ঢাকা: সমাপ্ত ২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রায় ২২ হাজার ৬০০ কোটি টাকা নিট মুনাফা অর্জন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর আগে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে নিট মুনাফার পরিমাণ ছিল ১৫ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে নিট মুনাফা বেড়েছে প্রায় ৭ হাজার ৩০০ কোটি টাকা, শতকরা হিসাবে প্রায় ৪৮ শতাংশ।
মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) বাংলাদেশ ব্যাংকের ৪৪৩তম বোর্ড সভায় এ আর্থিক হিসাব অনুমোদন দেওয়া হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
বৈঠকে জানানো হয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ আর্থিক হিসাব অনুযায়ী, ট্রেজারি বিল-বন্ড ও সরকারকে দেওয়া সুদের কারণে মোট আয় দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩৩ হাজার কোটি টাকা। খরচ ও কর বাদ দিয়ে নিট মুনাফা নির্ধারণ করা হয়েছে।
পর্যালোচনায় দেখা যায়, বাংলাদেশ ব্যাংকের মুনাফা প্রতি বছরই বাড়ছে।
সভা শেষে ডেপুটি গভর্নর হাবিবুর রহমান গণমাধ্যমকে জানান, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুনাফার বড় অংশ আসে স্থানীয় ও বৈদেশিক মুদ্রার সুদের আয়ে। এর মধ্যে সরকারি ট্রেজারি বন্ডে বিনিয়োগ, বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে রেপো, স্ট্যান্ডিং লেন্ডিং ফ্যাসিলিটি (এসএলএফ) ও অ্যাসিউরড লিকুইডিটি সাপোর্ট (এএলএস)-এর আওতায় দেওয়া ঋণ থেকে উল্লেখযোগ্য আয় হয়। এছাড়া এক্সপোর্ট ডেভেলপমেন্ট ফান্ড (ইডিএফ) এবং রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রির মুনাফাও যুক্ত হয়।
তিনি জানান, নিট মুনাফার বড় অংশ সরকারি কোষাগারে জমা হবে। ইতোমধ্যে ৮ হাজার কোটি টাকা জমা দেওয়া হয়েছে, বাকিটা কয়েক দিনের মধ্যেই জমা হবে। গত অর্থবছরে সরকারি কোষাগারে ১০ হাজার ৬৫২ কোটি টাকা জমা দেওয়া হয়েছিল। এবার এর পরিমাণ আরও অনেক বেশি হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, সরকারকে ঋণ দিতে বিভিন্ন সময়ে টাকা ছাপিয়ে ট্রেজারি বিল ও বন্ড কিনেছিল কেন্দ্রীয় বৗাংক। চলতি অর্থবছরের মে শেষে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে ট্রেজারি বিল না থাকলেও প্রায় ৭৪,০০০ কোটি টাকার ট্রেজারি বন্ড রয়েছে।
এছাড়া অন্যান্য টুলের মাধ্যমে সরকার কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছে। মে মাস শেষে সরকারের কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে নেওয়া মোট ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৯৫ হাজার ৭০৬ কোটি টাকা, এর বিপরীতে সুদ আয় করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে নিট মুনাফার অংশ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য মৌলিক বেতনের ৬ গুণ ইনসেনটিভ বোনাস প্রদানেরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।