Thursday 04 Sep 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

হাসিনাসহ ১৮১ জনের বিরুদ্ধে ‘জুলাই যোদ্ধা’র মামলা, মৃত ব্যক্তিও আসামি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৯:৫৫ | আপডেট: ১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ২২:৪৭

মামলার আসামি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ১৬ নম্বর চকবাজার ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মৃত সাইয়েদ গোলাম হায়দার মিন্টু

চট্টগ্রাম ব্যুরো : প্রায় ১৩ মাস আগে আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় হামলার অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৮১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন এক যুবক। আদালত মামলা গ্রহণ করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। তবে মামলায় আসামির তালিকায় একজনের নাম পাওয়া গেছে, যিনি চারবছর আগে মারা গেছেন।

সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম আবু বক্কর সিদ্দিকের আদালতে মামলাটি করেছেন এ কে এম নুরুল্লাহ নামে এক যুবক।

মামলার আরজিতে নুরুল্লাহ তার স্থায়ী ঠিকানা কিশোরগঞ্জ উল্লেখ করলেও চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বসবাস করার কথা বলেছেন। এতে তিনি নিজেকে একজন ‘জুলাই আন্দোলনের সপক্ষের যোদ্ধা’ হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

বাদীর আইনজীবী তাসমিন আক্তার নিশাত সারাবাংলাকে বলেন, ‘ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় গুলি করে আহত করার অভিযোগে ১৮২ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে শেখ হাসিনাসহ ১৮১ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। ১৮২ নম্বরে ঘটনাস্থলে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের আসামি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। আদালত অভিযোগের বিষয়ে শুনানির পর মামলা গ্রহণ করেছেন। পিবিআই- মেট্রোকে তদন্ত করে আগামী র্ধায্য তারিখে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।’

মামলার আসামিদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন- সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, মানবতা বিরোধী অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক প্রসিকিউটর ও হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান, এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম মাসুদ, চট্টগ্রাম বন্দরকেন্দ্রিক ব্যবসায়ী তরফদার রুহুল আমীন ও সাবেক সিএমপি কমিশনার সাইফুল আলম।

সাবেক সংসদ সদস্য আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দীন নদভী, চসিকের সাবেক প্যানেল মেয়র হাসান মাহমুদ হাসনীসহ কয়েকজন সাবেক কাউন্সিলর, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আরশেদুল আলম বাচ্চু, হাবিবুর রহমান তারেকসহ দলটির বেশ কয়েকজন নেতাকর্মীকে মামলার আসামি করা হয়েছে।

আসামির তালিকায় কেন্দ্রীয় জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদের কার্যকরী সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব পার্থের নামও আছে, যিনি সক্রিয়ভাবে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।

এছাড়া মামলায় ১৫০ নম্বর আসামি করা হয়েছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ১৬ নম্বর চকবাজার ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর সাইয়েদ গোলাম হায়দার মিন্টুকে। তিনি ২০২১ সালের ১৮ মার্চ মারা গেছেন।

মামলার বাদী এ কে এম নুরুল্লাহ অভিযোগ করেছেন, ২০২৪ সালের ৪ আগস্ট সকালে চট্টগ্রাম নগরীর নিউমার্কেট মোড়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় পুলিশ ও আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের বেধড়ক লাঠিচার্জে তিনি গুরুতর আহত হন। ওই রাতেই নগরীর পাঁচলাইশে বেসরকারি পার্কভিউ হাসপাতালে অস্ত্রোপচার করে তার দুই পা থেকে ১৬টি বুলেট বের করা হয়। এরপরও ১২-১৩টি বুলেট তার শরীরে রয়ে গেছে, যার জন্য তিনি এখনও ব্যাথায় কাতর।

বাদীর অভিযোগ, শেখ হাসিনার আদেশে এবং বিপ্লব বড়ুয়া, ওবায়দুল কাদের, বিপ্লব পার্থ, হাছান মাহমুদ, নদভী ও আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের পরিকল্পনা ও নির্দেশে নিরস্ত্র ছাত্র-জনতার ওপর সেদিন নির্বিচারে গুলি চালানো হয়েছিল।

মামলায় নাম উল্লেখ না করে সেসময় কোতোয়ালী থানার পরিদর্শক (তদন্ত), সকল এসআই-এএসআইসহ কর্তব্যরত ৩০-৪০ জন পুলিশ সদস্য এবং আওয়ামী লীগের আরও ৫০-৬০ জন নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে।

সারাবাংলা/আরডি/এসআর

ছাত্র-জনতার আন্দোলন জুলাই যোদ্ধা মামলা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর