ঢাকা: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর অবসরপ্রাপ্ত হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ১৯৭২ সালের সংবিধান আওয়ামী লীগের দলীয় দলিল নয়, এটি মুক্তিযুদ্ধের দলিল এবং জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন। তিনি বলেন, সংবিধান একেবারে বাতিল করা যাবে না, তবে সময়োপযোগী কিছু সংস্কার হতে পারে।
বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল আয়োজিত এক আলোচনায সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, অনেকে ভুলভাবে মনে করেন ১৯৭২ সালের সংবিধান কেবল আওয়ামী লীগের দলীয় দলিল। বাস্তবে এটি ছিল মুক্তিযুদ্ধের ফসল, যেখানে মুক্তিযোদ্ধারা এবং সাধারণ জনগণের মতামত প্রতিফলিত হয়েছিল।
তিনি বলেন, “আমরাও মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সেসময় সংবিধানে মতামত দিয়েছিলাম। তাই এটিকে পুরোপুরি ফেলে দেওয়ার কথা নয়।”

আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর অবসরপ্রাপ্ত হাফিজ উদ্দিন আহমেদ।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, শেখ মুজিব ১৯৭০ সালের নির্বাচনে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে চেয়েছিলেন। সেই স্বপ্ন পূরণ না হওয়ায় দেশ ভাগ হয়ে যায় এবং স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়। মেজর হাফিজ বলেন, মুক্তিযুদ্ধের দল ও সাধারণ জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা সংবিধানে প্রতিফলিত হয়েছে, তাই এটি সময়োপযোগী সংস্কারের মাধ্যমে উন্নয়ন করা উচিত।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, জুলাই আন্দোলনে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের বিশেষ অবদান রয়েছে।
তিনি দাবি করেন, জুলাই সনদে রাজনৈতিক দলের ঐকমত্যের ভিত্তিতে যে প্রস্তাব গৃহীত হবে, সেটিই সংবিধানের ভিত্তি হওয়া উচিত। একইসঙ্গে তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে অবাধ ও সুষ্ঠু জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের আহ্বান জানান।
মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমেদ পিআর (Proportional Representation) পদ্ধতির প্রসঙ্গেও বলেন, বাংলাদেশের জনগণ এখনও এ পদ্ধতি সম্পর্কে পুরোপুরি পরিচিত নয়।
তিনি আরও বলেন, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) কেন এই পদ্ধতি চাপিয়ে দিতে চাচ্ছে তা স্পষ্ট নয়।
মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশের জনগণই ঠিক করবে আগামী নির্বাচনে তারা কোনো ধরনের ব্যবস্থা চাইবে এবং সংবিধানে কী ধরনের পরিবর্তন দেখতে চায়।
হাফিজ উদ্দিন বলেন, বর্তমানে যারা সংবিধান পরিবর্তনের কথা বলছেন, তাদের অনেকেই মুক্তিযুদ্ধ দেখেননি।
তিনি উল্লেখ করেন, “এই মুহূর্তে সংবিধান পরিবর্তন হবে না। নির্বাচনের পর জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী যারা সংসদে আসবেন, তারাই প্রয়োজনে সংবিধান সংশোধন করতে পারবেন।”
আওয়ামী লীগের মতো পরিণতি যাতে বিএনপির না হয়, সে ব্যাপারে নেতা-কর্মীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তিনি।
হাফিজ উদ্দিন অভিযোগ করেন, ১৯৭১ সালে যারা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিল, তারাই এখন বিএনপিকে ঠেকানোর ষড়যন্ত্র করছে।