ঢাকা: গত কয়েকদিনের তেজিভাবের কারণে বাজারমুখী হচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা। ফলে পুঁজিবাজারে লেনদেন বাড়ছে। বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বাড়ায় লেনদেনে একের পর এক রেকর্ড হচ্ছে। সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবস মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) চলতি বছরের সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে। এটি গত ২০২৪ সালের ১১ আগস্টের লেনদেনের তুলনায়ও বেশি।
এদিকে লেনদেনে নতুন রেকর্ড হলেও ডিএসইতে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের দর কমেছে। ফলে প্রধান মূল্য সূচকের পতন হয়েছে।
অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দর বেড়েছে। ফলে সিএসই-তে বেড়েছে প্রধান মূল্য সূচক। তবে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, মঙ্গলবার সকালে ডিএসই-তে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। এতে লেনদেনের শুরুতে সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার দেখা যায়। শুরুতেই সূচক বাড়ে প্রায় ৩৭ পয়েন্ট। কিন্তু লেনদেনের শেষদিকে ব্যাংক ও বিমা কোম্পানিগুলোর শেয়ার দাম গড়পড়তা পড়তে থাকে। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে অন্য খাতেও। ফলে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের দরপতন দিয়েই দিনের লেনদেন শেষ হয়।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে ১৩৭টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দর বেড়েছে। এর বিপরীতে দাম কমেছে ২১৫টির। আর ৪৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। ভালো কোম্পানি বা ১০ শতাংশ অথবা তার বেশি লভ্যাংশ দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৬৬টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে ১২৪টির দাম কমেছে এবং ২৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
মাঝারি মানের বা ১০ শতাংশের কম লভ্যাংশ দেওয়া ৪৮টি কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ার বিপরীতে ৩৩টির দাম কমেছে এবং ২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ না দেওয়ার কারণে ‘জেড’ গ্রুপে স্থান হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ২৩টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৫৮টির এবং ১৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। আর তালিকাভুক্ত ৩৬টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ৪টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে ১৩টির দাম কমেছে এবং ১৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এতে ডিএসই’র প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৬ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৪৪৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৫ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ১২৩ পয়েন্টে নেমে গেছে। তবে ডিএসই শরিয়াহ সূচক দশমিক ৭০ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ১৯০ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
ডিএসই-তে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ২৪৭ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১ হাজার ১৭৭ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। এ হিসেবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন বেড়েছে ৬৯ কোটি ৯২ লাখ টাকা। এর মাধ্যমে ২০২৪ সালের ১১ আগস্টের পর ডিএসইতে সর্বোচ্চ লেনদেন হলো। ২০২৪ সালের ১১ আগস্টের পর ডিএসইতে ২ হাজার ১০ কোটি ৮ লাখ টাকার লেনদেন হয়। এরপর আর দুই হাজার কোটি টাকার লেনদেনের দেখা মেলেনি।
অপর পুঁজিবাজার সিএসই’র সার্বিক মূল্য সূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ১৫ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২৪২ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১১৭টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৯৭টির এবং ২৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১৫ কোটি ১ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৫০ কোটি ৪৫ লাখ টাকা।