Wednesday 03 Sep 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘রোহিঙ্গা নারীদের জন্য নিরাপত্তা ও দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের প্রয়োজন’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট 
১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০০:১৭ | আপডেট: ১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৯:১৭

রোহিঙ্গা নারীদের নিয়ে নতুন গবেষণা প্রকাশ বিষয়ক সংলাপে অ্যাকশনএইডের প্রতিনিধিরা। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে কক্সবাজারের শরণার্থী ক্যাম্পে বসবাসরত রোহিঙ্গা নারী ও কিশোরীরা বহুমুখী ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন। যৌন হয়রানি, বাল্যবিবাহ, বহুবিবাহ, সশস্ত্র গোষ্ঠীর প্রভাব ও মাদকের বিস্তার তাদের জীবনযাত্রাকে আরও অনিশ্চিত করে তুলছে। এ অবস্থায় নারী-কেন্দ্রিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের ওপর গুরুত্ব দিয়েছে অ্যাকশনএইড বাংলাদেশ।

রোববার (৩১ আগস্ট) সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে সংলাপে প্রতিষ্ঠানটি নতুন গবেষণা ‘ওইমেন প্রটেকশন ইন নেগ্লেক্টেড ক্রাইসিস – বাংলাদেশ: আরার হেফাজত (আমাদের সুরক্ষা)’ প্রকাশ করে।

বিজ্ঞাপন

গবেষণায় দেখা গেছে, যৌন হয়রানি রোহিঙ্গা নারীদের সবচেয়ে বড় উদ্বেগের বিষয়। এছাড়া, বাল্যবিবাহ ও বহুবিবাহ ক্যাম্পে একটি স্বাভাবিক ঘটনা হিসেবে পরিণত হয়েছে। অংশগ্রহণকারীদের ৪৮% মনে করেন, পুরুষ ও ছেলেদের জন্য কাউন্সেলিং জরুরি। এছাড়া, ক্যাম্পে সশস্ত্র গোষ্ঠীর দৌরাত্ম্য ও মাদকের বিস্তার নারীদের নিরাপত্তা ও সুস্থতাকে হুমকির মুখে ফেলেছে। অন্যদিকে বেশিরভাগ নারী (৫০–৮২%) মিয়ানমারে নিরাপদে প্রত্যাবাসনের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন, তবে কিছু কমবয়সী অংশগ্রহণকারী তৃতীয় কোনো দেশে অভিবাসনের কথা বলেছেন।

গবেষণার মূল সুপারিশ:

  • রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিরাপদ ও আলোকসজ্জিত নারী-বান্ধব টয়লেট ও গোসলের স্থান নিশ্চিত করা।
  • নারী নিরাপত্তা কর্মী নিয়োগ এবং নারীদের নেতৃত্বে সুরক্ষা কমিটি গঠন করা।
  • সশস্ত্র গোষ্ঠীর প্রভাব কমাতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কার্যক্রম শক্তিশালী করা।
  • পুরুষ ও কিশোরদের জন্য সচেতনতা ও কাউন্সেলিং কর্মসূচি চালু করা।
  • নারী-বান্ধব শিক্ষা ও জীবিকার সুযোগ বৃদ্ধি এবং অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করা।

অনুষ্ঠানে অ্যাকশনএইড বাংলাদেশের হিউম্যানিটারিয়ান প্রোগ্রাম হেড মো. আব্দুল আলীম, পলিসি রিসার্চ অ্যান্ড অ্যাডভোকেসি ম্যানেজার তামাজের আহমেদ এবং কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ্ কবির গবেষণার ফলাফল উপস্থাপন করেন।

ফারাহ্ কবির বলেন, “রোহিঙ্গা নারী ও কিশোরীরা আজ বহুমুখী ঝুঁকির মুখে। তাদের সুরক্ষা নিশ্চিতে এখনই দীর্ঘমেয়াদি, অধিকারভিত্তিক ও জেন্ডার-সংবেদনশীল উদ্যোগ নেওয়া জরুরি।”

সংলাপে অংশগ্রহণকারীরা আরও বলেন, রোহিঙ্গা সংকটকে আলাদা সমস্যা হিসেবে না দেখে সামাজিক, অর্থনৈতিক ও মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে সমন্বিতভাবে সমাধান করতে হবে।

গবেষণায় ইউএন উইমেন, ইউএনএইচসিআর, আইআরসি, নেদারল্যান্ডস দূতাবাস, ইউরোপীয় কমিশন, জিআইজেড, অগ্রযাত্রা এবং স্থানীয় সংস্থা অংশ নেন। গবেষণার অংশগ্রহণকারীরা রোহিঙ্গা ক্যাম্প ১, ৫ ও ৮-এর ৬৬ জন নারী ও কিশোরী এবং উখিয়ার ৩০ জন স্থানীয় নারী ছিলেন।

সারাবাংলা/এফএন/এসএস

দীর্ঘমেয়াদি নারী নিরাপত্তা প্রয়োজন রোহিঙ্গা সমাধান

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর