নদী থেকে ৪৬টি মৃত ডলফিন উদ্ধার হয়েছে।
কর্ণফুলী ও হালদা নদীপাড়ের বাসিন্দারা স্থানীয়ভাবে একে হুতুম বা শুশুক নামে অভিহিত করেন। ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচার (আইইউসিএন) গাঙ্গেয় ডলফিনকে বিপন্ন হিসেবে লাল তালিকায় রেখেছে। ২০১২ সালের বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনের তফসিল-১ অনুসারে এই প্রজাতিটি সংরক্ষিত।