২০২০-২১ সালকে মুজিববর্ষ ঘোষণা করছে সরকার
৬ জুলাই ২০১৮ ১৭:২৯
।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: আগামী ২০২০-২১ সালকে মুজিববর্ষ ঘোষণা করছে সরকার। শুক্রবার (৬ জুলাই) বিকেলে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদ ও কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের যৌথ সভার শুরুতে প্রধানমন্ত্রী এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
বৈঠকে উপস্থিত নেতারা জানান, বৈঠকে দেশের সর্বশেষ রাজনীতি, আগামী নির্বাচনসহ বিভিন্ন ইস্যুতে দীর্ঘ আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকী উপলক্ষে গৃহীত বছরব্যাপী কর্মসূচির আয়োজনে বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধান ও রাজনীতিবিদদের আমন্ত্রণ জানিয়ে একটি বড় ধরনের অনুষ্ঠানের প্রস্তাব করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। প্রধানমন্ত্রী এতে সম্মতি জানান। এছাড়া বঙ্গবন্ধুর জীবনী নিয়ে একটি ডকুমেন্টারি ও অস্থায়ী জাদুঘর নির্মাণ করারও সিদ্ধান্ত হয়।
সূত্র আরও জানায়, বছরব্যাপী এই কর্মসূচি পালনে জাতীয় অধ্যাপক ও নজরুল গবেষক রফিকুল ইসলামকে প্রধান করে একটি উচ্চ পর্যায়ের নাগরিক কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে সদস্য সচিব হিসেবে থাকবেন সাবেক মুখ্য সচিব ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী। আর আওয়ামী লীগের বছর ব্যাপী কর্মসূচি পালনের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চেয়ারম্যান ও সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে সদস্য সচিব করা হয়েছে। এছাড়াও আরও অনেক উপ কমিটি গঠন করা হবে।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ১৭ মার্চ জাতির পিতার জন্মদিন থেকে এ বছর শুরু হয়ে শেষ হবে ২০২১ সালের ২৬ মার্চ স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী।
গত ২৩ জুন আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নতুন ভবনটি উদ্ধোধনের পর এটি প্রথম দলীয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। দলের নতুন অফিসে আজ প্রথমবারের মতো উপদেষ্টা পরিষদ ও কেন্দ্রীয় কমিটির এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। বিকেল পাঁচটায় প্রধানমন্ত্রী দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আসলে দলের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুর কাদের তাকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান।
যৌথসভার শুরুতেই শোক প্রস্তাব উত্থাপন করেন দলটির কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ। ওবায়দুল কাদেরের সঞ্চালনায় যৌথসভায় বক্তব্য রাখেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মুকুল বোস, রাশিদুল আলম, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুর রহমান, আখতারুজ্জামান, হারুন অর রশিদ প্রমূখ। পরে উপদেষ্টা পরিষদ ও কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির নেতাদের নিয়ে বৈঠকে বসেন শেখ হাসিনা।
বৈঠকে শেখ হাসিনা বলেন, ‘২০২০-২১ সাল ‘মুজিববর্ষ’ হিসেবে পালিত হবে। বছরব্যাপী কর্মসূচি নিয়ে উদযাপিত হবে জন্মশতবার্ষিকী। বিভিন্ন ধরনের প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হবে। বিভাগ জেলা ও ওয়ার্ড পর্যায় পর্যন্ত জাতির জনকের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করা হবে।’
তিনি বলেন, ‘পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট দেশ ও জাতির জন্য দুর্ভাগ্য। এরপর অবৈধ ক্ষমতা দখল। সন্ত্রাস জঙ্গিবাদে দেশের এগিয়ে যাওয়া। উন্নয়ন স্তব্ধ। তবে সবকিছু পেছনে ফেলে উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি নিয়ে এখন উন্নতির পথে কাজ চলছে। উন্নয়নের মহাসড়কে চলমান। স্যাটেলাইট মহাকাশে। উন্নতির পথে মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণ করা।’
বিএনপি-জামায়াতসহ একজন নোবেল জয়ীর প্রতি ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অনেকের চোখে সরকারের উন্নয়ন ভালো লাগে না। তারা গরিব থাকবে তা দেখিয়ে বিদেশ থেকে টাকা আনবে। আবার কেউ দরিদ্রদের লোন দিয়ে নিজেদের ভাগ্য গড়বে। কিন্তু দেশের উন্নয়নে তাদের সুযোগ সীমিত হয়ে মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হচ্ছে। শিক্ষার গুরুত্ব অনুধাবন করছে মানুষ। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে।’
“আজকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে আমরা সম্মান পেয়েছি। উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে বাংলাদেশ স্বীকৃতি পেয়েছে। আন্তর্জাতিকভাবে সবাই এটা স্বীকৃতি দিয়েছে। বাংলাদেশের এই অগ্রযাত্রা ইনশাল্লাহ অব্যাহত থাকবে। শোষিত মানুষকে শোষণ যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দেওয়া এটাই আমাদের লক্ষ্য। আমরা চাই এদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন। দেশের একটা মানুষ ঘরহারা নেই। একটি মানুষও গৃহহারা থাকবে না। ফুটপাথে পড়ে থাকবে না। ২০২০ সালের মধ্যে আমরা ১৮ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে যেতে পারব।”
আরও পড়ুন: মুজিববর্ষ পালনে নাগরিক কমিটি গঠন
সারাবাংলা/এনআর/এমও/এটি
** দ্রুত খবর জানতে ও পেতে সারাবাংলার ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে রাখুন: Sarabangla/Facebook