রাজবাড়ী: রাজবাড়ীতে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি মশার উপদ্রবও ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। দিনের বেলায় মশার উৎপাত কম থাকলেও, সন্ধ্যা হলেই ঘরে-বাইরে মশার যন্ত্রণায় টেকা দায় হয়ে পড়েছে। ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়লেও মশা নিধনে পৌর কর্তৃপক্ষের কার্যকর কোনো উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। মশা নিয়ন্ত্রণে নাগরিকদের সচেতন করার জন্য নেই কোনো প্রচারণা।
পৌরসভার বাসিন্দারা বলছেন, আগে মশা মারার কাজ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা দেখতেন। কিন্তু এখন তারা নেই বলে গত এক বছর ধরে শহরে মশা মারার কোনো কাজ হচ্ছে না। ড্রেনে কোনো কীটনাশক দেওয়া হচ্ছে না, আর ফগার মেশিনের শব্দও শোনা যায় না। এতে মশার উপদ্রব খুব বেড়েছে। তাই বাসিন্দারা দ্রুত এই সমস্যার সমাধান চান।
বিনোদপুর ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা সুদীপ্ত জানিয়েছেন, তাদের এলাকায় একটি বড় ড্রেন ও একটি অপরিষ্কার নালা রয়েছে। যেখানে বাজারের পানি জমা হয়। এই দুটি কারণে ওয়ার্ডটিতে মশার উপদ্রব মারাত্মকভাবে বেড়েছে।
তিনি আরও বলেন, গত এক বছর ধরে মশা নিধনের কোনো কার্যক্রম এই এলাকায় দেখা যায়নি। এতে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে এবং তারা দ্রুত এই সমস্যার সমাধান দাবি করছেন। মশার এই উপদ্রব ডেঙ্গুর মতো রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিয়েছে, তাই অবিলম্বে কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।
লক্ষ্মীকোলের সাহাপাড়ার বাসিন্দা বিজয় বলেন, আমাদের এখানে কখনো মশা মরার ওষুধ দেওয়া হয়নি। প্রতিদিন মশার কয়েল জ্বালানো লাগছে। এতে বাড়ছে অতিরিক্ত খরচ। সেই সঙ্গে কয়েলের ধোঁয়াতে সৃষ্টি হচ্ছে বিভিন্ন রোগ।
এদিকে, হঠাৎ করেই রাজবাড়ী জেলায় ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়ে গেছে। জুলাই মাসে জেলায় মোট ৫৫জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হলেও আগস্টে সংখ্যাটি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৪ জনে। চিকিৎসকরা বলছেন, এখনই সচেতন না হলে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে।
রাজবাড়ী পৌরসভার পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তায়েব আলী বলেন, ‘আমাদের কাভার্ড ভ্যান পর্যাপ্ত না থাকায় পৌর অঞ্চলের ময়লা সম্পূর্ণ পরিষ্কার করতে পারছি না। বাজার এলাকার ময়লাগুলো ঠিক মতো পরিষ্কার করলেও, যেখানে ট্রাক যেতে পারে না সেখানের ময়লা পরিষ্কার ঠিক মতো হচ্ছে না।’
তিনি আরও বলেন, মশা নিধনের প্রয়োজনীয় ওষুধের অভাবে পৌরসভায় আমাদের সেবা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। বেশ কয়েকটি ফগার মেশিনের মধ্যে বর্তমানে মাত্র দুটি সচল রয়েছে, যে কারণে পৌরবাসীকে আমরা কাঙ্ক্ষিত সেবা দিতে পারছি না। এ বিষয়ে প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। আমরা আশা করছি- প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ও ওষুধ হাতে পেলে দ্রুতই পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে পারব।