ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনকে ঘিরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এখন উৎসবমুখর পরিবেশে মুখরিত। দীর্ঘ ছয় বছর পর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এই নির্বাচনে প্রার্থীরা দিনরাত প্রচারণায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন।
এই নির্বাচনে ছাত্রদল মনোনীত আন্তর্জাতিক সম্পাদক পদপ্রার্থী হিসেবে আলাদা করে শিক্ষার্থীদের নজর কেড়েছেন মেহেদী হাসান। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শুরু থেকেই ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত মেহেদী একাধিকবার ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছেন। বিশেষ করে ২০২৩ সালে এক নির্মম হামলায় তিনি গুরুতরভাবে আহত হন। মাথায় প্রচণ্ড আঘাতের পাশাপাশি তার বাম হাত ভেঙে যায়। চিকিৎসকরা তার হাতে রড বসাতে বাধ্য হন, যা আজও তার শরীরে রয়ে গেছে।
শিক্ষার্থীদের বলছেন, দীর্ঘদিন নির্যাতন-অত্যাচার সয়ে টিকে থাকা এবং সাহসিকতার সঙ্গে রাজনীতি চালিয়ে যাওয়ার কারণে মেহেদী এখন প্রতীকী চরিত্রে পরিণত হয়েছেন। ডাকসুর নির্বাচনে তার প্রার্থীতা শুধু ছাত্রদল নয়, বরং প্রতিরোধ ও সহনশীলতার প্রতীক হিসেবেও দেখা হচ্ছে।
জানা গেছে, হাতে অপারেশনের পর চিকিৎসকরা রড বসান। কয়েক মাস ধরে হাতে প্লাস্টার, ব্যথা আর অচল অবস্থা মেনে নিতে হয়েছিল তাকে। মেহেদী বলেন, “ডাক্তাররা বলেছিল হয়তো আর আগের মতো হাত নড়বে না। আমি বলেছিলাম—হাত নড়ুক না নড়ুক, আমি রাজনীতি ছাড়ব না। শিক্ষার্থীদের গণতান্ত্রিক আন্দোলন আমি চালিয়ে যাব।”
ঢাবি ছাত্রদলের এক নেতা বলেন, “মেহেদীর হাত শুধু তার ব্যক্তিগত আঘাত নয়, আমাদের আন্দোলনের ইতিহাসও বহন করে। আমরা যখনই ওর হাতে দাগ দেখি, মনে হয় এটা আমাদের সবার সংগ্রামের চিহ্ন।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের আন্তর্জাতিক সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন ধরেই সক্রিয় মেহেদী। এবার ডাকসু নির্বাচনে একই পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তিনি। তার প্রতিশ্রুতি—ছাত্রসমাজের অধিকার, গণতান্ত্রিক চর্চা এবং ক্যাম্পাসে সবার জন্য নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করা।
তিনি বলেন, “ডাকসুর আন্তর্জাতিক সম্পাদক হিসেবে আমি চাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা যেন বিশ্বমঞ্চে নিজেদের যুক্ত করতে পারে। তবে তার চেয়েও বড় বিষয় হলো, আমাদের ক্যাম্পাসে যেন কেউ আর হামলার শিকার না হয়।”