ঢাকা: সরকার যত দ্রুত সম্ভব মূল্যস্ফীতি ৩-৪ শতাংশে নামিয়ে আনার চেষ্টা করছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. মোহাম্মদ আখতার হোসেন।
তিনি বলেন, বর্তমানে দেশে মূল্যস্ফীতি ৮-৯ শতাংশের ঘরে অবস্থান করছে, যা স্বস্তিদায়ক নয়। তাই যত দ্রুত সম্ভব এটি ৩-৪ শতাংশে নামিয়ে আনার জন্য কঠোর আর্থিক নীতি অব্যাহত থাকবে।
বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) রাজধানীতে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট’ (পিআরআই) আয়োজিত ‘বাংলাদেশ মান্থলি ম্যাক্রো-ইকনোমিক ইনসাইট’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সংস্থার প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. আশিকুর রহমান সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
ড. আখতার হোসেন বলেন, আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে- দীর্ঘমেয়াদে টেকসইভাবে ৩-৪ শতাংশ মূল্যস্ফীতি ধরে রাখা। এজন্য যে সব নীতিগত উপকরণ রয়েছে, আমরা সেগুলো প্রয়োগ করব। এতে সুদহার নিয়ন্ত্রণ, মুদ্রানীতি শৃঙ্খলা এবং সামষ্টিক অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
বিনিয়োগ বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, স্থানীয় সঞ্চয় দিয়ে বড় বিনিয়োগ সম্ভব নয়, তাই বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা জরুরি। বিদেশি কোম্পানির জন্য ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ তৈরি এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি। সে জন্য ব্যবসায়িক পরিস্থিতি উন্নতির জন্য সবাইকে কাজ করতে হবে। এটা শুধু বাংলাদেশ ব্যাংকের একার দায়িত্ব নয়।
প্রসঙ্গক্রমে তিনি আরও বলেন, ব্যাংকগুলোর একীভূত করার ক্ষেত্রে ৩০ হাজার কোটি টাকা লাগতে পারে। এই টাকা বন্ডের মাধ্যমে এবং বিদেশি কিছু সহায়তার মাধ্যমে জোগান দেওয়া হবে।
পিআরআই’র প্রধান অর্থনীতিবিদ আশিকুর রহমান বলেন, ব্যাংক একীভূত করা রাজনৈতিকভাবে অনেক কঠিন বিষয়। বেসরকারি ব্যাংক একীভূতকরণ পদক্ষেপ ঠেকাতে নতুন করে তদবির অর্থনীতির সূচনা হচ্ছে।
তিনি বলেন, আগে অর্থ পাচারের বড় অস্ত্র ছিল মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানি। এখন পাচার কমে আসায় মূলধনি যন্ত্রপাতির আমদানি কম হতে পারে। দক্ষিণ এশিয়ার গড়ের তুলনায় আমাদের দেশে সুদের হার বেশি না। আর এখানে সুদের হার নীতি সুদ হারের কারণে নয়, বরং রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে বেড়েছে। মূল্যস্ফীতি না কমিয়ে বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার পদক্ষেপ নিলে তা আরও বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হবে।
পিআরআই’র নির্বাহী পরিচালক ড. খুরশীদ আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংস্থার পরিচালক ড. আহমেদ আহসান। সেমিনারে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান মো. নাসির উদ্দিন, বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি আনোয়ার উল আলম চৌধুরী পারভেজ, হাবিবুল্লাহ এন করিম প্রমুখ।