নীলফামারী: নীলফামারীর উত্তরা রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে (ইপিজেড) গুলি চালিয়ে একজন শ্রমিক হত্যার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। দলটির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মুখ্য সংগঠক আবু সাঈদ লিওন বলেছেন, ‘সেনাবাহিনী কোনো কারণ ছাড়াই অযাচিত ও অতর্কিতভাবে গুলি চালিয়ে নিরীহ নিরপরাধ শ্রমিককে হত্যা করেছে।’
মঙ্গলবার (২ আগস্ট) রাত ৮টার দিকে জেলা কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন তিনি। শ্রমিকদের এই যৌক্তিক আন্দোলন ও ন্যায্য দাবির সাথে সংহতি জানিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টি নীলফামারী জেলা ৭ দফা দাবি জানান।
তিনি বলেন, ‘সেনাবাহিনীর হাতে যে মারণাস্ত্র থাকে তা জনগণের বিরুদ্ধে ব্যবহারের জন্য নয়। এগুলো শত্রুর বিরুদ্ধে ব্যবহারের জন্যই রাখা হয়েছে। সেনাবাহিনী ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার নিয়ে কাজ করে, এজন্যই দেশের মানুষ তাদের প্রতি আস্থা রাখে। কিন্তু গত কয়েকদিন ধরে তাদের কর্মকাণ্ডে জনগণের মধ্যে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।’
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘ঢাকায় সম্প্রতি এক রাজনৈতিক নেতার ওপর হামলার ঘটনায় সেনাবাহিনী জড়িত ছিল। আজ নীলফামারীর উত্তরা ইপিজেডে আবারও অযাচিতভাবে গুলি চালিয়ে নিরীহ শ্রমিককে হত্যা করা হয়েছে। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক ও নিন্দনীয়।’
এ সময় তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘বিশ্বস্ত সূত্রের বরাত দিয়ে আমরা জেনেছি, উত্তরা ইপিজেড বন্ধের ষড়যন্ত্র চলছে। এরই অংশ হিসেবে বর্তমানের এই ঘটনা ঘটানো হতে পারে। উত্তরা ইপিজেড উত্তরবঙ্গের মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণের প্রতিফলন। যদি এটি বন্ধের ষড়যন্ত্র করা হয়, তবে নীলফামারীগামী আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আশাবাদী সেনাবাহিনী সবসময় জনগণের পাশে থাকবে। আগামীতে যেন দেশে কোনো স্বৈরাচার বা ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠা না পায় সেদিকে তাদের সচেষ্ট থাকতে হবে।’
শ্রমিকদের এই যৌক্তিক আন্দোলন ও ন্যায্য দাবির সাথে সংহতি জানিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টি নীলফামারী জেলা ৭ দফা দাবি জানান। সেগুলো হলো-
শ্রমিকদের সব ন্যায্য দাবি মেনে নিতে হবে। কর্মী ছাটায়ের ক্ষেত্রে কারখানাগুলোর সুনির্দিষ্ট নীতিমালা থাকতে হবে। নিহত শ্রমিক হাবিবুর রহমানের পরিবারকে ৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। আহত শ্রমিকদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করে তাদেরকে পুনর্বাসন করতে হবে। এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে শ্রমিকদের উপর কোন রকম মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা দেওয়া যাবে না। গুলির নির্দেশতাকে শনাক্ত করে তদন্তসাপেক্ষে বিচারের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। এবং মানুষের প্রাণনাশ ঘটে এমন কোন মারণাস্ত্র নীলফামারী জেলার কোথাও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ব্যবহার করতে পারবে না।