ঢাকা: বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আসন্ন নির্বাচনকে ব্যহত করার চেষ্টা করছে কিছু রাজনৈতিক দল।
তিনি জানান, এই দলগুলো এমন কিছু দাবি তুলছে, যা সাধারণ জনগণের কাছে অচেনা এবং বোঝা কঠিন।
ফখরুল বলেন, “পিআর পদ্ধতি (প্রতিনিধিত্বমূলক) যেটা বুঝতে সাধারণ মানুষের সময় লাগে সেই দাবিই তারা তুলছে। সাধারণ মানুষ এই বিষয়গুলো সম্পর্কে সচেতন নয়। তবুও হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এ ধরনের হুমকি কেন দেওয়া হচ্ছে? এটা আমাদের জন্য বিব্রতকর।”
বুধবার (২৭ আগস্ট) জাতীয় প্রেসক্লাবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান প্রয়াত কাজী জাফরের ১০ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, “আমরা সংস্কারের পক্ষে সর্বদা ছিলাম। বিদ্যমান রাষ্ট্র কাঠামোয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। তাই এই কাঠামো সংস্কারের জন্য আমরা সব রাজনৈতিক দলকে সহযোগিতা করেছি। সরকারের সঙ্গে আমাদের সহযোগিতার হাতছানি সব সময় প্রস্তুত ছিল। আমাদের লক্ষ্য একটি শক্তিশালী এবং গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রগঠন।”
মির্জা ফখরুল বলেন, সরকারের ভেতরের একটি মহল গণতান্ত্রিক শক্তিকে ক্ষমতায় আসতে বাধা দিচ্ছে।
তিনি বলেন, “তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন হলে এসব জটিলতা তৈরি হতো না। কিন্তু ইচ্ছে করেই নানা অজুহাত সৃষ্টি করা হচ্ছে।”
দেশে বাড়তে থাকা দুর্নীতির প্রসঙ্গ টেনে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আজকালকার বেশিরভাগ মানুষ নষ্ট হয়ে গেছে। প্রতিটি প্রতিষ্ঠান দুর্নীতির গ্রাসে জর্জরিত। আগে যদি কোনো ব্যবসায়ীর এক লাখ টাকা ঘুষ দিতে হতো, এখন দিতে হয় পাঁচ লাখ। এভাবে নৈতিক অবক্ষয় সমাজ ও রাষ্ট্রকে আরও ক্ষতিগ্রস্ত করছে।”
তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেন, “৭১’কে ভুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। কিন্তু তা কোনোদিন সম্ভব নয়। আমরা নিজের চোখে দেখেছি কিভাবে আমাদের ভাইদের হত্যা করা হয়েছে, মা-বোনদের ইজ্জত লুট হয়েছে। যারা সেদিন সহযোগিতা করেছিল, আজ তারাই বড় বড় কথা বলছে। তাই আমাদের এখন আরও বেশি সজাগ থাকতে হবে।”
বিএনপি মহাসচিব সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “সংস্কারের জটিলতা দ্রুত শেষ করুন, নির্বাচনের চূড়ান্ত ব্যবস্থা নিন। জনগণের প্রতিনিধিত্বকে নিশ্চিত করুন। যারা ফায়দা নিতে চায়, তারা বসে নেই। এখন যদি আমরা উদাসীন হই, তাহলে দেশের ক্ষতি হবে।”
তিনি অভিযোগ করেন, জনগণের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে এবং নির্বাচনকে ঘিরে ষড়যন্ত্র চলছে। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ছাড়া দেশের সংকট কাটানো সম্ভব নয়।
সভায় কাজী জাফরের রাজনৈতিকজীবন ও কর্মীর কথাওস্মরণ করা হয়। ষাট ও সত্তর দশকের এই বিশিষ্ট নেতাছিলেন ঝড়ের মতো গতিসম্পন্ন এবং তার প্রভাব দেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে অনুভূত হয়েছে।