ঢাকা: বাংলাদেশ থেকে ভারত যেতে ইচ্ছুকদের জন্য প্রতিদিন ১৫০০ থেকে দুই হাজার ভিসা ইস্যু করছে ভারত। বাংলাদেশে থাকা ভারতের পাঁচটি কেন্দ্র থেকে এসব ভিসা ইস্যু করা হচ্ছে। তবে, শুধু ভ্রমণ বা ট্যুরিস্ট ক্যাটাগরির ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। জরুরি মেডিকেল, ব্যবসা, শিক্ষা ও ডাবল এন্ট্রি ভিসা ইস্যু করছে দেশটি। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে ভারতীয় ভিসা ঘিরে বেশ কিছু প্রতারক চক্র গড়ে ওঠায় তাদের থেকে সাবধান থাকার আহ্বান জানিয়েছে দেশটি।
ভারতীয় হাইকমিশনের এক কর্মকর্তার মতে, বাংলাদেশে অন্য যেকোনো দেশের তুলনায় সবচেয়ে বেশি ভিসা ইস্যু করছে ভারত। বাংলাদেশে থাকা পাঁচটি ভারতীয় ভিসা আবেদন কেন্দ্রের মাধ্যমে প্রতিদিন পর্যটন ভিসা ব্যতীত সকল বিভাগে প্রায় ১৫০০ ভারতীয় ভিসা ইস্যু করা হয়। চিকিৎসা এবং অন্যান্য জরুরি ভিসা অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে প্রক্রিয়া করা হচ্ছে।
কিন্তু বাংলাদেশ জুড়ে ভিসা এজেন্ট এবং দালালদের একটি চক্র গড়ে উঠেছে। এর মধ্যে ঢাকা ও রাজশাহীতে এই চক্রের চারজনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। এই দালাল চক্র ভিসা আবেদন পোর্টালে কৃত্রিমভাবে চাপ তৈরি করছে, ফলে প্রকৃত আবেদনকারীদের জন্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট স্লট পাওয়া কঠিন হয়ে যাচ্ছে। আবার এসব এজেন্টদের অপরাধ চক্রগুলোর টাকার বিনিময়ে সাধারণ আবেদনকারীদের ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে ভিসার জন্য জমা দিচ্ছে।
এসব অপরাধী এজেন্ট আবেদনকারীদের নামে ভারতের হাসপাতালের ভুয়া কাগজপত্র, বিদেশি দূতাবাসের ভূয়া অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার, ভুয়া প্লেনের টিকেট, ভুয়া ব্যাংক বিবরণী জমা দিচ্ছে। এসব ক্ষেত্রে জরুরি প্রয়োজনীয় ভিসা আবেদনও প্রত্যাখাত হচ্ছে। ভারতীয় ভিসা আবেদন কেন্দ্রগুলো এই ধরণের অপরাধ বন্ধ করার জন্য ক্রমাগতভাবে প্রযুক্তিগতভাবে ব্যবস্থা নিচ্ছে। পাশাপাশি বাংলাদেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সঙ্গেও যোগাযোগ করছে। এর পাশাপাশি যেকোনো জরুরি পরিস্থিতিতে হেল্পলাইনের মাধ্যমে ভিসা আবেদন জমা দেওয়ার জন্য ব্যবস্থা করা আছে।
ভারতীয় কর্মকর্তা জানান, গত বছরের ৫ আগস্টের আগে বাংলাদেশে বছরে ১৬ লাখের মতো ভিসা ইস্যু করতো ভারত। তখন গড়ে দিনে ছয় থেকে সাত হাজার ভিসাও ইস্যু করা হতো। এখন ট্যুরিস্ট ভিসা বন্ধ থাকায় ভিসা ইস্যুর সংখ্যা কমে এসেছে। আগেও ট্যুরিস্ট ভিসার বাইরে অন্যান্য ক্যাটাগরিতে ১৫০০ থেকে দুই হাজার ভিসাই ইস্যু করা হতো।
কর্মকর্তারা জানান, বাংলাদেশে ১৬টি সেন্টারের মাধ্যমে ভিসা আবেদন গ্রহণ করা হতো। কিন্তু ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে চারটি কেন্দ্র ভাঙচুর ও একটিকে মব তৈরি করে আতঙ্ক তৈরি করা হয়। এরপর ভারতীয় ভিসা জন্য নিযুক্ত প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা অনিশ্চিত হয়েছে। বাংলাদেশে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে বাংলাদেশিদের জন্য ট্যুরিস্ট ভিসাসহ পূর্ণমাত্রায় ভিসা কার্যক্রম চালু করা হতে পারে বলেও জানান ভারতীয় কর্মকর্তা।